অরবিন্দ মেনন
পশ্চিমবঙ্গে দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের গুরুত্ব কমিয়ে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ আর এক প্রচারক অরবিন্দ মেননকে সামনে তুলে ধরতে চাইছেন। অধুনা বিজেপি নেতা অরবিন্দ নিঃশব্দে পশ্চিমবঙ্গ সফর করে এসেছেন। বেশ কিছু রাজ্য নেতার সঙ্গে আলোচনাও করেছেন। ১১ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর অমিত শাহের কলকাতা সফর। মেনন বিজেপি সভাপতির সঙ্গে কলকাতা যাচ্ছেন।
অরবিন্দ জন্মসূত্রে কেরলের। প্রায় ৭ বছর মধ্যপ্রদেশে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। কিন্তু অমিত তাঁকে মধ্যপ্রদেশ থেকে দিল্লি অফিসে নিয়ে আসেন। তার পর তিনি দ্রুত বিজেপি সভাপতির কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন। সভাপতির সঙ্গে রাজ্য নেতাদের সমন্বয়ের কাজ করতে থাকেন তিনি। প্রচারের আলোয় না থেকে মেননের ভূমিকা তাঁকে অমিতের কাছাকাছি এনে দিয়েছে।
এর পরেই তাঁকে পশ্চিমবঙ্গে ব্যবহার করার চিন্তাভাবনা শুরু। কৈলাসকে সরানো নিয়ে বিজেপিতে অবশ্য দ্বিমত রয়েছে। দলের একাংশ মনে করছে, বিজয়বর্গীয়কে অবিলম্বে দায়িত্ব থেকে সরানো প্রয়োজন। অন্য শিবিরের মত, এখনই কৈলাসকে না সরিয়ে বিজেপি সভাপতির রাজ্য সফরের আয়োজন করা ও রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগের কাজটি মেননের মাধ্যমেই করা হোক। অমিত শাহ বিভিন্ন নেতার সঙ্গে কৈলাসের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেছেন। বিজেপি সূত্রের খবর, কৈলাস সম্পর্কে অভিযোগ উঠেছে যে তিনি নিরপেক্ষ থাকছেন না। তাঁর উপর রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রভাব বেশি। দলের অনেক পুরনো কর্মী শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে এই অভিযোগ করছেন। কৈলাসের সঙ্গে অরবিন্দের সম্পর্কের টানাপড়েন রয়েছে বলেই বিজেপির অন্দরের খবর। এই পরিস্থিতিতেই মেননকে পশ্চিমবঙ্গে আনার তোড়জোড় শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন:বিজেপিতে যেতে হলে এখনই যান: কড়া মমতা
পশ্চিমবঙ্গে কৈলাসের আগে দায়িত্বে ছিলেন সিদ্ধার্থনাথ সিংহ। তিনি খুব সক্রিয় ছিলেন। প্রচারের আলোয় ছিলেন। সিদ্ধার্থের সময়ে আরএসএস প্রশ্ন তুলেছিল, দলের ভাবী মুখ্যমন্ত্রী কিংবা সভাপতি প্রচারের আলোয় থাকতে পারেন। কিন্ত সঙ্ঘের সংস্কৃতি হল, কোনও রাজ্যের পর্যবেক্ষক প্রচারের আলোয় থাকেন না। মেননের ক্ষেত্রে সে দিকটিও ভাবা হয়েছে। কারণ, অরবিন্দ মেনন সংগঠনের লোক, প্রচার চান না। নিঃশব্দে কাজ করতে ভালবাসেন। তিনি এখনও পর্যন্ত আরএসএস-বিজেপির যথার্থ যোগসূত্র। পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে তাঁর কোনও রকম ব্যক্তিগত স্বার্থও নেই।
বিজেপি সূত্রের দাবি, রাজ্য সভাপতির ভূমিকা নিয়ে অমিত যতটা খুশি, কৈলাসকে নিয়ে রাজ্য নেতৃত্ব ততটা উৎসাহ দেখাচ্ছেন না। পশ্চিমবঙ্গের আরএসএসও নতুন কাউকে চাইছে। তাই বিজেপির লক্ষ্য ধীরে ধীরে অরবিন্দকে পাঠিয়ে ভবিষ্যতে কৈলাসকে সরিয়ে দেওয়া।