বঙ্গে অরাজনৈতিক মঞ্চ গড়তে চাইছে আরএসএস

বিজেপির প্রতিষ্ঠা দিবস ৬ এপ্রিলে পশ্চিমবঙ্গে বড় মাপের কর্মসূচি গ্রহণ করছে দল। সেই সঙ্গে রাজ্যে একটি অরাজনৈতিক মঞ্চ গড়তে চাইছে আরএসএস। ৫ এপ্রিল রামনবমীর দিন জেলায় জেলায় বিজেপি যে শোভাযাত্রার পরিকল্পনা নিয়েছে, সেখানেও ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সন্ন্যাসীদের বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

জয়ন্ত ঘোষাল

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:২৭
Share:

বিজেপির প্রতিষ্ঠা দিবস ৬ এপ্রিলে পশ্চিমবঙ্গে বড় মাপের কর্মসূচি গ্রহণ করছে দল। সেই সঙ্গে রাজ্যে একটি অরাজনৈতিক মঞ্চ গড়তে চাইছে আরএসএস। ৫ এপ্রিল রামনবমীর দিন জেলায় জেলায় বিজেপি যে শোভাযাত্রার পরিকল্পনা নিয়েছে, সেখানেও ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সন্ন্যাসীদের বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

আমেরিকায় ‘পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটি’ গড়ে বিভিন্ন বিষয়ে জনমত গড়ে তোলার চেষ্টা করে বিভিন্ন গোষ্ঠী। এমনকী ভারতের স্বার্থরক্ষার জন্যও এমন গোষ্ঠী রয়েছে। সেই ধাঁচেই পশ্চিমবঙ্গে হিন্দু জাতীয়তাবাদী শক্তির পুনরুত্থানের জন্য অরাজনৈতিক সাংস্কৃতিক মঞ্চ গঠন করতে চাইছে বিজেপি ও সঙ্ঘ। কারণ, একেবারে গোবলয়ের ধাঁচে উগ্র হিন্দুত্বের প্রচার যে এই রাজ্যে বিশেষ কাজ দেবে না তা বিলক্ষণ জানেন বিজেপি নেতারা।

সঙ্ঘ সূত্রে খবর, এই মঞ্চের নেতৃত্বে বিজেপি, আরএসএস, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বজরঙ্গ দলের কেউ থাকবেন না। থাকবেন বাঙালি হিন্দু বিশিষ্ট জনেরা। এই মঞ্চের কাজ হবে প্রথমে কলকাতায়, তার পর জেলায় জেলায় মেকি ধর্মনিরপেক্ষতা ও সংখ্যালঘু তোষণ, হিন্দু শরণার্থী ও অনুপ্রবেশকারীর ফারাকের মতো বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা ও বিতর্কসভা শুরু করা। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ জানিয়েছে, তারা রাজনীতির অঙ্গ হবে না। কিন্তু হিন্দু সংগঠন হিসেবে হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভাবনার পুনরুদ্ধারের জন্য কাজ করতে তাদের আপত্তি নেই। সঙ্ঘ নেতারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রয়াত প্রধান প্রণবানন্দজির সঙ্গে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল।

Advertisement

আরও পড়ুন: মুলায়মের পর এ বার সরব শিবপাল, ফের মেঘ ঘনাচ্ছে সপা-য়

উত্তরপ্রদেশে ভোটের আগে দিল্লিতে অমিত শাহের বাসভবনে পশ্চিমবঙ্গের ভবিষ্যৎ রণকৌশল নিয়ে একটি বৈঠক হয়। তাতে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ, কেন্দ্রীয় নেতা সিদ্ধার্থনাথ সিংহ ও কৈলাস বিজয়বর্গীয় হাজির ছিলেন।
তেমনই ছিলেন আরএসএসের কৃষ্ণগোপাল, রামলালা, ভাগাইয়া, কলকাতার প্রান্তপ্রচারক বিদ্যুৎ চট্টোপাধ্যায়। এই বৈঠকে স্থির হয়েছে, বাঙালি বিশিষ্ট সমাজের যে অংশ হিন্দু আচারআচরণে আস্থা রাখেন এবং সিপিএম-মমতা-কংগ্রেসের বিরোধী, তাঁদের কাছে টানতে হবে। এর পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্য ডিজিটাল মঞ্চে বিজেপি-র রাজনৈতিক মতাদর্শগত প্রচারকে আক্রমণাত্মক ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই সোশ্যাল মিডিয়া দেখাশোনা করতেও অরাজনৈতিক মঞ্চকে কাজে লাগানো হবে। এই কাজের জন্য বড় তহবিল তৈরি করা হবে।

হাওড়ার ধুলাগড়ের ঘটনা সে ভাবে প্রচারের আলোয় আসেনি। বিজেপি মনে করছে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচার করলে এই রাজনৈতিক মেরুকরণ সম্ভব। সংখ্যালঘু শ্রেণির ভূমিকার সমালোচনায় এই মঞ্চে মুখর হওয়া সহজ হবে। তার পর এই সোশ্যাল মিডিয়া ও এই কমিটির প্রচারের সমর্থন দিয়ে বিজেপি, আরএসএস এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ত্রয়ী জেলায়-জেলায় আক্রমণাত্মক প্রচার অভিযানে নামবে।

শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের রাজনীতির জোরেই যে পশ্চিমবঙ্গ ভারতের অঙ্গ হিসেবে থেকে গিয়েছে— তা নিয়েও মঞ্চ প্রচার করবে। রামমন্দিরকে প্রচারের বড় বিষয় হিসেবে তুলে ধরা হবে না। কিন্তু কাশ্মীরে ৩৭০ ধারার বিলোপ এবং অভিন্ন দেওয়ানি বিধি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচার চালানো হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement