রং-বিতর্ক: শুক্রবার তৃণমূলের মিছিলে এই সবুজ পতাকা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন।— নিজস্ব চিত্র
কয়েক জনের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ। তাঁদের হয়ে গলা ফাটাতে দুপুর রোদে রাস্তায় নামার অস্বস্তি ছিলই। তার উপরে হঠাৎ সবুজ পতাকার আবির্ভাব তৃণমূলের অন্দরে বিড়ম্বনা আরও বাড়িয়ে দিল!
বিরোধীরা সবাই মিলে নারদ-কাণ্ডে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে, এই অভিযোগ তুলে পরপর দু’দিন পাল্টা পথে নেমেছে শাসক দল। আগের দিন মহিলা তৃণমূলের নিষ্প্রভ মিছিলের তুলনায় শুক্রবার কলকাতা জেলা তৃণমূলের মিছিলের কলেবর বেশি হল ঠিকই। কিন্তু নিজের শক্তি প্রদর্শন করতে গিয়ে মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর সঙ্গে বাদানুবাদে জড়ালেন। দলের একাংশের ব্যাখ্যা, এমন মিছিলে হাঁটতে বক্সী বিশেষ উৎসাহী ছিলেন না। সাধনের সবুজ পতাকা দেখে তাঁর বিরক্তি এই মিছিল থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে সাহায্যই করেছে! সাধনবাবুর সঙ্গে বাদানুবাদের পরে বক্সী আর মিছিলের শুরুতে বা শেষে বক্তৃতাও করেননি।
শিয়ালদহ থেকে মিছিল শুরুর মুখেই মোটরবাইকে তেরঙা জোড়া ফুলের পাশাপাশি ছিল সবুজ পতাকা। যা নিয়ে এসেছিলেন সাধনবাবুর অনুগামীরা। অন্য পতাকা কেন আনা হয়েছে, সাধনবাবুর কাছে জানতে চান বক্সী। শিয়ালদহে অস্থায়ী মঞ্চে সাধনবাবুর পাশে তখন দাঁড়িয়ে কলকাতা জেলার তৃণমূল সভাপতি শোভন চট্টোপাধ্যায়। নারদে অভিযুক্ত হয়েও জেলা সভাপতি হিসাবে যিনি মিছিলের অন্যতম হোতা! তৃণমূল সূত্রের খবর, শোভনবাবুকে জানিয়েই তিনি সবুজ পতাকা এনেছেন বলে বক্সীকে জানান সাধনবাবু। তবে বিতর্ক হচ্ছে দেখে সবুজ পতাকা সরিয়ে ফেলেন তৃণমূল কর্মীরাই।
আরও পড়ুন: বাংলার জমি ধরে রাখার কাজেই এ বার মন দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
পরে বক্সী অবশ্য বলেন, ‘‘শনিবার দলনেত্রীর বাড়িতে বৈঠক কখন, তা সাধনদা জানতে চেয়েছিলেন। সেটাই ওঁকে বলেছি।’’ ওই ঘটনার পরে মিছিলে বক্সী বা সাধনবাবুকে বেশি ক্ষণ দেখা যায়নি। তবে আজ, শনিবার কালীঘাটে দলের কোর কমিটির বৈঠকে সবুজ পতাকার বিষয়টি বক্সী তুলতে পারেন বলে অনেকের ধারণা।
ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিলে দেখা যায়নি কলকাতার অধিকাংশ মন্ত্রী, বিধায়ককে। বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, সুমন সিংহ, সুশান্ত ঘোষ, মনজার ইকবাল, শান্তনু সেনের মতো কাউন্সিলরেরা অবশ্য আগাগোড়া ছিলেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ের কটাক্ষ, ‘‘তদন্তের নির্দেশ তো আদালত দিয়েছে! মেয়র রাস্তায় নেমে কী করবেন?’’