ক্রেতা সুরক্ষায় আরও কড়া আইন চান মন্ত্রী

অভিযোগ জানাচ্ছেন অনেকেই। কিন্তু ক্রেতাদের কত জন ঠিক মতো সুরাহা পাচ্ছেন? ক্রেতাসুরক্ষার রায় সবাই মানছেন কি? গ্রাহকদের এমন নানা প্রশ্ন সামনে রেখেই এ বার ক্রেতাসুরক্ষা বলয় আরও মজবুত করতে চান রাজ্যের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে।

Advertisement

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৭ ০২:৫৩
Share:

অভিযোগ জানাচ্ছেন অনেকেই। কিন্তু ক্রেতাদের কত জন ঠিক মতো সুরাহা পাচ্ছেন? ক্রেতাসুরক্ষার রায় সবাই মানছেন কি? গ্রাহকদের এমন নানা প্রশ্ন সামনে রেখেই এ বার ক্রেতাসুরক্ষা বলয় আরও মজবুত করতে চান রাজ্যের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে। যাঁরা মানুষকে ঠকাচ্ছেন, আইনের বেড়া জালে তাঁদের শক্ত ভাবে বাঁধতে আরও কিছু কড়া ধারা যুক্ত করা দরকার বলে মনে করছেন সাধনবাবু। তবে পুরোটাই যে হেতু কেন্দ্রীয় সরকারের ক্রেতাসুরক্ষা দফতরের অধীনে, তাই এ ব্যাপারে কেন্দ্রকে সবিস্তার জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

১৯৮৬ সালে আইন হলেও এ রাজ্যে ১৯৯৯-র পর থেকে ক্রেতাসুরক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। ওই দফতরের দাবি, ২০১১ সালের পর থেকে প্রচারের জোরে সচেতনতা অনেকটাই বেড়েছে। ছো়টখাটো কেনাকাটা থেকে বাড়ি-ঘর বুকিং— কেউ ঠকলেই ভিড় করছেন দফতরে। তা হলে কেন আইনকে আরও মজবুত করার প্রশ্ন উঠছে?

সংশ্লিষ্ট অফিসারেরা জানান, যাঁরা পয়সা দিয়ে জিনিস বা অন্য কোনও পরিষেবা কিনে ঠকছেন, তাঁদের স্বস্তি দিতে তৈরি দফতর। যার প্রথম ধাপ হলো মধ্যস্থতা (মেডিয়েশন)। এখানে কাজ না হলে তখন আদালতের দ্বারস্থ হন ভুক্তভোগী। মধ্যস্থতার ক্ষেত্রে ক্রেতা এবং বিক্রেতাকে ডেকে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে দফতরের দায়িত্বরত অফিসার বিষয়টা সমাধান করার চেষ্টা করেন। ফেরত দেওয়া হয় পণ্যের দাম। যেমনটি ঘটেছিল, সল্টলেকের এক মহিলার ক্ষেত্রে। ব্লাউজ বানাতে গিয়ে কাপড় ছিঁড়ে ফেলেছিল একটি বড় দোকান। পরে ব্লাউজ বানানোর খরচ তো বটেই, পুরো শাড়ির দামও দিতে হয়েছিল ওই দোকানদারকে। গরিব, সাধারণ মধ্যবিত্ত যাঁরা প্রতিনিয়ত ঠকছেন, তাঁরা অনেকেই এই পদ্ধতিতে সুরাহা পেতে চান। কিন্তু বর্তমানে একটা প্রবণতা দেখা দিয়েছে, মধ্যস্থতায় ক্রেতা হাজির থাকলেও বিক্রেতা বা পরিষেবাদাতা তা এড়িয়ে যাচ্ছেন। তাতে বাধ্য হয়ে ওই গ্রাহককে ক্রেতাসুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে। যা আবার সময়সাপেক্ষ। রায় পেতে অনেক সময় লাগে।

Advertisement

মধ্যস্থতার ছবিটা কেমন?

২০১৬-১৭ সালের হিসেব অনুযায়ী, মধ্যস্থতার জন্য অভিযোগ জমা পড়েছিল ৮০১৬। বিচার পেয়েছেন ২১২৮ জন। হাজিরায় অনিচ্ছার কারণে ২৪৬৯টি অভিযোগ বাতিল করতে হয়েছে। কিছু সুবিধাবাদীর অভিযোগ বাতিল করা হয়েছে। সাধনবাবুর কথায়, ‘‘মধ্যস্থতায় আসতে বাধ্য করা যায় কি না, তা ভাবা হচ্ছে। কারণ ওই ব্যবস্থায় বেশি সময় লাগে না এবং খরচও হয় না।’’ আর্থিক দিক থেকে সম্পন্ন নন, এমন লোকেরাই খরচের কথা ভেবে আদালতে যেতে চান না। একই সঙ্গে চিন্তা বাড়ছে, আদালতের রায় না মানা নিয়েও। দফতর সূত্রের খবর, প্রোমোটিংয়ে ঠকানো, হাসপাতালে বেশি বিল করা, ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর মতো ঘটনায় অভিযোগ জানানোর সংখ্যা বাড়ছে ঠিকই। পাশাপশি অভিযোগকারীকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া নিয়ে আদালতের রায় না মানার প্রবণতাও দেখা দিচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে ক্রেতাসুরক্ষার রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে অন্য আদালতে মামলার প্রবণতাও দেখা দিচ্ছে। এ সব রুখতেই ক্রেতাসুরক্ষা আইন আরও শক্ত হওয়া দরকার বলে মনে করেন সাধনবাবু।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement