সারদা-কাণ্ডে জামিন পেলেন অসমের গায়ক সদানন্দ গগৈ এবং সারদার আইনজীবী নরেশ বালোড়িয়া। আবার এ দিনই সারদা-কাণ্ডে আর এক অভিযুক্ত সন্ধির অগ্রবালের জামিন খারিজ হয়ে গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার এই তিনটি মামলারই শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি নিশীথা মাত্রে ও বিচারপতি তাপস মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে।
আদালত সূত্রের খবর, ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর আলিপুর আদালত থেকে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্রের সঙ্গে জামিন পান সন্ধির। এত দিন পরে হাইকোর্ট
সেই জামিন খারিজ করায় নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে ফের জেলে যেতে হবে সন্ধিরকে। অভিযোগ, সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন যখন বাজার থেকে বেআইনি ভাবে টাকা তুলছিলেন, তখন তাঁকে সাহায্য করেন সন্ধির।
একই অভিযোগ আইনজীবী নরেশের বিরুদ্ধেও। যে দিন মদন মিত্র গ্রেফতার হয়েছিলেন, ২০১৪ সালের সেই ১২ ডিসেম্বর সিবিআই গ্রেফতার করেছিল নরেশকেও। তারপর থেকে তিনি জেলে ছিলেন। নরেশের অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের ক্ষেত্রে হাইকোর্টের শর্ত হল, তিনি সিবিআই-এর তদন্তকারীর অনুমতি নিয়ে কলকাতার বাইরে চিকিৎসার জন্য যেতে পারবেন। তদন্তে তাঁকে সহযোগিতাও করতে হবে।
তবে, সদানন্দের জামিনের ক্ষেত্রে হাইকোর্ট বলেছে, সদানন্দ কলকাতার বাইরে কোথাও যেতে পারবেন না। আলিপুর আদালতে তাঁকে পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে। সিবিআই-এর তদন্তকারী অফিসারের কাছে সদানন্দকে মাসে একবার করে হাজিরা দিতে হবে।
এ দিন সদানন্দের আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায় বলেন, তাঁর মক্কেল ৮৮৯ দিন জেল হেফাজতে রয়েছেন। তাঁর শরীর ভাল নেই। তা ছাড়া ২০১৫ সালের ১৪ অগস্ট সিবিআই শেষ বারের মতো তাঁকে জেরা করে। তাঁকে কড়া শর্ত দিয়েও জামিন দিতে পারে আদালত। সিবিআই-এর আইনজীবী কে রাঘবচারিলু-ও আদালতে জানান, সদানন্দকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিলে তাঁরা আপত্তি করবেন না।
এ দিন সন্ধির অগ্রবালের জামিনের শুনানির সময় সিবিআই আদালতে জানায়, আলিপুর আদালত যে ভাবে সিবিআই-এর বক্তব্য না শুনে একতরফা মদন মিত্রকে জামিন দিয়েছিল, সেই ভাবে ওই আদালত সন্ধির অগ্রবালকেও জামিন দেয়। বিচারপতি মাত্রের ডিভিশন বেঞ্চ মদন মিত্রের জামিন খারিজ করে জানিয়েছিল, সিবিআই-এর বক্তব্য না শুনে তাড়াহুড়ো করে জামিন দেওয়া উচিত হয়নি নিম্ন আদালতের। নিম্ন আদালতের বিচারক খেয়ালখুশি মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেও সে বার হাইকোর্ট জানিয়েছিল।
সন্ধিরের আইনজীবী অভিষেক সিংহ এ দিন আদালতে দাবি করেন, সিবিআই ২০১৫ সাল থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে যে চারটি অতিরিক্ত চার্জশিট পেশ করেছে, তার একটিতেও সন্ধিরের নাম নেই। তা ছাড়া, যে ধারায় তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে,
সেই ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি তিন বছরের কারাদণ্ড। সন্ধির ইতিমধ্যেই এক বছর চার মাস জেলে কাটিয়ে দিয়েছেন।
দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে হাইকোর্ট জামিন খারিজ করে দেয়।
আদালত জানিয়েছে, সিবিআইয়ের আইনজীবী অনুপস্থিত ছিলেন বলে সে দিন নিম্ন আদালতের সন্ধিরের জামিনের শুনানি মুলতুবি রাখা উচিত ছিল।