State news

কিসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব? অন্য একটা গোষ্ঠীর নাম বলুন তো! কৃষ্ণগঞ্জে দাঁড়িয়ে চ্যালেঞ্জ অভিষেকের

ঠাকুরনগরে প্রধানমন্ত্রীর মতুয়া সমাবেশের কয়েক দিনের মধ্যেই কৃষ্ণগঞ্জের মতুয়া সংগঠককে খুন হতে হল কেন? তুললেন সে রকম প্রশ্নও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৭:৪৮
Share:

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

শুধু কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক নন, সত্যজিৎ বিশ্বাস নদিয়া জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতিও ছিলেন। সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার গেলেন খুন হয়ে যাওয়া জেলা সভাপতির বাড়ি। দেখা করলেন সত্যজিতের পরিবারের সঙ্গে। এ দিনই সত্যজিৎ খুনের ঘটনা নিয়ে প্রথম বার মিডিয়ার সামনে মুখ খুললেন তিনি। আরও জোর দিয়ে চক্রান্তের অভিযোগ তুললেন বিজেপির বিরুদ্ধে। ঠাকুরনগরে প্রধানমন্ত্রীর মতুয়া সমাবেশের কয়েক দিনের মধ্যেই কৃষ্ণগঞ্জের মতুয়া সংগঠককে খুন হতে হল কেন? তুললেন সে রকম প্রশ্নও।

Advertisement

কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক শনিবার সন্ধ্যায় খুন হওয়ার পর থেকেই তীব্র চাপানউতোর শুরু হয়েছে তৃণমূল আর বিজেপির মধ্যে। বিজেপির চক্রান্তে এই খুন বলে তৃণমূল দাবি করছে, বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের নামে এফআইআর-ও হয়ে গিয়েছে। আর বিজেপি বার বারই দাবি করছে, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই খুন হতে হল সত্যজিৎকে।

এই পরিস্থিতিতেই সোমবার কৃষ্ণগঞ্জে যান অভিষেক। শুধুমাত্র তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি হওয়ার সূত্রে নয়, নদিয়া জেলা তৃণমূলের অন্যতম সাংগঠনিক পর্যবেক্ষক হওয়ার কারণেও খুন হওয়া বিধায়কের এলাকায় যাওয়া অভিষেকের জন্য জরুরি ছিল। কৃষ্ণগঞ্জে দাড়িয়েই অভিষেক এ দিন ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ তত্ত্ব নস্যাৎ করার চেষ্টা করেন। ‘‘দ্বিতীয় গোষ্ঠীটার নাম কী?’’ মিডিয়ার উদ্দেশেই এ দিন এই প্রশ্ন ছুড়ে দেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘যদি গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থাকে, তা হলে নিশ্চয়ই অন্তত দু’টি গোষ্ঠী রয়েছে। অন্য গোষ্ঠীটার নাম কী আমাকে বলুন। অন্য গোষ্ঠীর নেতা কে বলুন।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: প্রিয়ঙ্কা নামতেই নতুন ভাবনা অখিলেশ- মায়াবতীর, যাচ্ছে ‘সমঝোতা’র প্রস্তাব!

অভিষেক এ দিন এক দিকে বার বার বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে, সত্যজিৎ বিশ্বাস গোটা নদিয়াতেই জনপ্রিয় নেতা ছিলেন এবং তার বিরুদ্ধে কোনও পাল্টা গোষ্ঠী সক্রিয় ছিল না। অন্য দিকে, তিনি বিজেপি-কে আরও স্পষ্ট করে নিশানা করেছেন। সত্যজিৎ বিশ্বাসকে গুলি করার অভিযোগ উঠেছে যাঁর বিরুদ্ধে, সেই অভিজিৎ পুন্ডারি আরএসএস তথা বিজেপির সঙ্গে যুক্ত বলে অভিষেক এ দিন দাবি করেন। অভিজিতের মা স্বীকার করেছেন যে অভিজিৎ বিজেপি করেন— দাবি অভিষেকের।

আরও পড়ুন: অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসই কি কাল হল সত্যজিতের?

কিন্তু কেন খুন হতে হল সত্যজিৎ বিশ্বাসকে? অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইঙ্গিত— সত্যজিৎ বিশ্বাস অত্যন্ত জনপ্রিয় নেতা ছিলেন, তাঁকে না সরালে কৃষ্ণগঞ্জে দাঁত ফোটানো অন্য দলের পক্ষে সম্ভব ছিল না। ২০১৫ সালের উপনির্বাচনে সত্যজিৎ কত ভোটে জিতেছিলেন, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ব্যবধান কতটা বাড়িয়ে নিয়েছিলেন, আগামী বার ব্যবধান আরও কতটা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন— সে সব কথা তুলে ধরে অভিষেক দাবি করেন যে, মতুয়া সমাজে সত্যজিৎ বিশ্বাস খুব জনপ্রিয় ছিলেন। মতুয়া ভোটে ভাগ বসানোর জন্যই তাঁকে সরানো হল বলে অভিষেক এ দিন ইঙ্গিত দেন।

গত ২ ফেব্রুয়ারি উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ মহকুমার ঠাকুরনগরে মতুয়া সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই প্রসঙ্গ টেনে এ দিন অভিষেক প্রশ্ন তোলেন— নরেন্দ্র মোদী ঠাকুরনগরে সভা করে যাওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই কেন খুন হতে হল তৃণমূলের মতুয়া নেতাকে?

রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধেও নিরন্তর প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের বিভিন্ন অংশে সভা করে দিলীপ ঘোষ যে সব মন্তব্য করছেন, যে ভাবে বলছেন, ‘অনাথ করে দেব’ বা ‘গর্তে ঢুকিয়ে দেব’, তার জেরেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছে বলে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদের দাবি। ‘‘একটা সত্যজিৎ বিশ্বাসকে খুন করে তৃণমূলকে আটকানো যাব না, হাঁসখালির ঘরে ঘরে আমরা সত্যজিৎ বিশ্বাস তৈরি করব।’’ চ্যালেঞ্জ তাঁর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন