—প্রতীকী চিত্র।
বছর পাঁচেক আগে ১৬ বছরের এক কিশোরীর অপমৃত্যু হয়েছিল পাড়ায়। তারই অশরীরী আত্মা নাকি ঘুরে বেড়াচ্ছে এখন! এ কথা রটতেই চাঞ্চল্য ছড়াল হুগলির চুঁচুড়া পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের ছাতাগলি বড়ুয়াপাড়ায়।
স্থানীয় সূত্রে দাবি, মাস দেড়েক আগে পাড়ার এক কিশোরীর আচরণে অস্বাভাবিকতা দেখা গিয়েছিল। সেই সময় ওই কিশোরীর মা-বাবা দাবি করেছিলেন, তাঁদের মেয়েকে ভূতে ধরেছে! অপমৃত্যু হওয়া ১৬ বছরের সেই প্রতিবেশী কিশোরীর আত্মাই তাঁদের মেয়ের শরীরে ভর করেছে। পূর্ব বর্ধমানের এক ওঝাকে দিয়ে অনলাইনে মেয়ের ঝাড়ফুঁকও করিয়েছেন তাঁরা।
এরই মাঝে পাড়ার আরও এক কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাতেই অশান্তি বাড়ে এলাকায়। অপমৃত্যু হওয়া কিশোরীর পরিবারের উপর চড়াও হন অসুস্থ হয়ে পড়া কিশোরীদের পরিবারের লোকেরা। তাঁদের দাবি, পাঁচ বছর আগে মেয়েটির মৃত্যুর পর ঠিকমতো শ্রাদ্ধশান্তি হয়নি। তাই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। যদিও মৃত কিশোরীর মা-বাবার বক্তব্য, মেয়ের মৃত্যুর পরেও তাঁরা নিজেদের বাড়িতেই রয়েছেন। কখনও কোনও সমস্যা হয়নি। প্রতিবেশীদের একাংশেরও বক্তব্য, কুসংস্কারের বশবর্তী হয়েই কয়েক জন এ রকম করছেন। ভূত-প্রেত বলে কিছু নেই।
কিন্তু এলাকায় আতঙ্ক গ্রাস করায় মহকুমাশাসক স্মিতা সান্যাল শুক্লা ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অর্পিতা সাহাকে এলাকায় গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। সেইমতো কাউন্সিলর গিয়েছিলেন ওই পরিবারগুলির সঙ্গে কথা বলতে। অর্পিতা বলেন, ‘‘একটা বাচ্চা মেয়ে মারা গিয়েছিল। তাও অনেক দিন হয়ে গিয়েছে। পাশের বাড়ির একটি মেয়েকে নাকি ভূতে ধরেছে। এটা ঠিক নয়। হয়তো কোনও কারণে বাচ্চাটা অসুস্থ হয়েছে। নিজেদের মধ্যে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আমি দুটো পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। এটা একটা কুসংস্কার।’’
পাড়ায় গিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চও। ব্যান্ডেল-মগরা শাখার সম্পাদক সন্দীপ সিংহ বলেন, ‘‘ঘটনাটি শোনার পর আমরা গিয়েছিলাম ওই এলাকায়। মানুষের সঙ্গে কথা বলি। বিষয়টি মহকুমাশাসককে জানাই। মহকুমাশাসক কাউন্সিলরকে নির্দেশ দিয়েছিলেন ওই এলাকায় গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলতে। এটা যে একটা কুসংস্কার, ভূত-প্রেত বলে কিছু হয় না, সেটা বোঝাতে ওই এলাকায় আমরা সচেতনতামূলক প্রচার চালাব।’’