পড়ুয়াদের উপর নিগ্রহ ঠেকাতে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ

এসসিইআরটি-র এক কর্তা জানান, তাঁরা একটি বিধি তৈরি করেছেন। শিশুদের উপর নির্যাতন রুখতে সেই বিধি অনুসারে কাজ করবেন স্কুলের সমস্ত শিক্ষকেরা। প্রথমে প্রধান শিক্ষকদের প্রশিক্ষিত করা হবে। পরে তাঁরাই সমস্ত শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেবেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:১১
Share:

পড়ুয়ার হাঁটাচলা ও শরীরী ভাষা দেখেই বুঝতে হবে তার মানসিক অবস্থা। শিক্ষক-শিক্ষিকা বা সহপাঠীর দ্বারা সে কি নির্যাতিত? পড়ুয়ারা মুখে না বলতে পারলেও শিক্ষকেরা যেন তা সরাসরি বুঝতে পারেন। এ বার সেই লক্ষ্যেই আগামী নভেম্বর থেকে রাজ্যের প্রায় ৭০ হাজার স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু করছে স্টেট কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এসসিইআরটি)।

Advertisement

এসসিইআরটি-র এক কর্তা জানান, তাঁরা একটি বিধি তৈরি করেছেন। শিশুদের উপর নির্যাতন রুখতে সেই বিধি অনুসারে কাজ করবেন স্কুলের সমস্ত শিক্ষকেরা। প্রথমে প্রধান শিক্ষকদের প্রশিক্ষিত করা হবে। পরে তাঁরাই সমস্ত শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেবেন।

প্রসঙ্গত, প্রতিটি স্কুলেই একটি ‘সেফটি ও সিকিউরিটি মনিটারিং কমিটি’ রয়েছে। কিন্তু বহু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে সেই কমিটি সম্পর্কে অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। সম্প্রতি কলকাতার বিনোদিনী গার্লস স্কুলে এক পড়ুয়ার যৌন নিগ্রহের অভিযোগকে ঘিরে যে গোলমাল হয়েছে সেখানেও দেখা গিয়েছে স্কুলের কোনও কমিটির কাছে অভিযোগই জমা পড়েনি।তার আগেই রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে স্কুল চত্বর।

Advertisement

শুধু শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীই নন। কিছু ক্ষেত্রে সহপাঠীদের দ্বারাও পড়ুয়ারা নির্যাতিত হয়। এই সব ঘটনা রুখতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

তবে পড়ুয়ার সংখ্যার তুলনায় শিক্ষকের সংখ্যা অধিকাংশ স্কুলেই কম হওয়ায় এই প্রশিক্ষণের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। প্রতিটি ক্লাসে ৪০ থেকে ৫০ জন পড়ুয়া রয়েছে। সেখানে প্রতিটি পড়ুয়ার দিকে এক জন শিক্ষকের পক্ষে নজর রাখা বেশ কঠিন বলে দাবি শিক্ষা মহলের। কম সময়ে কী ভাবে সকলের দিকে নজর রাখা সম্ভব, তার সদুত্তর খুঁজছেন শিক্ষকেরাও। এসসিইআরটি-র ওই কর্তা অবশ্য জানান, প্রশিক্ষণে সবই শেখানো হবে। ক্লাসের প্রথম সারিতে থাকা পড়ুয়াদের এমনিতেই লক্ষ্য রাখা যায়। কিন্তু যারা ক্লাসের পিছনের সারিতে বসে তাদের প্রতি যেন বাড়তি নজর থাকে তার দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ হওয়ার কিছু মাস পর থেকে এই সুফল পাওয়া যাবে বলে তাঁর দাবি।

শিক্ষা মহলের একাংশের মত, পড়ুয়াদের হেনস্থা রুখতে গেলে শুধু কমিটি বা প্রশিক্ষণ দিয়েই কাজ হবে না। অভিভাবকদের সঙ্গে স্কুলের প্রতিনিয়ত যোগাযোগ বাড়়াতে হবে। শিশুরা পরিবারকে সব থেকে নিরাপদ মনে করে। সেখানে তারা কোনও অবাঞ্ছিত ঘটনার কথা জানালে দ্রুত যেন তা স্কুলের কাছে পৌঁছয়, তার জন্য স্কুল ও অভিভাবক দু’পক্ষকেই সক্রিয় হতে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement