প্রতীকী ছবি।
কত জন পড়ুয়া মিড-ডে মিল খাচ্ছে তার ১০০ শতাংশ হিসেব পাচ্ছে না কেন্দ্র। দ্রুত সেই হিসেব পাওয়া নিশ্চিত করতে রাজ্যকে চিঠিও দিয়েছে কেন্দ্র। তার ভিত্তিতে সম্প্রতি সব জেলাশাসককে চিঠি পাঠাল স্কুলশিক্ষা দফতর। এবং বিষয়টিকে ‘এক্সট্রিমলি আর্জেন্ট’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
গত বছর রাজ্য একটি ১৪ সংখ্যার নম্বর সব জেলায় পাঠিয়ে দেয়। নিয়মানুযায়ী, প্রতি দিন বিকেল চারটের মধ্যে ওই নম্বরে মিড-ডে মিলের ন্যূনতম তথ্য জানানোর কথা। কত জন পড়ুয়া স্কুলে উপস্থিত ছিল, কত জন মিড-ডে মিল খেয়েছে আর কত জন খায়নি— এই সংখ্যাগুলি জানানোর কথা। ওই বিশেষ নম্বরে তথ্য দেওয়ার পরেই জেলা সর্বশিক্ষা, বিকাশ ভবন-সহ কেন্দ্রের কাছে তা পৌঁছে যাওয়ার কথা। কিন্তু ওই পদ্ধতি চালু হওয়ার পর থেকে খুব একটা সাড়া মেলেনি বলে দাবি দফতরের এক কর্তার। তার পরে রাজ্যের তরফে দফায় দফায় চিঠি পাঠানো হয়। বেশ কয়েক মাস পরে পরিস্থিতি ঠিক হয় বলে জানান তিনি। কিন্তু সম্প্রতি ফের সেই কাজে ভাটা পড়েছে।
স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, এই কাজের দায়িত্ব থাকে মূলত সংশ্লিষ্ট স্কুলের নোডাল শিক্ষকের উপরে। তাঁরই সমস্ত দিক দেখে এই তথ্য পাঠানোর কথা। কিন্তু সেখানেই ঘাটতি থেকে যাচ্ছে বলে মনে করছেন দফতরের কর্তারা। একই ভাবে দায় থাকে স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরও। কিন্তু গোটা জেলার ক্ষেত্রে বিষয়টির দায়িত্বে থাকেন জেলাশাসক, তাই তাঁদেরকে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে।
মিড-ডে মিল নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। যে কারণে নজরদারি দল গঠন, ওয়েবসাইটে তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি সরকারের উচ্চ মহলের ‘নজরদারির জুজু’ও দেখানো হয়েছিল। তার পরেও পরিস্থিতি পুরোপুরি বদলাচ্ছে না।
তবে স্কুলে পঠন পাঠনের পাশাপাশি মিড-ডে মিলের সব দায়িত্ব পালনে শিক্ষকের অসুবিধা হচ্ছে বলেই মনে করছে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি। সমিতির তরফ স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় আইনে কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে দিয়ে পুরো প্রক্রিয়া চালানোর নিয়ম রয়েছে। শিক্ষকদের এই কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া উচিত। এক দিকে পঠন পাঠনের ও অন্য দিকে মিড-ডে মিলের চাপে শিক্ষকদেরও ভুল হয়ে যাচ্ছে।’’
দফতরের কর্তাদের অবশ্য যুক্তি, সামান্য তথ্যটুকু প্রতি দিন পাঠানোটা বড় কোনও ঝক্কি নয়। এক কর্তার কথায়, ‘‘শিক্ষকদের এটুকু তো সামলাতেই হবে।’’ তবে মিড ডে মিলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ আদৌ কমবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।