Child Marriage

লুকিয়ে নাবালিকার বিয়ে, গ্রেফতার বাবা-মা! কিশোরী অন্তঃসত্ত্বার পরিসংখ্যানে উদ্বিগ্ন পশ্চিম মেদিনীপুর প্রশাসন

সময়মতো পৌঁছোতে পারেনি পুলিশ। যত ক্ষণে তারা পৌঁছোল, তত ক্ষণে মন্দিরে গোপনে বিয়ে হয়ে গিয়েছে। শেষমেশ ভোজের আসরে গিয়ে সদ্য বিবাহিত নাবালিকাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:৩৮
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

সময়মতো পৌঁছোতে পারেনি পুলিশ। যত ক্ষণে তারা পৌঁছোল, তত ক্ষণে মন্দিরে গোপনে বিয়ে হয়ে গিয়েছে। শেষমেশ ভোজের আসরে গিয়ে সদ্য বিবাহিত নাবালিকাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে নাবালিকার মা-বাবাকে।

Advertisement

পশ্চিম মেদিনীপুরের সবংয়ের এই ঘটনায় আবার জেলায় বাল্যবিবাহের উদ্বেগের ছবি প্রকাশ্যে চলে এল। ধৃতদের বিরুদ্ধে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আইনের ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। নাবালিকার মা-বাবাকে গ্রেফতার করার পাশাপাশি আটক করা হয়েছে পুরোহিতকে। তবে নাবালিকার স্বামী এবং তাঁর মা-বাবা পলাতক। তাঁদের সন্ধানে তল্লাশি চলছে। নাবালিকাকে উদ্ধার করে হোমে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, এক শিশুকল্যাণ আধিকারিক লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন সবং থানায়। তার ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, সবং থানার অন্তর্গত মাধবচক-বিষ্ণুপুর এলাকার এক দশম শ্রেণির ছাত্রীর বিয়ে হয়েছে জগন্নাথচক বাঁকি ভেড়ির ১৮ বছরের এক যুবকের সঙ্গে। দুই পরিবারের সম্মতিতে শনিবার একটি মন্দিরে গোপনে বিয়ে হয় তাঁদের। বিয়ের পর পাত্রের বাড়ি জগন্নাথপুর গ্রামে শনিবার দুপুরে খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানেই হাজির হয়েছিল সবং থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, বিয়েতে যাঁরা ইন্ধন জুগিয়েছিলেন, যাঁরা খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করেছিলেন, তাঁদের সকলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।

Advertisement

নাবালিকা বিয়ের ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুরে নতুন কিছু নয়। এ নিয়ে লাগাতার প্রচার চালায় জেলা প্রশাসন। এরই সঙ্গে উদ্বেগ বেড়েছে নাবালিকাদের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরিসংখ্যানেও। দেখা যাচ্ছে, আঠারো দূর, পনেরোতেই মা হচ্ছে অনেকে। জেলা প্রশাসনের একটি সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত ভর্তি হয়েছিলেন ৬৪,৯৯৮ জন অন্তঃসত্ত্বা। তার মধ্যে নাবালিকা ১১,৫৬১ জন। আর ১,১৩০ জনের বয়স পনেরোর কম। ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সি ১০,৪৩১ জন। ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৫৭,৪০১ জন অন্তঃসত্ত্বা। এর মধ্যে নাবালিকা ৯,১৩৯ জন। অনূর্ধ্ব ১৫-এর সংখ্যা ২০৩। ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সি ৮,৯৩৬ জন।

জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি বলেন, ‘‘আমাদের জেলায় বাল্যবিবাহ একটি সমস্যা। একে রোধ করতেই হবে। বাল্যবিবাহ রোধে বেশ কিছু কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।’’ জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গি বলেন, ‘‘অল্প বয়সে বিয়ে অবশ্যই রুখতে হবে। এর জন্য সমাজের প্রত্যেককে এগিয়ে আসতে হবে।’’ ১০৯৮ এবং ১১২— এই দু’টি টোল ফ্রি নম্বর প্রচার করে প্রশাসন। ‘অন্তরা’ ইঞ্জেকশনের প্রচারও করছে স্বাস্থ্য দফতর। জন্ম নিয়ন্ত্রণে এই ইঞ্জেকশন ব্যবহার হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement