প্রদর্শশালায় ‘ডাকের সাজ’

‘ডাকের সাজ’। তবে এ ডাকের সাজ ঠাকুরের নয়। ডাকটিকিট। প্রায় অতীত হতে বসা এই ডাকটিকিট নিয়েই আগামী বৃহস্পতিবার অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টসে শুরু হচ্ছে প্রদর্শনী। চলবে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত।

Advertisement

অশোক সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৫ ০৩:৩৪
Share:

‘ডাকের সাজ’। তবে এ ডাকের সাজ ঠাকুরের নয়। ডাকটিকিট। প্রায় অতীত হতে বসা এই ডাকটিকিট নিয়েই আগামী বৃহস্পতিবার অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টসে শুরু হচ্ছে প্রদর্শনী। চলবে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত।

Advertisement

চিঠি থেকে খুলে নেওয়া ডাকটিকিট দিয়ে বাড়ির বসার ঘর সাজাতে টাইমস অব লন্ডন পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন এক মহিলা। সেই শুরু ডাকটিকিট সংগ্রহের। জর্জ হারপিন ডাকটিকিট সংগ্রহের গ্রিক ভাষার ব্যুৎপত্তিগত অর্থ দিয়ে এর নাম দেন ‘ফিলাটেলি’। রাজা পঞ্চম জর্জ থেকে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ, মিশরের রাজা ফারুখ, মোনাকোর রাজকন্যা তৃতীয় রেনিয়র, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্ট, পিয়ানো প্রস্তুতকারক থিয়োডর ই স্টাইনওয়ে, চার্লি চ্যাপলিন থেকে জন লেনন— যুগে যুগে অজস্র নামী লোক জড়িয়ে গিয়েছেন ডাকটিকিট সংগ্রহের নেশায়।

ডাকটিকিটের মাধ্যমে স্মরণীয় হয়ে থাকে ইতিহাস, ঐতিহ্য। চিঠিকে উপজীব্য করে তৈরি হয়েছে চিত্রনাট্য, নাটক। এ দেশে চিঠির পারাণি হিসেবে ডাকটিকিট চালু হয়েছিল ১৮৫২ সালের ১ জুলাই। ‘সিন্ধে ডক’ নামে ওই টিকিটের উৎপত্তি সিন্ধুপ্রদেশে, তাই ওই নাম। প্রথম স্বীকৃত ডাকটিকিট চালু হয় ১৯৫৪-র অক্টোবরে। আধ আনা, এক আনা, দু’আনা আর চার আনা— এই চার রকম দামের। ওই ডাকটিকিটের পিছনে আঠা ছিল না, ছিল না ধারের ছোট ছোট ফুটো। তাতে ছিল রানি ভিক্টোরিয়ার ১৫ বছর বয়সের ছবি। স্বাধীন ভারতে প্রথম ডাকটিকিট প্রকাশিত হল ১৯৪৭-এর ২১ নভেম্বরে। তাতে ভারতীয় পতাকা, সঙ্গে ‘জয় হিন্দ’ লেখা।

Advertisement

চিফ পোস্ট মাস্টার জেনারেল (বেঙ্গল সার্কেল) অরুন্ধতী ঘোষের কথায়, ‘‘গত এক দশকে দেশের এই অঞ্চলে (পশ্চিমবঙ্গ, আন্দামান, সিকিম) এই প্রথম এমন প্রদর্শনী হচ্ছে। এতে থাকছে কম্পিটিটিভ, নন-কম্পিটিটিভ এবং ইনভাইটি— তিন রকম বিভাগ।’’ ক্যানসারের মতো মারণ রোগ নিয়ে সচেতনতা-বার্তাও দেবে এই প্রদর্শনী। ‘‘সোশ্যাল ফিলাটেলি বিভাগে দেখা যাবে বিশ্বে রক্তদান ও রক্তবিজ্ঞান নিয়ে প্রকাশিত ডাকটিকিটও’’— বলছেন চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউটের প্রাক্তন বরিষ্ঠ সহ-অধিকর্তা উৎপল সান্যাল। ‘ইন্ডিয়ান ফিলাটেলি’ বিভাগে দেখা যাবে ভারতীয় ডাক ব্যবস্থা থেকে শুরু করে ভারতীয় রেলের বিবর্তনের ইতিহাস। ১৯৩১ সালে রবীন্দ্রনাথ ‘মানুষের ধর্ম’ বইতে ক্যানসার নিয়ে যা লিখেছিলেন, থাকছে সেই নথিও।

‘কম্পিটিটিভ’ বিভাগে বড় কাচের ফ্রেম থাকছে ৪৬০টি। ডাক বিভাগের সহকারী অধিকর্তা জীবক বড়ুয়া বলেন, ‘‘কম্পিটিটিভ বিভাগে থাকছে সোনা, রুপো এবং ব্রোঞ্জ পুরস্কার।’’ প্রকাশিত হবে শম্ভু মিত্রর উপরে কভার, জৈন মন্দির, উত্তর কলকাতার লায়ন্স ক্লাবের উপরে বিশেষ ডাক-কভারও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন