বুধবার এই বিকেল পাঁচটা নাগাদই তো বসে ছিলাম সবাই মিলে। চুটিয়ে খাওয়াদাওয়া চলছিল কেভেন্টার্সে। বৃহস্পতিবার সে দৃশ্য উধাও। টেবিল চেয়ার উল্টে রেখে ঝাঁপ ফেলেছে কেভেন্টার্স।
দুপুর পর্যন্ত কিছু বোঝা যায়নি। ঘুরে বেড়িয়ে সকলে মিলে যখন চক বাজারে এলাম, ঘড়িতে সাড়ে বারোটা। গোলমালের আঁচ পেয়ে হাঁটা দিলাম গাঁধী রোডে হোটেলের দিকে। এর মধ্যে খাবারের দোকানে ঢুকতে গিয়ে বাধা পেয়েছি। হোটেল মালিক কাঁচুমাচু হয়ে বলেছেন, ‘‘বন্ধ করে দেব দোকান। আপনারা দয়া করে হোটেলে ফিরে যান।’’ হোটেলে ফিরেও শান্তি নেই। হঠাৎই ভেসে এল মাইকে স্লোগান। কিছুক্ষণের মধ্যে বিকট সব শব্দ। দেখি, রাস্তা দিয়ে এক দল পড়ুয়া ছুটতে ছুটতে গেল। মুখে আতঙ্ক।
বিধাননগরের বাসিন্দা চিত্রেয়ী লোধ (পাহাড়ি) রাজভবনের কাছে একটি হোটেলে উঠেছেন দুই কন্যাকে নিয়ে। এ দিন গিয়েছিলেন দার্জিলিং স্টেশনে। গোলমাল হতে পারে, সেই আশঙ্কায় সকলের কথা শুনে ফিরে আসেন ম্যালে। আচমকা পরপর কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটার শব্দ। দেখলেন, দ্রুত দোকানিরা ঝাঁপ ফেলে দিচ্ছে। প্রাণ বাঁচাতে একটি দোকানে ঢুকে পড়লেন। ঘণ্টাখানেক সেই দমবন্ধ করা অবস্থায় থাকতে হয়েছে। সন্ধ্যার মুখে বেরতে পারলেও পুলিশ এসে বলে, সোজা পথে যাবেন না! চিত্রেয়ী দেবী এখন বলছেন, ‘‘হাতে প্রাণ নিয়ে হোটেলে ফিরেছি। কী ভাবে বাড়ি ফিরব, জানি না!’’
আমদেরও সেই অবস্থা। সাড়ে চার বছরের বাচ্চাটাকে নিয়ে কী ভাবে কলকাতা পৌঁছব, জানি না।