দিনহাটায় নার্সারি স্কুলে এলোপাথারি গুলি-হামলা, আহত এক

নিশানায় ছিলেন শিক্ষক মজনু হক। গুলি তাঁর গায়ে লাগেনি। অভিযোগ, তার পরেই তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়। মার খান তাঁর ভাই মনোয়ার হোসেনও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গীতালদহ (দিনহাটা) শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:২৮
Share:

স্কুল পরিদর্শনে মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।নিজস্ব চিত্র।

যুব এবং মূল তৃণমূলের দ্বন্দ্ব এ বার ঢুকে পড়ল নার্সারি স্কুলে। বুধবার সকাল ১০টা নাগাদ দিনহাটার গীতালদহের আনন্দ শিক্ষানিকেতন স্কুলে কয়েক জন বন্দুকধারী গুলি ছুড়তে ছুড়তে ঢুকে পড়ে বলে অভিযোগ। নিশানায় ছিলেন শিক্ষক মজনু হক। গুলি তাঁর গায়ে লাগেনি। অভিযোগ, তার পরেই তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়। মার খান তাঁর ভাই মনোয়ার হোসেনও। দু’জনকেই কোচবিহারের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। পুলিশ অবশ্য দাবি করেছে, গুলি চলেনি।

Advertisement

মজনু ও মনোয়ার দু’জনই এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত। স্থানীয় সূত্রে দাবি, কয়েক দিন আগে তাঁরা যুবর দিকে ছিলেন। সম্প্রতি মূল তৃণমূলের দিকে ঘেঁষার পরেই এই হামলা, অভিযোগ পরিবারের।

স্থানীয়দের দাবি, অনেকে গুলি চলার শব্দ পান। স্কুলের সামনে এসে তাঁরা দেখেন, সেখানে দু’পক্ষের মধ্যে গন্ডগোল হচ্ছে। জখম দুই শিক্ষকের আত্মীয়দের অভিযোগ, একটি বড় গাড়িতে চেপে ১২-১৫ জন স্কুলের সামনে এসে দাঁড়ায়। চার জনের একটি দল শূন্যে গুলি ছুড়তে ছুড়তে স্কুলে ঢোকে। তত ক্ষণে ছাত্রছাত্রী ও অন্য শিক্ষকদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। মজনুকে টেনে বার করে মারধর শুরু হয় বলে অভিযোগ। ওই শিক্ষকের বাড়ি পাশেই। তাঁর ভাই প্রাথমিক শিক্ষক মনোয়ার হোসেন তাঁকে বাঁচাতে ছুটে আসেন এবং প্রহৃত হন বলে অভিযোগ। জখম মজনু বলেন, “বন্দুকের বাঁট দিয়ে আমাদের মারা হয়েছে।” তাঁর পরিবারের অভিযোগ, গুলি ওঁদের কান ঘেঁষে চলে গিয়েছে।

Advertisement

ঘটনার পরেই স্থানীয়েরা পথ অবরোধ করেন। চার ঘণ্টা অবরোধ চলে। তাঁদের বক্তব্য, শিশুদের স্কুলে পাঠিয়েও স্বস্তিতে থাকা যাচ্ছে না। এ দিন বড় বিপদ হতে পারত। দিনহাটার পরিস্থিতির জন্য বিরোধীরা শাসকের দিকেই আঙুল তুলেছে। তাদের বক্তব্য, কাঁটাতারহীন বিস্তীর্ণ সীমান্ত এখানে। সেখান দিয়ে অবাধে চোরাকারবারের অভিযোগ। সেই কারবার কে নিয়ন্ত্রণ করবে, সেই দ্বন্দ্বেই এতটা উত্তপ্ত গোটা এলাকা। হাতে হাতে যে আগ্নেয়াস্ত্র দেখা যাচ্ছে, তা-ও একই কারণে।

হাসপাতালে জখম শিক্ষক মজনু হক।

জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ যদিও বলেন, “দুষ্কৃতীরাই গন্ডগোল করছে।” যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “আমি দিল্লিতে। যতদূর শুনেছি, এর সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই। পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।” এই ঘটনায় গীতালদহ ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আবু আল আজাদ-সহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে। আজাদ বহিষ্কৃত যুব নেতা নিশীথ প্রামাণিক ঘনিষ্ঠ। যদিও তিনি বলেন, ‘‘আমার ভাইপো তার ছেলেকে নিয়ে স্কুলে যাচ্ছিল। মজনুরা তাকে মারধর করেছে। উল্টে আমাদেরই ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন