বিনিয়োগ বিশেষ আসছে না। কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি হচ্ছে না। বাড়িতেই দোকান খুলে তাই আয়ের সুযোগ দিতে বিধানসভায় বিল পাশ হল শনিবার। বিলে বলা হয়েছে, বিধাননগর, দুর্গাপুর, আসানসোল, চন্দননগর, শিলিগুড়ি— পাঁচ পুরনিগম (কর্পোরেশন) এলাকায় বাড়িতেই শিল্পকলার স্কুল, বই-পত্রিকা-কার্ড-সংবাদপত্র, অফিসের প্রয়োজনীয় জিনিস, বুটিক, খেলনা, পোশাক, মোবাইল, মাছ-মাংসের দোকান কিংবা ডাক্তারের চেম্বার— ৪১ রকম ব্যবসা খোলা যাবে।
বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত বিধানসভাতেই বক্তৃতায় বুঝিয়ে দেন, বাসভবনে মাছ-মাংসের দোকান খোলা তাঁর না-পসন্দ। নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিম বলেন, ‘‘বিলে অনেক রকম দোকান খোলার সুযোগের কথা বলা হয়েছে। কোন এলাকায় কীসের দোকান খোলা যাবে, সেটা সংশ্লিষ্ট পুরসভাই ঠিক করবে।’’ ওই বিলে বলা হয়েছে, যাঁরা জলাজমি সংরক্ষণ করবেন, তাঁরা জমির করে ৯০% ছাড় পাবেন। মন্ত্রী এ দিন বিধানসভায় ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০১৬ পেশ করলে শাসক দলের বিধায়করা তো বটেই, কংগ্রেসের অপূর্ব সরকারও সেটি সমর্থন করেন। শিলিগুড়ির মেয়র তথা সিপিএম বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য চেয়েছিলেন, আপাতত বিলটি প্রত্যাহার করে মন্ত্রী রাজ্যের পাঁচটি কর্পোরেশনের মেয়রের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করুন। তাঁর মতে, বিলের মাধ্যমে কর্পোরেশনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার সঙ্কুচিত করে ক্ষমতা কাড়বে সরকার। অশোকবাবুর পরামর্শ, বাড়ির গ্যারাজের অংশ ছেড়ে দোকান খোলা যাবে— এই কথাটুকু বিলে রাখা হোক। না হলে কেউ গ্যারেজে দোকান খুললে রাস্তায় গা়ড়ির লাইন পড়ে বিশৃঙ্খলা হবে।
মন্ত্রীর বক্তব্য, কলকাতা ও হাওড়া পুরসভা যে অধিকার পায়, অন্য পুরনিগমকে তা পাইয়ে দিতেই এই বিল। অশোকবাবুর বক্তব্য, কলকাতার যে সব ভাল আইন আছে, তা অন্য পুরনিগমগুলি নিজেদের আইনে ঢুকিয়ে নিলেই কাজ হয়ে যেত। সংশোধনীর দরকার ছিল না। আসলে এর মাধ্যমে পুরনিগমগুলির ক্ষমতা কাড়তে চায় সরকার। অশোকবাবুর বক্তব্য মন্ত্রী গ্রহণ করেননি।
• ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল
• বিধাননগর, চন্দননগর, দুর্গাপুর, আসানসোল, শিলিগুড়ি
• বাড়ির নিচে ৪১ রকমের দোকান খোলা যাবে
• জলাভূমি সংরক্ষণ করলে ৯০% ছাড় মিলবে