সাক্ষাৎ: শিলিগুড়ি পুরসভার বকেয়া আদায়ের দাবিতে মহাকরণে পুরমন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের কাছে সেখানকার মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র।
পুরসভার বকেয়া আদায়ের দাবিতে রাস্তায় সপার্ষদ ধর্নায় বসলেন সপার্ষদ শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। বিরোধী পরিচালিত শিলিগুড়ি পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার ‘অর্থনৈতিক অবরোধ’ তৈরি করেছে, এই অভিযোগে ধর্নায় সামিল হলেন কংগ্রেস বিধায়কেরাও। প্রকাশ্যে অশোকবাবুদের ধর্নাকে গুরুত্ব দিতে না চাইলেও শিলিগুড়ির কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠকে পুরমন্ত্রী শেষ পর্যন্ত কিছু বকেয়া মঞ্জুর করার সুবজ সঙ্কেত দিয়েছেন বলেই বাম সূত্রের দাবি। রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে দেখা করেও ‘বঞ্চনা’র কথা জানিয়ে এসেছেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী, মেয়র অশোকবাবু-সহ বাম কাউন্সিলরেরা।
মেট্রো চ্যানেলে শুক্রবার দুপুরে ধর্নায় বসেন অশোকবাবু, সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার-সহ কাউন্সিলর ও অন্য নেতারা। ধর্না শুরুর আগে পুলিশের সঙ্গে সামান্য বাদানুবাদ হলেও পরে আর বাম কাউন্সিলরদের বাধা দেওয়া হয়নি। পরীক্ষা-জনিত নিয়মবিধি জারি থাকায় ধর্নায় অবশ্য মাইক ব্যবহার হয়নি। ধর্নায় অশোকবাবু বলেন, ‘‘শিলিগুড়ির মানুষের সঙ্গে কেমন অগণতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক আচরণ করা হচ্ছে, রাজধানী শহরে এসে রাজ্যের মানুষকে তা জানাতে চাইছি। রাজ্য পাওনা ছাড়ছে না, কেন্দ্রের অংশের টাকাও দেওয়া হচ্ছে না। সব মিলিয়ে প্রায় ১৪০০ কোটি টাকা বকেয়া।’’
বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর মন্তব্য, ‘‘এক জন মেয়র পাওনা আদায়ের জন্য কাউন্সিলরদের নিয়ে রাস্তায় বসেছেন, এটা অভূতপূর্ব ঘটনা! বাম আমলে বিরোধীদের হাতে অনেক পুরসভা ও পঞ্চায়েত ছিল। শাসক দলের হাতে থাকলে বেশি বরাদ্দ, বিরোধীদের হাতে থাকলে কম— এমন হয়নি।’’ দাবি আদায়ে ভবিষ্যতে বামফ্রন্ট রাজ্য স্তরের কর্মসূচি নেবে বলেও বিমানবাবু জানান। ধর্নায় সমর্থন জানাতে এসেছিলেন কংগ্রেসের তিন বিধায়ক শঙ্কর মালাকার, সুখবিলাস বর্মা ও অসিত মিত্র। শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘শুধু সিপিএম বলে নয়, রাজ্যে বিরোধীদেরই কোনও গণতান্ত্রিক অধিকার নেই। বিরোধীদের পুরসভায় অর্থনৈতিক অবরোধ তৈরি করা হয়েছে। তাই দেশের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দলের তরফে এই ধর্নায় সমর্থন জানাতে এসেছি।’’
আরও পড়ুন: বিধায়ক খুনের তদন্তে বিজেপি নেতাকে ডাক সিআইডি-র
ধর্না থেকে উঠে অশোকবাবুরা গিয়েছিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে দেখা করতে। বৈঠক শুরুর আগে ফিরহাদ বলেন, ‘‘যখন যেমন প্রকল্প মঞ্জুর হয়েছে, সে ভাবে শিলিগুড়িকে টাকা দেওয়া হয়েছে। ওঁরা পুরো বাজেটের টাকা একসঙ্গে চাইলে কী করা যাবে? দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য ওঁরা ধর্নায় বসেছেন। অশোকবাবু ধর্নায় বসলেও শিলিগুড়ি যা টাকা পাবে, ধর্না না দিলেও তা-ই পাবে!’’ মন্ত্রীর সঙ্গে কাউন্সিলরদের বৈঠকে অবশ্য খানিকটা জট খুলেছে বলে বাম সূত্রের খবর। মন্ত্রীর নির্দেশেই সুজন, অশোকবাবুদের সঙ্গে আলাদা করে আলোচনায় বসেন পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের সচিব। ত্রয়োদশ অর্থ কমিশনের বকেয়া টাকা দ্রুত মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস মিলেছে বলে বাম কাউন্সিলরদের দাবি।
আরও পড়ুন: রাজকুমার মৃত্যুর কেস ডায়রি তলব