জমিতে নামার অনুমতি পাচ্ছেন চাষিরা

জমি ফেরত পেলেও সেখানে যাওয়ার অনুমতি ছিল না। এ বার সেই বাধাও কাটল। আজ, বুধবার থেকে সিঙ্গুরে প্রকল্প এলাকায় নিজের জমিতে যেতে পারবেন চাষিরা। মঙ্গলবার সিঙ্গুরে এসে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সে কথা জানান। তিনি বলেন, “টাটা প্রকল্প এলাকায় জমির পরচা চাষিদের বিলি হয়ে গিয়েছে। ওই জমি এখন তাঁদের।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

সিঙ্গুর শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:২২
Share:

প্রকল্প এলাকায় এখনও পড়ে ন্যানোর কঙ্কাল । ছবি: দীপঙ্কর দে।

জমি ফেরত পেলেও সেখানে যাওয়ার অনুমতি ছিল না। এ বার সেই বাধাও কাটল।

Advertisement

আজ, বুধবার থেকে সিঙ্গুরে প্রকল্প এলাকায় নিজের জমিতে যেতে পারবেন চাষিরা। মঙ্গলবার সিঙ্গুরে এসে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সে কথা জানান। তিনি বলেন, “টাটা প্রকল্প এলাকায় জমির পরচা চাষিদের বিলি হয়ে গিয়েছে। ওই জমি এখন তাঁদের। মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছা অনুযায়ী যে অংশে কোনও বাধা নেই, সেখানে চাষিরা যেতেই পারেন। বুধবার গোপালনগর থেকেই তা শুরু হবে। চাষিরা জমিতে গিয়ে দেখে, বুঝে নেবেন তাঁদের জমির পরিস্থিতি।”

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘প্রথমে গোপালনগর, পরে পর্যায়ক্রমে অন্য অংশের চাষিরাও জমিতে নামবেন। জমির হাল-হকিকত সত্যিই চাষের পক্ষে ঠিক কতটা উপযুক্ত তাও চাষিরা দেখতে পারবেন। তাঁরা জমি পরীক্ষার পর সরকারকে জানাবেন জমির পরিস্থিতি ঠিক কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে।’’

Advertisement

এর আগে রাজ্য সরকার চাষিদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সিঙ্গুরের জমি চাষযোগ্য করেই তাঁদের ফেরত দেওয়া হবে। তবে সরকার বললেও প্রকল্প এলাকায় জমি রয়েছে এমন অনেক চাষি মনে করেন ওই জমিতে এখনই ফের চাষ শুরু সম্ভব নয়। এমনকী জমিতে চাষ না হলে তাঁরা জমি বেচে দেবেন বলেও অনেককে বলতে শোনা গিয়েছে। তবে তাঁরা দেখতে চাইছেন শেষমেশ সরকার ঠিক কী করে। তার পরই তাঁরা জমি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন।

নবান্ন সূত্রে খবর, সিঙ্গুরের ৮০০ একর জমির মালিকের নাম ধরে ধরে পরচা তৈরির কাজ প্রায় শেষ। পাশাপাশি চেক ফেরত দেওয়ার কাজও পাশাপাশি চলছে। হস্তান্তরিত জমিতে চাষ করার জন্য শুক্রবার থেকে কাউন্সেলিং শুরু করবে কৃষি দফতর। মঙ্গলবার নবান্নে রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু উদ্যানপালন এবং ক্ষুদ্রসেচ দফতরের অফিসারদের নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে সিঙ্গুরের জমিতে কী কী চাষ সম্ভব, সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ১২ সপ্তাহের মধ্যে জমি ফেরত দিতে হবে। তাই ৩০ নভেম্বরের মধ্যে হস্তান্তরের কাজ শেষ করতে হবে। ইতিমধ্যেই টাটার মূল কাঠামো ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে ওই জমিতে যাতে চাষ শুরু করা যায় তার চেষ্টা হচ্ছে। আমরা কৃষির উপরই জোর দিচ্ছি। চাষিরা শিল্প নিয়ে কিছু বললে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের কথা বলব।’’

পূর্ণেন্দুবাবুর কথায়, ‘‘আমরা ঠিক করেছি, সিঙ্গুরের জমিতে আইআইটি খড়গপুরের কৃষি বিশেষজ্ঞ এবং কল্যাণী কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের নিয়ে গিয়ে জমি পরীক্ষা করানো হবে। তাঁদের পরামর্শ মতো চাষ করা হবে।’’

কৃষি দফতর ঠিক করেছে, পালং, নটে শাক লাগালে খুব তাড়াতাড়ি ফলন হয়। বীজ পোঁতার ২৬ দিনের মধ্যে শাক উৎপাদন সম্ভব। কোন চাষে চাষিদের বেশি লাভ হবে তাও বিজ্ঞানীরা পরামর্শ দেবেন বলে কৃষি দফতরের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন