Sisir Adhikari

শিশির অধিকারীর ‘অধীনস্থ’ সভাপতি তিনি, জেলার দায়িত্ব নিয়ে বললেন সৌমেন

১৮ জানুয়ারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নন্দীগ্রামের সভা সফল করতে শিশির অধিকারীর ‘সহযোগিতা’রও প্রয়োজন আছে বলে মনে করছেন সৌমেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২১ ১৬:০১
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগেই বর্ষীয়ান সাংসদ শিশির অধিকারীকে সরিয়ে তাঁকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি করা হয়েছে। দায়িত্ব নিয়ে নতুন সভাপতি সৌমেন মহাপাত্রের কাছে প্রথম চ্যালেঞ্জ ১৮ জানুয়ারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নন্দীগ্রামের সভা সফল করা। সেই সভা সফল করতে সদ্য পদচ্যুত সভাপতি শিশির অধিকারীর ‘সহযোগিতা’রও প্রয়োজন আছে বলে মনে করছেন সৌমেন। নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় কি শিশিরকে ডাকা হবে? উত্তরে আনন্দবাজার ডিজিটালকে সৌমেন বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘আমার শিশিরবাবুকে ডাকার প্রশ্ন নেই। তিনিই আমাকে ডাকবেন। শিশিরবাবু তো আমাদের চেয়ারম্যান। তাঁর অধীনস্থ সভাপতি আমি।’’ সৌমেন আরও বলছেন, ‘‘এতদিন তো তাঁর নেতৃত্বেই দল চলেছে। শিশিরবাবু এখন আমাদের চেয়ারম্যান। তাই তাঁর নির্দেশেই আমরা সব করব।’’ উল্লেখ্য, পুত্র শুভেন্দু অধিকারীর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগদানের আগে থেকেই দলীয় কর্মসূচি থেকে কার্যত ব্রাত্য করে রাখা হয়েছিল শিশিরকে। ‘নাম কা ওয়াস্তে’ কর্মসূচিতে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তাতে ‘আন্তরিকতা’র ঘাটতি ছিল বলে মনে করেছেন কাঁথির শান্তিকুঞ্জের বাড়ির অধিপতি।

Advertisement

পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের নতুন কোর কমিটি ঘোষণা করে যে শিশিরের ডানা ছাঁটা হয়েছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। সৌমেন মুখে শিশিরের অধীনে চলার কথা বললেও সংগঠন পরিচালনার ক্ষেত্রে যে তাঁকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হবে না, তা সম্যক বুঝতে পারছেন অধিকারীরা। কারণ, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রাজনীতিতে সৌমেন অধিকারী পরিবারের বিরোধী বলেই পরিচিত। গত ১৯ ডিসেম্বর শুভেন্দু বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পরদিনই তৃণমূল ভবনে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে তাঁর আসন বদল নিয়ে নাম না করে শুভেন্দুকে দায়ী করেছিলেন সৌমেন। বলেছিলেন, ‘‘কারও কারও আপত্তিতেই আমাকে তমলুক থেকে পিংলা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল।’’

শুভেন্দু দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করার সময় থেকেই তৃণমূল শীর্ষনেতৃত্বের নির্দেশে কাঁথির সাংসদকে বাদ দিয়েই সাংগঠনিক কাজকর্ম করছিলেন অখিল গিরি, জ্যোতির্ময় করেরা। শেষপর্যন্ত গত মঙ্গলবার দীঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে শিশিরকে সরানো হয়। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, তাঁর জায়গায় আনা হয় অখিলকে। তার পরে শিশিরকে সভাপতি পদ থেকে সরানো ছিল স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। শিশিরবাবুর পাশাপাশি তাঁর সাংসদ পুত্র দিব্যেন্দুকেও উপেক্ষার পথে হেঁটেছিলেন পূর্ব মেদিনীপুর তৃণমূলের নেতারা।

Advertisement

আরও পড়ুন: বেপাত্তা লালার নামে পোস্টার, সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের দিকে এগোচ্ছে সিবিআই

তবে এক্ষেত্রে কিছুটা ‘কৌশলী’ পদক্ষেপ করছেন নতুন সভাপতি। ‘দাদার অনুগামী’-রা যখন শুভেন্দুকে নিয়ে পৃথকভাবে কর্মসূচি নিতে শুরু করেছিলেন, তখন থেকেই তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দুকেও জেলার রাজনীতিতে ‘কোণঠাসা’ করার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছিল বলে অভিযোগ। কিন্তু তাঁর জমানায় তেমন হবে না বলেই দাবি করেছেন পিংলার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী সৌমেন। তাঁর কথায়, ‘‘দিব্যেন্দুবাবু তমলুক কেন্দ্রের মধ্যেই পড়ে নন্দীগ্রাম। তাঁর মতামত অবশ্যই তিনি দেবেন। এবং তিনিই সবটা করবেন। আমি তো সবে দায়িত্ব পেয়েছি। আর দিদি আসবেন ঠিক হয়েছে ১৫ দিন আগে। তাই এর আগে দিব্যেন্দুবাবু নিশ্চয়ই তাঁর দায়িত্ব পালন করেছেন। আমার মনে হয়, তিনি দলের সৈনিক। তাঁদেরই সভা, তাঁদেরই নেতৃত্বেই সব হবে। যেহেতু দিব্যেন্দুবাবু এলাকার সাংসদ, তাই দায়িত্ব তাঁরও।’’

আরও পড়ুন: গৃহহীনদের দায় নেবে প্রশাসন, বাগবাজারে বললেন মমতা

প্রসঙ্গত, এরই পাশাপাশি জেলা রাজনীতিতে একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা এবং জল্পনা চলছে। বৃহস্পতিবার নতুন কোর কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেই বৈঠকে ডাক পাননি শিশির-দিব্যেন্দু। যদিও প্রকাশ্যে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে নারাজ জেলা তৃণমূলের কোনও নেতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন