Radio

IIT: সাহায্যে আইআইটি, পড়ানোয় সৌরশক্তির রেডিয়ো

এক প্রান্তিক গ্রামে খড়্গপুর আইআইটির সহযোগিতায় সৌরশক্তি চালিত রেডিয়োর মাধ্যমে পড়ানো শুরু হল প্রাথমিকের পড়ুয়াদের।

Advertisement

দেবমাল্য বাগচী

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২১ ০৫:২১
Share:

পড়ুয়াদের বাড়িতে বসানো হয়েছে সৌরশক্তির রেডিয়ো। খড়্গপুর গ্রামীণের ভেটিয়া পঞ্চায়েতের ভুকভুকিশোল গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

করোনা কেড়েছে স্কুলজীবন। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের এখনও চলছে অনলাইন ক্লাস। কিন্তু প্রত্যন্ত এলাকার প্রান্তিক পরিবারে কোথায় সে সুযোগ! অধিকাংশের স্মার্টফোন নেই। যাদের আছে, সেখানে আবার ইন্টারনেট অমিল। এমনই এক প্রান্তিক গ্রামে খড়্গপুর আইআইটির সহযোগিতায় সৌরশক্তি চালিত রেডিয়োর মাধ্যমে পড়ানো শুরু হল প্রাথমিকের পড়ুয়াদের।

Advertisement

খড়্গপুর গ্রামীণের ভেটিয়া পঞ্চায়েতের ভুকভুকিশোল গ্রামে এই বন্দোবস্তের উদ্যোক্তা ‘অস্তিত্ব’ নামে ইন্দার একটি সামাজিক সংগঠন। এ ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত সাহায্য করছেন আইআইটির গবেষক পড়ুয়ারা। কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের অনুদানে চলা আইআইটির সৌরশক্তি প্রযুক্তি প্রকল্পের অধীনেই এই আয়োজন। গোড়ায় ৮ জন পড়ুয়ার উপরে সমীক্ষা চালানোর পরে প্রথম পর্যায়ে ভুকভুকিশোলে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির ২২ জন পড়ুয়াকে নিয়ে এই পঠনপাঠন চালু হয়েছে। প্রত্যেকের বাড়িতে বসানো হয়েছে সৌরশক্তি চালিত রেডিয়ো। গ্রামের মাঝামাঝি একটি ক্লাবঘরে রেডিয়ো স্টেশন গড়ে ৫০০ মিটার ব্যাসার্ধের ট্রান্সমিটার বসানো হয়েছে। ওই
২২ জন কতটা জানে, তা বুঝতে রবিবার একটি পরীক্ষাও নেওয়া হয়। এর পরে বাড়ি থেকে রেডিয়োর মাধ্যমে পড়াশোনা এগোবে। রেডিয়ো স্টেশনে শিক্ষক হিসাবে নিযুক্ত করা হয়েছে গ্রামেরই স্নাতক শিবু সরেন, দীপালি মান্ডি ও মাধ্যমিক উত্তীর্ণ অ্যাগনেস সরেনকে। তাঁরা রোজ ক্লাস নেবেন। আর সপ্তাহে এক দিন ক্লাস নেবেন সুপারভাইজ়ার শিক্ষিকা সঙ্ঘমিত্রা দে।

Advertisement

উদ্যোক্তা সংগঠনের সভাপতি, শিক্ষক প্রসেনজিৎ দে বলেন, “গত দেড়-দু’বছরে স্মার্টফোন, ইন্টারনেটের অভাবে প্রাথমিকের পড়ুয়াদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। তাই রেডিয়োকে বিকল্প মাধ্যম হিসাবে বেছেছিলাম। শিক্ষা দফতরকে জানিয়ে সাড়া পাইনি। তবে আইআইটি পুরোপুরি সাহায্য করায় সবটা সম্ভব হয়েছে।” এ দিনও আইআইটির কয়েক জন পড়ুয়া গ্রামে গিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে ইলেক্ট্রিক্যাল বিভাগের জুনিয়র রিসার্চ ফেলো করণ কাটারিয়া বলেন, “বিষয়টি আমাদের গবেষণার অঙ্গ। রেডিয়োয় যেহেতু একমুখী পাঠদান হবে, তাই ৬ সপ্তাহ পরে আবার পরীক্ষা নিয়ে দেখা হবে, ছেলেমেয়েরা কতটা শিখল।”

রেডিয়োয় পড়াশোনার নয়া ব্যবস্থায় উৎসাহী খুদে পড়ুয়া ও অভিভাবকেরাও। দিনমজুর সুপ্রিয়ান সরেন বলেন, “আমার ছেলে
প্রথম শ্রেণি ও মেয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। বড় মোবাইল নেই। তাই পড়াশোনা সে ভাবে হচ্ছিল না। জানতামই না, রেডিয়ো ওদের পড়ানোর কাজে আসবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন