ছাত্রভর্তি নিয়ে অনিয়ম-সহ নানা দুর্নীতি করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ, এই অভিযোগে সংগঠন ছাড়লেন নবদ্বীপ কলেজের পড়ুয়া কিছু টিএমসিপি সদস্য। শনিবার অধীর চৌধুরীর সভায় তাঁরা যোগ দিলেন ছাত্র পরিষদে। ছাত্র পরিষদের দাবি, ওই কলেজের ছাত্র সংসদের কয়েক জন পদাধিকারী-সহ ১৮ জন তাঁদের সংগঠনে যোগ দিয়েছেন। জেলা তৃণমূলের দাবি, ওই ছাত্রেরা টিএমসিপি-র সদস্য নন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্র প্রতিনিধির কথায়, “ছাত্রভর্তি নিয়ে কলেজে দুর্নীতি হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে মেধা তালিকার প্রথম দিকে থাকা ছাত্রছাত্রীদের ঘরে আটকে পরের দিকে নাম থাকা ছাত্রছাত্রীদের কাউন্সেলিং-এ ঢুকিয়ে ভর্তি করা হয়েছে।” দলত্যাগী আর এক প্রতিনিধি বলেন, “আমরা একবার জোর করে বন্ধ ঘরের দরজা খুলে দিয়েছিলাম। সে জন্য আমাদের মারধর করা হয়।” ছাত্রদের আক্ষেপ, শুধু নেতাদের ঘনিষ্ঠরাই এ ভাবে ভর্তি হয়নি। ২০-২৫ হাজার টাকা দিয়ে কম নম্বর-পাওয়া পড়ুয়ারাও ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের দাবি, “এ ভাবে ভর্তি হওয়া ছাত্রদের সংখ্যা প্রায় ৫০।” আরও অভিযোগ, নবদ্বীপ পুরসভার সদস্য এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার দফতরেই তালিকা তৈরি হত, কারা অনার্স পাবে। নবদ্বীপ পুরপ্রধান বিমান সাহা পুরসভার কোনও নেতার জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাঁর বক্তব্য, “অনেকে অনেক কথা বলে। সব কথার গুরুত্ব দিতে নেই।”
গত লোকসভা ভোটের পর কংগ্রেস যখন লোকমুখে ‘মামুর দল’ অর্থাৎ মালদহ-মুর্শিদাবাদের দলে পরিণত হয়েছে, তখন নবদ্বীপের মতো কট্টর তৃণমূল ঘাঁটিতে কিছু পড়ুয়া ছাত্র পরিষদে কেন? নবদ্বীপ শহর ছাত্র পরিষদের সভাপতি রবি দে-র দাবি, টিএমসিপি নবদ্বীপ কলেজে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে। অভিযোগ, ছাত্র পরিষদের সমর্থক ছাত্ররা টিএমসিপিতে যোগ দিলেও মারধর করা হচ্ছে। দলত্যাগী কয়েকজন ছাত্র বলেন, “মার যদি খেতেই হয়, ছাত্র পরিষদের সদস্য হয়েই খাব।” টিএমসিপি নদিয়া জেলা সভাপতি অয়ন দত্ত পড়ুয়াদের ছাত্র পরিষদে যোগ দেওয়ার ঘটনাই অস্বীকার করেছেন। তাঁর বক্তব্য, “কারও অবস্থা এত খারাপ হয়নি যে সে আমাদের দল ছেড়ে কংগ্রেসে যাবে। বরং কংগ্রেস থেকেই বিভিন্ন কলেজের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক ও প্রদেশ কংগ্রেসের কোর কমিটির এক সদস্য আমাদের দলে যোগ দিয়েছে।”
আগে শান্তিপুরের মাঝদিয়া কলেজে টাকা নিয়ে ছাত্রভর্তির অভিযোগে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর অশান্তি হয়েছে। এ বার একই অভিযোগে অশান্তির সম্ভাবনা নবদ্বীপের বিদ্যাসাগর কলেজে।