ছেলে ঢুকতে দেয় না, মরার চেষ্টা বৃদ্ধের

পূর্ব বর্ধমানের রায়নার সমসপুরের বছর সাতষট্টির আমির আলি মণ্ডল এ দিন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে বলেন, ‘‘এত বছর শিক্ষকতা করেছি। কিন্তু নিজের ছেলেকেই মানুষ করতে পারলাম না!’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

অবসরের পরে শহরে থাকার জন্য বাড়ি তৈরি করেছিলেন শিক্ষক। কিন্তু বছরখানেক ধরে তাঁকে সেখানে ঢুকতে দেন না ছেলে। শুক্রবার সেই বাড়িতে গেলে ছেলে সিঁড়ি থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন বলেও অভিযোগ। গ্রামের বাড়িতে ফিরে যান বৃদ্ধ। শনিবার তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করলেন পরিজনেরা।

Advertisement

পূর্ব বর্ধমানের রায়নার সমসপুরের বছর সাতষট্টির আমির আলি মণ্ডল এ দিন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে বলেন, ‘‘এত বছর শিক্ষকতা করেছি। কিন্তু নিজের ছেলেকেই মানুষ করতে পারলাম না!’’

ছেলে জুলফিকর আলির অবশ্য পাল্টা দাবি, ‘‘সম্পত্তির লোভে দুই বোন বাবাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছে। ধরা পড়ে গিয়ে এখন আমার ঘাড়ে দোষ চাপানো হচ্ছে।’’

Advertisement

রায়নার জোতসাদি হাইস্কুল থেকে ২০০৯ সালে অবসর নেন আমির আলি। তার পরেই বর্ধমানের খাগড়াগড়ে বাড়ি তৈরি করেন। পরিবার সূত্রে জানা যায়, জুলফিকর চাকরি সূত্রে বেঙ্গালুরুতে ছিলেন। ২০১৬ সালে মায়ের মৃত্যুর পরে তিনি চাকরি ছেড়ে বর্ধমানে ফিরে আসেন। অভিযোগ, তখন থেকে পাকাপাকি ভাবে তিনি খাগড়াগড়ের বাড়িটি দখল করেন। বাবা ও বিবাহিত দুই বোনকেও সেখানে ঢুকতে দেন না।

আমির আলির অভিযোগ, ‘‘ব্যাঙ্কের জয়েন্ট অ্যাকাউন্ট থেকে ছ’লক্ষ টাকাও সরিয়ে নিয়েছে ছেলে। সুরাহার জন্য অনেকের কাছে দরবার করেছি। ফল হয়নি।’’ শুক্রবার ছেলে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ায় মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন, দাবি তাঁর। রায়নায় শনিবার দুপুরে তাঁর ঘর বন্ধ দেখে সন্দেহ হয় ভাইপো ফকির মণ্ডলের। তিনি দরজা ভেঙে দেখেন, সিলিং থেকে গলায় দড়ি দিয়ে ছটফট করছেন বৃদ্ধ।

বৃদ্ধের দুই মেয়ে নাজিয়া জিলানি মণ্ডল, আমিনা মণ্ডলদের অভিযোগ, ‘‘আমরা ভাইকে ডেকে বিবাদ মেটানোর চেষ্টা করেছিলাম। উল্টে ও হুমকি দিত। আমরা ওর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করব।’’ জুলফিকরের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘গ্রামের সম্পত্তি দুই বোন বাবাকে দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছে। এখন বাবার সঙ্গে আমাকে দেখাও করতে দেওয়া হয় না।’’ পুলিশ জানায়, বৃদ্ধের সঙ্গে কথা বলে তদন্ত শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন