এই সেলফিই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছে ছেলে। নিজস্ব চিত্র।
সেলফি বা নিজস্বী এখন আধুনিক জীবনের অঙ্গ। খোদ সরকার পর্যন্ত অনেক জায়গায় সেলফি পয়েন্ট তৈরি করে দিচ্ছে। সেলফি তুলতে গিয়ে দুর্ঘটনার খবর আকছার শোনা যায়। এমনকি, কোনও ঘটনা-দুর্ঘটনায় সেলফি তুলতে মগ্ন এমন ছবিও দেখা যায়। তবে কেউ শ্মশানে শোয়ানো মৃত মায়ের সঙ্গে সেলফি তুলছেন এমন নজির খুব একটা নেই।
সেই ঘটনাই ঘটিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের বাসিন্দা গণেশ দাস। মৃত মায়ের সঙ্গে তোলা সেই নিজস্বী তিনি আবার স্যোশ্যাল মিডিয়াতেও পোস্ট করেছেন। আর তার পর থেকেই সেই ছবি ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়াতে। সেই ছবি ঘিরে শুরু হয়ে গিয়েছে বিতর্ক।
দাসপুরের বাসিন্দা গণেশ দাস সোনার গয়না তৈরির কাজ করেন। কাজের সূত্রে তিনি থাকেন ভিন রাজ্যে। বুধবার রাতে তিনি মায়ের মৃত্যু সংবাদ পান। গণেশের মা গীতাকে সাপে কামড়ায়।কলকাতায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। মায়ের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে তড়িঘড়ি বাড়ি ফেরেন গণেশ। ততক্ষণে বাকি দুই ভাই এবং বোনেরা মায়ের দেহ নিয়ে পৌঁছে গিয়েছেন শ্মশানে। বাড়ি ফিরেই সোজা শ্মশানে ছোটেন গণেশ। সেখানে তখনও গীতার দেহ দাহ করবার জন্য বাঁশের খাটিয়াতে শায়িত। সেই দেহের সঙ্গেই গণেশ সেলফি তোলেন।
আরও পড়ুন: ‘ব্যক্তিগত’ ছবি-ভিডিয়ো দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল ব্যবসায়ীকে, ধৃত মা-ছেলে
মায়ের দেহ দাহ হয়ে যাওয়ার পর তা পোস্টও করেন সামাজিক মাধ্যমে। অনেকেই তাঁর এই পোস্ট দেখে সমালোচনা করেছেন। যদিও গণেশ সোশ্যাল মিডিয়াতেই সেই সব সমালোচনার উত্তর দিয়ে জানিয়েছেন, তিনি মাকে খুব ভালবাসতেন। সেই ভালবাসার কারণেই তিনি মার সঙ্গে ওই ছবি তুলেছেন স্মৃতি হিসাবে।
আরও পড়ুন: ‘মেয়ে হল কেন? আরও পাঁচ লক্ষ টাকা লাগবে!’
মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,“ এটা একটা প্রদর্শনমুখীতা। একটা ভার্চুয়াল সমাজে প্রদর্শনের চেষ্টা। সেলফি মানেই সঙ্গে সঙ্গে সেই ছবি পোস্ট করতে হবে। সে উৎসব, বেদনা দুঃখ সব কিছুই। এখানে ওই ব্যক্তিকে দোষারোপ করে লাভ নেই। ব্যক্তির আচরণগত পরিবর্তনের সময় এসেছে।”
(বাংলার রাজনীতি, বাংলার শিক্ষা, বাংলার অর্থনীতি, বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার স্বাস্থ্য, বাংলার আবহাওয়া -পশ্চিমবঙ্গের সব টাটকা খবর আমাদের রাজ্য বিভাগে।)