—প্রতীকী চিত্র।
বাংলাদেশ থেকে বীরভূমের বাসিন্দা অন্তঃসত্ত্বা পরিযায়ী শ্রমিক সোনালি বিবি-সহ ছ’জনকে ফেরাতে কেন্দ্রীয় সরকারকে চার সপ্তাহের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। এক মাস হয়ে গেলেও, নরেন্দ্র মোদী সরকার হাই কোর্টের নির্দেশ পালন করেনি। এ বার হাই কোর্টের সেই রায়ের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল। হাই কোর্টের রায় মানা হয়নি দাবি করে আদালত অবমাননার মামলাও করতে চায় সোনালি বিবিদের পরিবার।
গত জুন মাসে দিল্লিতে কর্মরত বীরভূমের পাইকর থানা এলাকার বাসিন্দা সোনালি ও সুইটি বিবি-সহ ছ’জনকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। অসম সীমান্ত দিয়ে তাঁদের বাংলাদেশে ‘পুশ ব্যাক’ করা হয় বলে অভিযোগ। ২০ অগস্ট বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর মডেল থানার পুলিশ তাঁদের অনুপ্রবেশকারী হিসাবে গ্রেফতার করে। এখন তাঁরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সংশোধনাগারে রয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার প্রক্রিয়া শুরুর মুখে।
সোনালিদের বাংলাদেশে পাঠানোর বিরুদ্ধে মামলা করেন সোনালির বাবা ভদু শেখ। ২৬ সেপ্টেম্বর কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দেয়, সোনালি-সহ ছ’জনকেই চার সপ্তাহের মধ্যে ভারতে ফেরাতে হবে। সে সময়সীমা শেষ হয়েছে ২৪ অক্টোবর। তবে তার আগেই, ২২ অক্টোবর ওই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্ট ছুটি ছিল। এখনও ওই মামলার শুনানির দিন ঠিক হয়নি।
কলকাতা হাই কোর্টে সোনালিদের পরিবারের আইনজীবী রঘুনাথ চক্রবর্তী জানান, হাই কোর্টের রায়ের পরেই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন হতে পারে অনুমান করে, মামলাকারী ভদু শেখ সুপ্রিম কোর্টে ক্যাভিয়েট দাখিল করে রেখেছেন। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেও এই সংক্রান্ত দু’টি মামলায় সুপ্রিম কোর্টে ক্যাভিয়েট করা হয়েছে। রঘুনাথ জানান, একতরফা বক্তব্য শুনে আদালত যাতে কোনও আদেশ বা স্থগিতাদেশ না দেয়, সে জন্যই আইনি ব্যবস্থা হিসেবে ক্যাভিয়েট করা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘মামলা তালিকাভুক্ত হলে দু’পক্ষের উপস্থিতিতেই আদালত সিদ্ধান্ত নেবে।’’
সুপ্রিম কোর্টে আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতির সঙ্গেই, কলকাতা হাই কোর্টেও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করতে চান সোনালিদের পরিজন। সূত্রের খবর, ভদু শেখদের তরফে সোমবারই হাই কোর্টে আদালতঅবমাননার মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। রঘুনাথ বলেন, ‘‘কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টে গেলেও, আমরা হয়তো হাই কোর্টে আদালত অবমাননার মামলা করে রাখব।’’
সোনালিদের ফিরিয়ে আনার সঙ্গে সঙ্গেই, বাংলাদেশি সন্দেহে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে থাকা দিল্লি পুলিশের ওই ছ’জনকে আটক করা ও বিতাড়নের সিদ্ধান্তও খারিজ করেছিল হাই কোর্ট। অন্য দিকে, বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ আদালতও সোনালিদের ভারতীয় উল্লেখ করে, তাঁদের দেশে ফেরাতে ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে বলেছে। কিন্তু নির্ধারিত সময়সীমা অতিক্রান্ত হলেও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কোনও উদ্যোগ সামনে আসেনি। এর মধ্যেই, কেন্দ্রের তরফে রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার খবর সামনে এল।
প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর
সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ
সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে