লোকসভা নির্বাচনের সময়ে গোটা রাজ্যকে ‘অতি সংবেদনশীল’ ঘোষণা করার জন্য আজ নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানাল বিজেপি।—ফাইল চিত্র।
ভোট দেওয়ার গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে এক জন নাগরিকও যাতে বঞ্চিত না-হন, সেটা নিশ্চিত করাই জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত লক্ষ্য। তাদের স্লোগান ‘সুগম নির্বাচন’। এটাই এ বার পাখির চোখ কমিশনের। সব দিক থেকে সর্ব অর্থেই ভোটে সুগমতা সুনিশ্চিত করতে চাইছে তারা।
সুগমতার সেই সামগ্রিক উদ্দেশ্যের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে বিশেষ ভাবে প্রতিবন্ধীদের জন্য কিছু ব্যবস্থা করছে তারা। ভোটের দিন প্রতিবন্ধীরা যাতে নির্ঝঞ্ঝাটে বুথে পৌঁছতে পারেন, তার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করতে সব রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার (সিইও)-এর দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই নির্দেশ যাতে যথাযথ ভাবে পালিত হয়, তা সুনিশ্চিত করার জন্য প্রতিটি জেলায় পরিবহণ নোডাল অফিসার নিয়োগ করতে বলা হয়েছে।
ভোটকেন্দ্রের অব্যবস্থায় প্রতিবন্ধী বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের বুথে নিয়ে যেতে আত্মীয়স্বজন অনেক ক্ষেত্রে অনীহা প্রকাশ করেন। তাই অনেক সময়েই প্রতিবন্ধীদের ভোট দেওয়াই হয় না। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ভোটারেরা অনেক ক্ষেত্রে স্পর্শকাতর বা অতি স্পর্শকাতর বুথ এড়িয়ে যান। এই সব ক্ষেত্রে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে তাঁদের আসা-যাওয়ার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করার দাবি তুলেছিলেন ওই শ্রেণির ভোটারদের একাংশ। এ বার কমিশন সেই দাবিকেই মান্যতা দিল বলে সংশ্লিষ্ট মহলের অভিমত। নভেম্বর-ডিসেম্বরে ছত্তীসশগঢ়, মধ্যপ্রদেশ, মিজোরাম, রাজস্থান এবং তেলঙ্গানায় বিধানসভা নির্বাচন হবে। লোকসভা নির্বাচন রয়েছে ২০১৯ সালে। সব ক্ষেত্রেই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ভোটারদের জন্য এই ব্যবস্থা করবে সিইও-র দফতর।
ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়া চলছে। সে-ক্ষেত্রে বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য রাজ্য, জেলা, বিধানসভা স্তরেও সমন্বয়কারী নিয়োগের জন্য নির্দেশ দিয়েছিল কমিশন। সব রাজ্যেই সেই নির্দেশ রূপায়ণের তোড়জোড় চলছে।
রাজ্যের ক্ষেত্রে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ভাবী ভোটারদের উৎসাহিত করার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসন। কয়েক দিন আগে দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরে সুচেতনা আবাসিক প্রতিবন্ধী বিদ্যাপীঠে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন নতুন ভোটারদের নিয়ে দৌড়, হাড়িভাঙা, ঝুড়িতে বল ছোড়া-সহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে তারা। দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক মহাদ্যুতি অধিকারী বলেন, ‘‘এই ধরনের প্রতিযোগিতা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ভোটারদের আরও
বেশি উৎসাহিত করবে। নির্বাচনী ক্ষেত্রে এই ধরনের প্রতিযোগিতা দেশের মধ্যে সম্ভবত এই প্রথম আয়োজিত হল।’’