পুজোয় রেশনে চিনি, সাদা তেল, ময়দা

পুজোর সময় রাজ্যের রেশন দোকানগুলি থেকে চাল, গম বা কেরোসিনের পাশাপাশি মিলবে ময়দা, চিনি ও সাদা তেলও। বুধবার দুপুরে শিলিগুড়িতে পুজো স্পেশাল এই প্যাকেজের ঘোষণা করেছেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৫ ০২:৪০
Share:

শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরে প্রশাসনিক বৈঠকে খাদ্যমন্ত্রী। বুধবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

পুজোর সময় রাজ্যের রেশন দোকানগুলি থেকে চাল, গম বা কেরোসিনের পাশাপাশি মিলবে ময়দা, চিনি ও সাদা তেলও। বুধবার দুপুরে শিলিগুড়িতে পুজো স্পেশাল এই প্যাকেজের ঘোষণা করেছেন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। মন্ত্রীর দাবি, আগামী ১৮ অক্টোবর, পঞ্চমীর দিন থেকে ২১ অক্টোবর, অষ্টমীর দিন বিকাল অবধি মিলবে ওই পুজো স্পেশাল। শিলিগুড়িতে দফতরের আধিকারিক, রেশন ডিলার-ডিস্ট্রিবিউটর, রাইস মিল, ময়দা মিলের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর মন্ত্রী ওই ঘোষণা করেন। খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, সকাল ৭টা থেকে রেশন দোকানগুলি ওই চারদিন খুলে রেখে পুজো স্পেশাল বিলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ময়দা, সাদা তেল এবং চিনি-প্রতি পরিবার পিছু ১ কিলোগ্রাম করে পাওয়া যাবে। এই ক্ষেত্রে এপিএল বা বিপিএলের কোনও ব্যাপার নেই।

Advertisement

খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, ‘‘পুজোর দিনগুলি আমাদের সবার কাছে বিশেষ দিন। তাই বাসিন্দাদের জন্য আমরা কিছু ব্যবস্থা করেছি। লুচি, পরোটা ভাজার সাদা তেল বা ময়দা তো থাকছে। পাশাপাশি, চিনিও দেওয়া হবে। দামও নাগালের মধ্যে থাকবে। আশা করি, বাসিন্দারা উপকৃত হবেন।’’

আগামী ১৬ অক্টোবর বিশ্ব খাদ্য দিবসের অনুষ্ঠান কলকাতাতে হলেও ডুয়ার্সের টোটোপাড়াতেও একটি অনুষ্ঠান হবে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন। এদিনের বৈঠকের পর মন্ত্রী ডুয়ার্সের মাদারিহাটে চলে যান। সেখান থেকেই ১৬ তারিখ তিনি ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। মন্ত্রী জানান, এবার আমাদের বিশ্ব খাদ্য দিবসের থিম-‘সকলের জন্য খাদ্য’। বিভিন্ন জনজাতি, পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠী, যৌন কর্মী, প্রতিবন্ধী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, অন্ধ, কুষ্ঠ আক্রান্ত, এইচআইভি পজিটিভ-সহ চিহ্নিত করা সকলের জন্য ২ টাকা কেজি চাল দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে রাজ্যের অপুষ্টিতে আক্রান্ত মা ও শিশুকে ৯ কেজির একটি পুষ্টি প্যাকেট দেওয়া হচ্ছে। তাতে ডাল, ছোলা, আটা, চাল এবং সোয়াবিন থাকছে। এ ছাড়া বন্ধ এবং খোলা চা বাগানের ৭ লক্ষ ৪৪ লক্ষ বাসিন্দাকে খাদ্য সুরক্ষার আওতায় আনা হচ্ছে।

Advertisement

এদিন খাদ্য সুরক্ষা আইন নিয়ে বলতে গিয়ে মন্ত্রী জানিয়েছেন, আমরা রাজ্যের সবাইকে রেশন ব্যবস্থার মধ্যে রাখতে চাই। অনেকে রেশন কার্ড তৈরি করে একটি পরিচয়পত্রের জন্য। কিন্তু জীবনে কোনওদিনই রেশন তোলেন না। বাম আমালের মত তাঁদের রেশন কার্ড বাতিলের হওয়ার কোনও বিষয় নেই। গত ৩১ অগস্ট অবধি খাদ্য সুরক্ষার জন্য নাম নথিভুক্তের দিন বাড়ানো হয়েছিল। উত্তরবঙ্গের সাত জেলাতেই কয়েক লক্ষ নতুন আবেদন জমা পড়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর সঙ্গেই ডিজিটাল রেশন কার্ডের কাছ চলছে। সাত জেলার তৈরি হয়ে গিয়েছে। আর কয়েকদিনের মধ্যে আরও পাঁচ জেলার কার্ড তৈরি হচ্ছে। তিনটি সংস্থা কাজ করছে। ৩১ ডিসেম্বর সময়সীমা রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি।

মন্ত্রী জানান, খাদ্য সুরক্ষার আওতায় ১০ হাজার টাকার নিচে যাঁদের রোজগার তাঁদের জন্য সুবজ ফর্ম তৈরি হয়েছে। যাঁরা তার উপরে রয়েছেন এ রাজ্যেই তাদের জন্য সাদা ফর্ম করা হয়েছে। আমরা সবাইকে রেশন ব্যবস্থার মধ্যে রাখব। এই সাদা ফর্মের বাসিন্দাদের সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি ২২ লক্ষ মত।

ইতিমধ্যে উত্তরবঙ্গের ছয়টি বন্ধ চা বাগানে মহিলাদের স্বর্নিভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে রেশন ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। সুরেন্দ্রনগর, রেডব্যাঙ্ক ১ এবং ২, ঢেকলাপাড়া, দলমোড়, বান্দাপানিতে ঘর তৈরি হয়ে গিয়েছে। সাতদিন দোকানগুলি খোলা থাকবে। আরও ২৩টি ওই ধরণের রেশন দোকান বাগানে বাগানে হচ্ছে। এতে বাগানের রেশন সমস্যা অনেকটাই মিটবে। মন্ত্রীর কথায়, ‘‘বাম সরকার বাগান ম্যানেজারদের রেশনের দায়িত্বভার দিয়েছিল। এতে অনেক বাগান মাসের মালপত্রও তোলে না। ২৬ টাকার চাল ৯টাকায়, ৯ টাকার গম ৫.৪৫ টাকা দিলেও নিচ্ছে না। তাই আমরা আলাদাভাবে রেশন ব্যবস্থা গড়ে তুলছি।’’

এদিন মন্ত্রী বৈঠকের আগে শিলিগুড়ির বাগরাকোটের দফতরের গুদামে যান। সেখানকার ৪২টি নতুন গুদামঘর, গেট, ওজন মেশিন, দেওয়াল কাজের খতিয়ে দেখেন। মন্ত্রী জানান, খাদ্য সুরক্ষার শিলিগুড়ি এবং পাহাড়ের মালপত্র এবার থেকে পুরোটাই এই গুদামে থাকবে। অন্য কোনও জায়গা থেকে আসবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন