Pathashree Abhijaan

কেন্দ্রের টাকায় কি রাজ্যে শুরু ‘পথশ্রী অভিযান’

সব মিলিয়ে ‘পথশ্রী অভিযান’ প্রকল্পে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করার কথা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২০ ০৪:২৩
Share:

আগের প্রকল্পে মুখ্যমন্ত্রীর নাম। (ডান দিকে) রবিবার নন্দীগ্রামে রাজারামচকে পথবাতির উদ্বোধন প্রকল্পে নাম নেই মুখ্যমন্ত্রীর। নিজস্ব চিত্র

রাজ্যের ১২ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা সারানো বা নতুন করে তৈরি করতে ‘পথশ্রী অভিযান’ নামে প্রকল্প শুরু হয়েছে। কিন্তু সেই প্রকল্পের জন্য অর্থ দফতর টাকা বরাদ্দ করেনি। উল্টে দিন কয়েক আগেই নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছে, রাজ্যে উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ ছাঁটাই অব্যাহত থাকবে, ব্যয়সঙ্কোচ কায়েম থাকবে বছরভর। ফলে প্রশাসনের অন্দরে প্রশ্ন, তা হলে ‘পথশ্রী অভিযান’-এর টাকা আসছে কোথা থেকে?

Advertisement

পঞ্চায়েত কর্তাদের একাংশের মতে, প্রতি কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা সারাই করতে খরচ গড়ে ১০ লক্ষ টাকা। ১২ হাজার কিমি রাস্তা সারাতে হলে ১২০০ কোটি টাকা লাগবে। আর গ্রামের ভিতরে কংক্রিটের রাস্তা তৈরি করতে হলে খরচ কিমি-পিছু ৩৫ লক্ষ টাকা। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় ৫ মিটার চওড়া রাস্তার জন্য খরচ হয় প্রতি কিমিতে ৮০ লক্ষ টাকা। ফলে সব মিলিয়ে ‘পথশ্রী অভিযান’ প্রকল্পে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করার কথা।

নবান্ন সূত্রের খবর, ‘পথশ্রী অভিযান’ প্রকল্প বিজ্ঞাপনে ‘রাজ্য সরকারি’ হলেও তার টাকা সবটাই আসছে কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে। গ্রামীণ উন্নয়ন পরিকাঠামো প্রকল্প, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা ছাড়াও ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পকেও ব্যবহার করা হচ্ছে রাস্তা সারানোর কাজে। কিন্তু তাতেও যে টাকার সংস্থান হয়েছে, তা দিয়ে ১২ হাজার কিলোমিটার রাস্তা কী ভাবে সারানো হবে বা নতুন করে তৈরি করা হবে, তার কোনও বিস্তারিত হিসেব দেয়নি পঞ্চায়েত দফতর।

Advertisement

আরও পড়ুন: বাজি বিক্রি নয়, সিদ্ধান্তে কালিকাপুর বাজিবাজার​

আরও পড়ুন: এ বার যাত্রী প্রত্যাখ্যানের রোগ বাইক ট্যাক্সিতেও

অর্থ দফতর জানাচ্ছে, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের ৩৪ কোটি টাকা জেলা পরিষদগুলিকে বরাদ্দ করা হয়েছে। এ ছাড়া, ২০২০-২১ অর্থবর্ষে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ৩৩৩টি ব্লকের জন্য ২৩০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পেও কিছু টাকা দেওয়া হবে। বাকি টাকা ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল থেকে খরচ করা হবে। তবে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকেই যে রাস্তা সারানোর খরচ বের করা হচ্ছে তা মেনে নিয়ে অর্থ কর্তারা জানান, ‘পথশ্রী অভিযান’-এর জন্য কোনও ‘হেড অব অ্যাকাউন্টস’ তৈরি হয়নি। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার সঙ্গে যুক্ত কর্তাদের বক্তব্য, সরকার ঘোষিত ১২ হাজার কিমির মধ্যে ৭০০-৮০০ কিমি রাস্তা এই যোজনার মধ্যে রয়েছে। বাকি রাস্তা গ্রামের পাড়ার রাস্তা। ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি চলার সময় সেই সব রাস্তা সারানোর দাবি উঠেছিল। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের এক অফিসার সেই তালিকা পঞ্চায়েত দফতরে পাঠিয়ে রাস্তা সারাতে বলেছেন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কথায়,‘‘এই সরকার কেন্দ্রের টাকায় রাস্তা সারিয়ে নিজেদের বলে চালাচ্ছে। তার পরেও ১২ হাজার কিমি রাস্তা সারানোর দাবি করছে। কেন্দ্রীয় তহবিল থেকে রাজ্যের ঘরে এত টাকা আসেনি যে, ১২ হাজার কিমি রাস্তা সারানো বা তৈরি হবে।’’

পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘দিলীপবাবু কবে সড়ক ইঞ্জিনিয়ার হলেন? রাজ্য সরকারের রাস্তা তৈরির সাফল্য মোদী সরকারই মেনে নিয়েছে। ১২ হাজার কিমি রাস্তা সারানো হবে, টাকাও জোগাড় হবে। বিজেপি-কে মাথা ঘামাতে হবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement