Visva Bharati

বিশ্বভারতীর দেওয়া সাইনবোর্ডে বিতর্ক

রবীন্দ্রনাথ প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্তৃপক্ষের লাগানো সাইনবোর্ডে ভুল বাংলা বানান প্রতিষ্ঠানের সুনামের পরিপন্থী।

Advertisement

সৌরভ চক্রবর্তী

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২১ ০৩:০০
Share:

বিশ্বভারতীর দেওয়া এই বোর্ডগুলি ঘিরেই চর্চা চলছে সমাজমাধ্যমে। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

এ বার সাইনবোর্ড বিতর্কে বিশ্বভারতী। বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, রতনপল্লির নবনির্মিত মার্কেট এবং মৃণালিনী আনন্দ পাঠশালার সামনে কিছুদিন আগেই তিনটি নতুন সাইনবোর্ড লাগিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

এর মধ্যে গ্রন্থাগার ও রতনপল্লির সাইনবোর্ডে বানান বিভ্রাট এবং মৃণালিনী আনন্দ পাঠশালার সামনের সাইনবোর্ডে হিন্দি আগ্রাসনের অভিযোগ তুলে সমাজমাধ্যমে সরব হয়েছেন বিশ্বভারতীর পড়ুয়া ও প্রাক্তনীদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, বিশ্বভারতীর বর্তমান প্রশাসন বানানের বিষয়ে একেবারেই যত্নশীল নয়। রবীন্দ্রনাথ প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্তৃপক্ষের লাগানো সাইনবোর্ডে ভুল বাংলা বানান প্রতিষ্ঠানের সুনামের পরিপন্থী বলেই তাঁদের দাবি।

মৃণালিনী আনন্দ পাঠশালার সামনে সম্প্রতি একটি নতুন সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে, যেখানে বাংলা, হিন্দি ও ইংরেজি তিনটি ভাষাতেই জায়গাটির পরিচয় দেওয়া হয়েছে। তবে শুধুমাত্র হিন্দি ভাষাতেই মৃণালিনী আনন্দ পাঠশালার নামোল্লেখ আছে। অন্য দুই ভাষায় তা নেই।

Advertisement

এই বোর্ডের ছবি ছড়িয়ে পড়তেই সমাজমাধ্যমে প্রশ্ন উঠেছে তা কি ভুল না ইচ্ছাকৃত? এক ব্যক্তির মন্তব্য, “এই ভুল কি অনিচ্ছাকৃত, নাকি কবিগুরুর আপন দেশেই বাংলা ভাষাকে কোণঠাসা করার সুপরিকল্পিত চক্রান্ত? সময়টা কিন্তু ভাল নয়।’’ বিশ্বভারতীর অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র ফাল্গুনী পানের অভিযোগ, “ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তের আঞ্চলিক সংস্কৃতির উপর হিন্দি ভাষা এবং হিন্দুত্ববাদী সংস্কৃতির যা আগ্রাসন চলছে তার প্রভাবে বিশ্বভারতীর বিভিন্ন সাইনবোর্ডে শুধু হিন্দি ভাষার ব্যবহার দেখা যাচ্ছে।’’

অন্য দিকে, গত ২০ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিশ্বভারতী সফরের দিন সেদিনই কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনের রাস্তাটির নামকরণ করা হয় ‘বিবেকানন্দ সরণি’। কিন্তু কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে যে সাইনবোর্ডটি লাগানো হয়েছে, সেখানে একটি বাংলা বানান নিয়ে আপত্তি তুলছেন অনেকেই। বোর্ডে লেখা রয়েছে, “বিবেকানন্দ সরণি উদঘাটিত হোল”।

বাংলা ভাষা নিয়ে যাঁরা চর্চা করেন তাঁদের অনেকেই দাবি করছেন, যে শব্দটি বোর্ডে ব্যবহৃত হয়েছে, তা সঠিক বানান নয়। সাধারনত এক্ষেত্রে ‘হল’ বানানটিই সর্বাধিক প্রচলিত। তবে বুদ্ধদেব বসু ব্যবহার করতেন 'হ'লো', এই বানানটি। কেউ কেউ 'হলো' বানানও ব্যবহার করেছেন, তবে বোর্ডে ব্যবহৃত বানানটির এই অর্থে কোনও ব্যবহার নেই বলেই সমাজমাধ্যমে মত দিয়েছেন অনেকে।

'উদঘাটিত' শব্দের ব্যবহার নিয়েও আপত্তি জানিয়েছেন অনেকেই। তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, “ওই রাস্তাটি আগে থেকেই তৈরি অবস্থাতেই ছিল। সাধারণ মানুষ ব্যবহারও করতেন। ৪ পৌষ শুধুমাত্র রাস্তাটির নামকরণ করা হয়েছে। এই ঘটনাকে কী সরণির উদঘাটন বলা যায়?” একই আপত্তি রতনপল্লিতে নবনির্মিত বাজার 'ভারততীর্থ'-এর সামনে লাগানো সাইনবোর্ড নিয়েও। তবে বিশ্বভারতীর তরফে এই বিষয়ে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন