লেডি ডাফরিন হাসপাতালের কর্তব্যরত এক নার্স তাকে ভুল ইঞ্জেকশন দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। তার জেরে মহাসঙ্কটে পড়ে যায় সুস্থ-সবল নবজাতক। তাকে বাঁচানোর জন্য ভর্তি করানো হয়েছিল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিটে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে শুক্রবার জানানো হয়েছে, ন’দিন বয়সি ওই শিশুকন্যার শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি হয়েছে। এ দিন সে কিছুটা মায়ের দুধ খেয়েছে। কিন্তু বিপদ এখনও কাটেনি।
এই ঘটনার তদন্তে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে লেডি ডাফরিনের সুপার নীলাঞ্জনা সেন এবং ডেপুটি নার্সিং সুপারকে নিয়ে। সেই কমিটি এ দিন স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথীর কাছে রিপোর্ট পেশ করেছে। স্বাস্থ্য দফতরের খবর, ডাফরিনের চিকিৎসকেরাই সরাসরি লিখিত ভাবে ভুল ইঞ্জেকশন দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিকর্তা বৃহস্পতিবারেই মন্তব্য করেছিলেন, এ ভাবে ভুল ইঞ্জেকশন দেওয়াটা অমার্জনীয় অপরাধ। এ ক্ষেত্রে অভিযুক্তের শাস্তি নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের কারও কোনও সংশয় নেই। বিশ্বরঞ্জনবাবু জানান, রিপোর্ট এসেছে। কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা ঠিক করা হবে আগামী সোমবার। ‘‘বাচ্চাটিকে দেখতে গিয়েছিলাম। আগের থেকে কিছুটা ভাল আছে সে,’’ বলেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা।
ঘুটিয়ারি শরিফের শ্রীনগর গাজিপাড়ার বাসিন্দা জামসউদ্দিন জমাদারের স্ত্রী মনরুদা সর্দার বিবির কন্যাসন্তান ভূমিষ্ঠ হয় ৩০ অগস্ট রাত ৩টে ৪০ মিনিট নাগাদ। ইংরেজি হিসেবে ৩১ অগস্ট। ৭ সেপ্টেম্বর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে শিশুটির যখন বাড়ি যাওয়ার কথা, ঠিক তার আগে তার কাঁচা নাড়ি থেকে রক্ত পড়া আটকাতে ভিটামিন-কে ইঞ্জেকশন দিতে বলেন ডাক্তার। অভিযোগ, ওয়ার্ডের এক নার্স ইঞ্জেকশন দেওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে শিশুটির শরীর শক্ত হয়ে যায়। নড়াচড়া বন্ধ হয়ে স্থির হয়ে যায় চোখের দৃষ্টি। ধরা পড়ে, ভিটামিন-কে নয়, ভুল করে তাকে দেওয়া হয়েছে ব্যথা কমানোর অতি কড়া এমন এক ইঞ্জেকশন, যা সদ্যপ্রসূতিদের দেওয়া হয়ে থাকে। প্রাপ্তবয়স্কদের ব্যথাহর সেই ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরেই শিশুটির কিডনি, ফুসফুসের সঙ্গে সঙ্গে স্নায়ুতন্ত্রের ক্রিয়া ব্যাহত হতে থাকে। তবে শুক্রবারের খবর, তার অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল।