OBC Certificate Case

ওবিসি মামলা নিয়ে রাজ্যের দ্রুত শুনানির আর্জি মানলেন না প্রধান বিচারপতি, এক মাস পরেই মামলা উঠবে সুপ্রিম কোর্টে

ওবিসি শংসাপত্রের বিজ্ঞপ্তি সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল রাজ্য সরকার। রাজ্যের তরফে দ্রুত শুনানির আর্জি জানানো হয়েছিল। সেই আর্জি শুনলেন না প্রধান বিচারপতি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২৫ ১১:০৯
Share:

— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) শংসাপত্রের বিজ্ঞপ্তি সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল রাজ্য সরকার। রাজ্যের তরফে দ্রুত শুনানির আবেদন জানানো হয়েছিল। সেই আর্জি শুনলেন না প্রধান বিচারপতি বিআর গবই। এক মাস পর নির্ধারিত দিনেই ওই মামলার শুনানি হবে বলে জানানো হয়েছে।

Advertisement

সোমবার সুপ্রিম কোর্টে ওবিসি মামলার শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও সময়ের অভাবে তা হয়নি। পরে জানা যায়, শুনানি এক মাস পিছিয়ে গিয়েছে। এর পরেই ওবিসি জট নিয়ে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের আইনজীবী জানান, ওবিসি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি নিয়ে সম্প্রতি একাধিক জটিলতা তৈরি হয়েছে। একের পর এক নির্দেশ দিচ্ছে কলকাতা হাই কোর্ট। এর জেরে দ্রুত এই মামলার শুনানি করা হোক। রাজ্যের আইনজীবীর আর্জি ছিল, আগামী বৃহস্পতিবার অথবা সোমবার মামলার শুনানি করা হোক। কিন্তু সেই আর্জি শোনেননি প্রধান বিচারপতি। তিনি জানিয়েছেন, ওই মামলা তালিকা থেকে বাদ যাবে না। নতুন করে তালিকাও তৈরি করা হবে না। অর্থাৎ, নির্দিষ্ট দিনেই ওই মামলা শুনানির জন্য উঠবে। সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে খবর, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ওবিসি মামলার শুনানি হতে পারে।

গত ২৮ জুলাই ওবিসি শংসাপত্রের বিজ্ঞপ্তি সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। হাই কোর্টের ওই রায় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল শীর্ষ আদালতে। সোমবার সেই মামলার শুনানি এক মাস পিছিয়ে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। উল্লেখ্য, ওবিসি জটের জেরে রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের ফলপ্রকাশও এত দিন ধরে আটকে রয়েছে। অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ। গত বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দের বেঞ্চ জয়েন্টের মেধাতালিকা বাতিল করে নতুন মেধাতালিকা তৈরির নির্দেশ দেন। আদালত জানায়, নতুন ওবিসি তালিকা মেনে মেধাতালিকা প্রকাশ করা যাবে না। পুরনো বিধি মেনে, অর্থাৎ ২০১০ সালের আগের ৬৬টি ওবিসি সম্প্রদায়ের তালিকার ভিত্তিতেই ১৫ দিনের মধ্যে নতুন মেধাতালিকা প্রকাশ করতে হবে। তাতে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) পড়ুয়াদের জন্য পূর্বের মতো ৭ শতাংশ সংরক্ষণই বরাদ্দ থাকবে। এর পরেই হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য। এখন সুপ্রিম কোর্টে শুনানি পিছিয়ে যাওয়ায় জয়েন্ট এন্ট্রান্স নিয়ে বিচারপতি কৌশিক চন্দের নির্দেশই আপাতত বহাল থাকল।

Advertisement

২০১০ সালের আগে পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে মোট ৬৬টি জনগোষ্ঠীকে ওবিসি বলে ধরা হত। ২০১০ সালে তৎকালীন বাম সরকারের আমলে আরও ৪২টি এবং ২০১২ সালে তৃণমূল সরকারের আমলে ৩৫টি জনগোষ্ঠীকে নতুন করে ‘ওবিসি’ বলে চিহ্নিত করা হয়। তা নিয়ে বিতর্কের জেরে গত বছর ২০১০ সালের পরের সমস্ত ওবিসি শংসাপত্র বাতিল করে দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। বলা হয়, সামাজিক, আর্থিক এবং পেশাগত ভাবে সব জনগোষ্ঠীর মধ্যে সমীক্ষা করতে হবে। তার পর নতুন করে ওবিসি তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। হাই কোর্ট আরও জানায়, ২০১০ সালের আগে পর্যন্ত যে ৬৬টি জনগোষ্ঠী অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির অংশ ছিল, কেবলমাত্র তাদেরই শংসাপত্র গ্রাহ্য হবে চাকরির নিয়োগ কিংবা কলেজে ভর্তিতে। ইতিমধ্যে রাজ্য একটি সমীক্ষা করে ওবিসি নিয়ে বিজ্ঞপ্তিও জারি করে। তা নিয়ে ফের হাই কোর্টে মামলা হয় এবং সেটির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয় হাই কোর্ট। পরবর্তী কালে হাই কোর্টের ওই নির্দেশ নিয়ে প্রশ্ন তোলে সুপ্রিম কোর্ট। হাই কোর্টের নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement