এক বছর ছাত্রভোট হয়নি। স্কুল স্তরের পরীক্ষার কারণ দেখিয়ে তা স্থগিত রাখা হয়েছিল। অবশেষে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলিতে ছাত্র সংসদের নির্বাচনের দিন ঘোষণা করলেন কর্তৃপক্ষ। তবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর নির্দেশ মেনে ছাত্রভোটে ‘নোটা’ (তালিকাভুক্ত প্রার্থীদের কাউকে পছন্দ নয়) আদৌ চালু হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট কলেজগুলির উপরেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার নির্বাচনের দিন ঠিক করতে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ। সিদ্ধান্ত হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা হাওড়া জেলার কলেজগুলিতে ১৯ জানুয়ারি, হুগলি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৩১ এবং কলকাতার কলেজগুলিতে ২৭, ২৮, ৩০ এবং ৩১ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) স্বাগত সেন বলেন ‘‘কলকাতার যে-সব কলেজে ৩১ তারিখে মাঘোৎসবের ছুটি, সেখানে ছাত্রভোটের জন্য বাকি তিন দিনের মধ্যে যে-কোনও একটি তারিখ বেছে নেওয়া যাবে।’’
রাজ্যে ছাত্র সংসদের শেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৪-’১৫ শিক্ষাবর্ষে। তার পরের অর্থাৎ ২০১৫-’১৬ শিক্ষাবর্ষে নির্বাচন হয়নি। সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য ভোট সম্ভব হচ্ছে না। তবে বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরের অভিযোগ ছিল, বিধানসভা নির্বাচনের আগে যাতে কোনও নেতিবাচক প্রভাব না-পড়ে, সেই জন্যই ছাত্র সংসদের নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়েছে। সম্প্রতি রাজ্য সরকার ঘোষণা করে, নভেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে ছাত্র সংসদের নির্বাচন করাতে হবে।
গত বার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ১৬৫টি কলেজের মধ্যে মাত্র কুড়িটিতে বিরোধীরা মনোনয়ন জমা দিতে পেরেছিলেন। বাকিগুলিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছিল শাসক দলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। সংগঠনের সভানেত্রী জয়া দত্ত বলেন, ‘‘আমরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে লড়াই চাই। অন্য ছাত্র সংগঠনের মনোনয়ন জমা দিতে যদি কোনও অসুবিধা হয়, আমরা দাঁড়িয়ে থেকে সাহায্য করব।’’
এ কথা শুনে এসএফআইয়ের রাজ্য সভানেত্রী মধুজা সেন রায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এটা ‘জোক অব দ্য ইয়ার’। কলেজের গেটে কিছু বলতে গেলেও যারা আমাদের উপরে চড়াও হয়, তাদের মুখে এ কথা হাস্যকর। শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য আমরা শুক্রবার লালবাজারে ডেপুটেশন দেব।’’
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়ে বিরোধীদের বারবার বাধার মুখে পড়তে হয় বলে অভিযোগ। সেই জন্য অনলইনে মনোনয়নপত্র জমার দাবি উঠেছিল। সিসিটিভি রাখার দাবিও জানিয়েছিলেন বিরোধীরা। স্বাগতবাবু অবশ্য জানান, এই বিষয়ে আলোচনা হয়নি। তবে অনলাইনে মনোনয়নপত্র দেওয়া হবে কি না, সেটা সংশ্লিষ্ট কলেজের কর্তৃপক্ষই ঠিক করবেন।