পার্শ্ব শিক্ষকেরা পথে নামায় বিপাকে স্কুল

সারা রাজ্যে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক মিলিয়ে অন্তত ৪৩ হাজার পার্শ্ব শিক্ষক রয়েছেন বলে তাঁদের সংগঠনের দাবি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৯ ০৫:০০
Share:

—ফাইল চিত্র।

দৈনন্দিন পঠনপাঠন থেকে পরিচালনা, স্কুলের সব কাজেই বড় ভূমিকা থাকে তাঁদের। তাঁরা পথে নামায় সেই সব কাজে যে বিঘ্ন ঘটছে, তা মেনে নিচ্ছেন পার্শ্ব শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তবু তাঁদের বক্তব্য, দাবি আদায়ে আন্দোলন করা ছাড়া আর কোনও উপায়ও নেই।

Advertisement

সারা রাজ্যে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক মিলিয়ে অন্তত ৪৩ হাজার পার্শ্ব শিক্ষক রয়েছেন বলে তাঁদের সংগঠনের দাবি। পার্শ্ব শিক্ষক ঐক্য মঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক ভগীরথ ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের অনশন বিক্ষোভ আন্দোলন সমর্থন করতে প্রতিদিনই আট থেকে ১০ হাজার পার্শ্ব শিক্ষক-শিক্ষিকা মঞ্চে আসছেন। বেশ কিছু স্কুলে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। কিছু স্কুলে ক্লাস চলছে এখনও। পঠনপাঠন ও পরীক্ষা পরিচালনায় স্কুলশিক্ষকদের কিছুটা অসুবিধা হতেই পারে।’’ ওই মঞ্চ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার অনশনে ন’জন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের মধ্যে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক জনের অবস্থা সঙ্কটজনক। অন্য এক পার্শ্ব শিক্ষক সল্টলেকের বিধানচন্দ্র স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি আছেন। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে সাত জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

জেলা থেকে শহর, সব জায়গাতেই বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকেরা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন, পার্শ্ব শিক্ষক-শিক্ষিকারা হাজির না-থাকায় স্কুল চালাতে সমস্যা হচ্ছে। কল্যাণী পান্নালাল ইনস্টিটিউশনের সহকারী প্রধান শিক্ষক সৌদীপ্ত দাস বলেন, ‘‘আমার স্কুলে দু’জন পার্শ্ব শিক্ষক আছেন। কিন্তু ওঁরা সাত দিন ধরে আসছেন না। এখন ক্লাস না-হলেও পরীক্ষা চলছে। ওঁরা না-থাকায় সমস্যা তো হচ্ছেই। আমাদের জেলায় প্রায় সব স্কুলেই কমবেশি সমস্যা হচ্ছে।’’ পূর্ব মেদিনীপুররের শ্যামসুন্দর পাটনা হাইস্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক শুভঙ্কর দত্ত জানান, তাঁদের স্কুলে রয়েছেন তিন জন পার্শ্ব শিক্ষক। কিছু দিন আগে স্কুলছুটদের খোঁজে গ্রামে গিয়েছেন তাঁরা। ‘‘তার পর থেকে ওঁরা আর আসছেন না। ওঁরা না-এলে আমাদের স্কুল চালাতে সমস্যা তো হয়ই,’’ মেনে নিচ্ছেন শুভঙ্করবাবুও।

Advertisement

আরও পড়ুন: সংবিধান দিবস পালন নিয়েও বিরোধের ইঙ্গিত

পার্শ্ব শিক্ষকদের অবিলম্বে স্কুলের কাজে ফিরতে বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, স্কুলে না-গিয়ে রাস্তায় নেমে শিক্ষকদের এই আন্দোলন সমাজের পক্ষে ভাল নয়। ‘‘আলোচনা করে যতটা দেওয়া সম্ভব, সরকার তা দেবে। ২০১১ সালে পার্শ্ব শিক্ষকদের সামগ্রিক বিষয়টি বিবেচনায় আনা হয়েছে। ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে তাঁদের বেতন। এ ছাড়াও বিভিন্ন রকম দাবিদাওয়া মেনে নেওয়া হয়েছে। আরও বেশি স্থায়ীকরণের চেষ্টা করছি। যাঁদের যোগ্যতা আছে, তাঁদের ধীরে ধীরে হবে। একসঙ্গে সব চাইলে সেটা সম্ভব নয়,’’ বলছেন শিক্ষামন্ত্রী।

তাঁদের আন্দোলন যে থামছে না, তা স্পষ্ট করে দিয়ে ভগীরথবাবু বলেন, ‘‘শিক্ষামন্ত্রী আমাদের সঙ্গে কথা না-বললে, আমাদের দাবি না-মানলে এই আন্দোলন চলতেই থাকবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন