Anubrata Mondal Kajal Sheikh

কেউ কারও এলাকা দখল করতে যাবেন না, দলের ক্ষতি যেন না হয়! কেষ্ট ও কাজলকে একসঙ্গে বসিয়ে কঠোর নির্দেশ বক্সীর

২১ জুলাই প্রতি বছরের মতো এ বছরও ধর্মতলায় জনসভা করবে তৃণমূল। তার প্রস্তুতির বৈঠকে শনিবার জেলার নেতাদের ডেকেছিলেন সুব্রত বক্সী। সেখানে অনুব্রত মণ্ডল এবং কাজল শেখ উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২৫ ১৫:০৭
Share:

বীরভূমের অনুব্রত মণ্ডল এবং কাজল শেখকে একসঙ্গে ডেকে বৈঠক করেছেন সুব্রত বক্সী। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

কলকাতায় ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি বৈঠকের আগে বীরভূমের নেতা অনুব্রত মণ্ডল (কেষ্ট নামে ঘনিষ্ঠ বৃত্তে পরিচিত) এবং কাজল শেখের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। দু’জনকে একসঙ্গে বসিয়ে বৈঠকের আগে কথা বলেছেন তিনি। ছিলেন অরূপ বিশ্বাস এবং ফিরহাদ হাকিমও। সূত্রের খবর, দু’জনকেই কড়া ভাষায় ভর্ৎসনা করা হয়েছে। বক্সী জানিয়ে দিয়েছেন, অনুব্রত এবং কাজলের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কারণে দলের কোনও ক্ষতি হলে তার ফল ভাল হবে না। দু’জনকেই দলের রোষানলে পড়তে হবে। কেষ্ট বা কাজল, কেউ যেন পরস্পরের এলাকা দখল করতে না-যান, সে ব্যাপারেও কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন বক্সী।

Advertisement

২১ জুলাই প্রতি বছরের মতো এ বছরও ধর্মতলায় জনসভা করবে তৃণমূল। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই সভার আলাদা তাৎপর্য তৈরি হয়েছে। তার প্রস্তুতির বিষয়ে আলোচনার জন্যই শনিবার জেলার নেতাদের বৈঠক ডাকেন বক্সী। ভবানীপুরে তাঁর দলীয় কার্যালয়ে বৈঠক হয়। প্রতি জেলা থেকে জেলা সভাপতি এবং চেয়ারম্যানকে এই বৈঠকে যোগ দিতে বলা হয়েছিল। বীরভূম এবং উত্তর কলকাতার জেলা সংগঠনে এই দুই পদ নেই। তাই ওই দুই জেলা থেকেই কোর কমিটির সকল সদস্য বৈঠকে যোগ দিতে এসেছিলেন। অনুব্রত এবং কাজল, দু’জনেই বীরভূম তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য। সূত্রের খবর, বৈঠক শুরুর বেশ কিছু ক্ষণ আগেই ভবানীপুরে পৌঁছে গিয়েছিলেন দুই নেতা। তাঁদের আলাদা করে ডেকে নেন বক্সী।

তৃণমূল সূত্রের খবর, অনুব্রত এবং কাজলের সঙ্গে একান্তে বেশ কিছু ক্ষণ কথা বলেন শীর্ষ নেতৃত্ব। দু’জনকে সংঘাত কমানোর বার্তা দেওয়া হয়েছে। বক্সী বলেছেন, তাঁদের পারস্পরিক বিবাদের কারণে দল যেন কোনও ভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। বীরভূমের সংগঠন বা নির্বাচনের ফলাফলে এই বিবাদের প্রভাব পড়লে দু’জনকেই দলের রোষানলে পড়তে হবে। বৈঠকের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে যাতে দু’জনের কেউ মুখ না-খোলেন, সে বিষয়েও সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। অনুব্রত এবং কাজল দু’জনেই বীরভূমের নেতা। তবে অনুব্রত থাকেন বোলপুরে, কাজল নানুরে। পারস্পরিক এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে তাঁদের মধ্যে ঝামেলা হয়ে থাকে। এর ফলে ওই দুই অংশের তৃণমূলকর্মীদের মধ্যেও সংঘাত বাড়ছে। সূত্রের খবর, শনিবারের আলোচনায় সেই প্রসঙ্গও উঠেছে। বক্সী দু’জনকে কড়া ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা কেউ যেন কারও এলাকা দখলের চেষ্টা না করেন। বীরভূমে যেন শান্তি বজায় থাকে।

Advertisement

ভবানীপুরের বৈঠক শেষে উত্তর কলকাতার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করেছেন। সেখানে তিনি জানান, অনুব্রত এবং কাজলের মধ্যে যাবতীয় বিবাদ মিটে গিয়েছে। বীরভূম প্রসঙ্গে সুদীপ বলেন, ‘‘বীরভূম জেলার মধ্যে যে বিরোধের কথা প্রচারিত হয়, মূলত দু’টি নামকে কেন্দ্র করে, আজ তাঁদের সঙ্গে একটি যৌথ বৈঠক হয়েছে। সু্ন্দর ভাবে সব কিছু মিটে গিয়েছে। বীরভূম থেকে এ বার রেকর্ড সংখ্যক মানুষ ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে যোগ দেবেন।’’ পরে অন্য একটি অনুষ্ঠানে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে অনুব্রত নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। কিছু দিন আগে বোলপুরের আইসিকে ফোন করে গালিগালাজ এবং হুমকি দেওয়ার যে অভিযোগ অনুব্রতের বিরুদ্ধে উঠেছিল, সে প্রসঙ্গে শোভনদেব বলেন, ‘‘অনুব্রতকে তো সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়েছে। তাঁর যথেষ্ট প্রচার, নাম-ডাক আছে। তার পরেও তাঁকে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়েছে। চূড়ান্ত ভাবে সংযত করা হয়েছে। যাতে ভবিষ্যতে এরকম কাজ আর না করেন। শাস্তি তো হয়েছে। এই ধরনের ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপোষ করেন না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement