তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের সভা নিয়ে প্রস্তুতি-বৈঠকে যোগ দিতে কলকাতায় এসেছেন বীরভূমের নেতা অনুব্রত মণ্ডল (ঘনিষ্ঠমহলে কেষ্ট নামে পরিচিত)। শনিবার দুপুরে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর ভবানীপুরের কার্যালয়ে যাবেন তিনি। সেখানেই বৈঠক হবে। এই বৈঠকে যোগ দিতে অনুব্রতের পাশাপাশি বীরভূম তৃণমূলের কোর কমিটির সকল সদস্য শহরে এসেছেন। অন্যান্য জেলা থেকেও নেতারা এসেছেন।
শনিবারের বৈঠকে যোগ দিতে অনুব্রত শুক্রবার বিকেলেই কলকাতায় চলে এসেছেন। রয়েছেন চিনার পার্কের ফ্ল্যাটে। শুক্রবার তিনি নৈহাটির বড়মার মন্দিরে পুজোও দিয়েছেন। শনিবার বেলা ১টা নাগাদ ভবানীপুরের প্রিয়নাথ মল্লিক রোডে বক্সীর পার্টি অফিসে বৈঠক হবে। এই বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য আগেই জেলা সংগঠনের সকল সভাপতি এবং চেয়ারম্যানকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। বীরভূম এবং উত্তর কলকাতার জেলা সংগঠনের দায়িত্বে রয়েছে কোর কমিটি। তাই কোর কমিটির সকল সদস্যকেই বৈঠকে থাকতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
সম্প্রতি দলের জেলা সংগঠনে বেশ কিছু রদবদল করেছে তৃণমূল। অনুব্রত বীরভূমের জেলা সভাপতি ছিলেন। তাঁর সেই পদটিই তুলে দেওয়া হয়েছে। বীরভূমের কাজল শেখের সঙ্গে অনুব্রতের ‘মধুর’ সম্পর্কের কথা কারও অজানা নয়। অনুব্রত গরুপাচার মামলায় দীর্ঘ দিন জেলে ছিলেন। সেই সময়ে বীরভূমের সংগঠন পরিচালনা করেছেন কাজলই। অনুব্রত ফেরার পর তাঁর সঙ্গে কাজলের বিবাদ মাঝেমধ্যেই প্রকাশ্যে আসছিল। এই পরিস্থিতিতে জেলা সভাপতির পদ তুলে দিয়ে অনুব্রতকে কেবল কোর কমিটির সদস্য করে রাখে দল। যে কমিটির সদস্য কাজলও। একই ভাবে উত্তর কলকাতায় জেলা সভাপতি পদ তুলে দিয়ে সেখানকার সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কোর কমিটিকে। ওই জেলার সভাপতি ছিলেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
জেলা সংগঠনে রদবদলের পরেও বিতর্কে জড়িয়েছেন অনুব্রত। সম্প্রতি বোলপুরের আইসি লিটন হালদারকে ফোন করে অশ্লীল গালিগালাজ করা এবং হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। সেই অডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যা তৃণমূলকে রীতিমতো অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছিল। দলের নির্দেশে ক্ষমাও চেয়ে নেন অনুব্রত। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। এর মাঝেই দলের বৈঠকে যোগ দিতে কলকাতায় এলেন বীরভূমের নেতা। বীরভূমের কোর কমিটির অন্যতম সদস্য তথা রামপুরহাটের বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘আমরা সকলেই এসেছি। অনুব্রত, আমি এবং কোর কমিটির বাকি সদস্যেরা রাজ্য সভাপতির ডাকা বৈঠকে যোগ দেব।’’
প্রতি বছর ২১ জুলাই ধর্মতলায় সমাবেশ করে তৃণমূল। সেই সমাবেশে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কর্মী-সমর্থকেরা যোগ দেন। তাঁদের সভাস্থলে আনার দায়িত্বে থাকেন জেলা নেতৃত্ব। শুধু তা-ই নয়, ২১ জুলাই নিয়ে জেলায় জেলায় আলাদা করে প্রস্তুতি চলে। প্রচার, সভা করেন জেলা নেতৃত্ব। শনিবারের বৈঠকে জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে তা নিয়েই আলোচনা করবেন বক্সী। ২০২৬ সালে রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে এ বছরই সম্ভবত শেষ ২১ জুলাইয়ের কর্মসূচি আয়োজিত হবে। দলের সকল স্তরের নেতা-কর্মীকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে বিধানসভা ভোটে দলের রণকৌশল কী হতে পারে, তা নিয়ে বার্তা দিতে পারেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে এ বছরের কর্মসূচির আলাদা তাৎপর্য রয়েছে।