এই বিজ্ঞাপন ঘিরেই বিতর্ক।
তিনি তৃণমূলের সাংসদ। রেলের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যানও। এখন রোজভ্যালি মামলায় বিচারাধীন বন্দি। বর্তমান ঠিকানা ভুবনেশ্বরের অ্যাপোলো হাসপাতাল।
অথচ শুক্রবারের সংবাদপত্রে রেলের বিজ্ঞাপনে লেখা হল, কলকাতা-ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট মৈত্রী এক্সপ্রেসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কলকাতা স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে ‘গৌরবময় উপস্থিতি’ থাকবে উত্তর কলকাতার তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কেন?
রেলের যুক্তি, বিজ্ঞাপনে স্থানীয় সাংসদের নাম দেওয়াটা প্রোটোকল। দোষ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত বিজ্ঞাপনে নাম ব্যবহারে সমস্যা নেই। অতীতেও তৎকালীন জেলবন্দি সাংসদ কুণাল ঘোষের নাম বিজ্ঞাপনে গিয়েছে।
কিন্তু যিনি বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন, তিনি উপস্থিত থাকবেন বলে বিজ্ঞাপন কেন? রেলের ওই কমিটিরই প্রাক্তন চেয়ারম্যান, সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ বাসুদেব আচারিয়ার মতে, ‘‘এমন নিয়ম আমার জানা নেই। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অনুমতি নেওয়া উচিত। আমার ক্ষেত্রে তা-ই হতো।’’
আরও পড়ুন:বিপণনেও মোহ বাড়ছে সেলফি-র
সুদীপবাবুর কাছে রেল অনুমতি নিয়েছিল? সাংসদের স্ত্রী, বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনুমতির প্রশ্ন নেই। শিয়ালদহ রেলের অফিস থেকে এ দিন দুপুরে আমাদের বাড়িতে একটি আমন্ত্রণপত্র এসেছে।’’ রেলের বক্তব্য, সংসদীয় কমিটির অফিসেও সুদীপের নামে আমন্ত্রণপত্র গিয়েছে। অনুষ্ঠানটি যদিও তাঁকে ছাড়াই হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের ভিতরে দু’রকম মত আছে। মুকুল রায় যেমন বললেন, ‘‘এমন বিজ্ঞাপন কেন দেওয়া হল, রেলমন্ত্রী বলতে পারবেন। সব জেনে এমন নির্মম রসিকতা কোনও শুভ বুদ্ধির পরিচয় হতে পারে না।’’ তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও ব্রায়েন আবার বলেছেন, ‘‘ট্রেনটির যাত্রা শুরু হচ্ছে কলকাতা স্টেশন থেকে। যা সুদীপবাবুর লোকসভা আসনের আওতায় পড়ে। তাই রেল বিজ্ঞাপন দিতেই পারে।’’
সুদীপবাবুর ঘনিষ্ঠদের মতে, যে মানুষটা সিবিআই হেফাজতে রয়েছেন, তাঁকে নিয়ে এমন বিজ্ঞাপন অসৌজন্যের। তাঁদের আবেদন, রেল এ ব্যাপারে সতর্ক হোক।