তৃণমূল নেতা বিপ্লব খানকে মারধর বন্যা দুর্গতদের। বালুরঘাটে। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।
সপ্তাহ ঘুরতে চলল। এখনও উত্তরবঙ্গে বানভাসিদের দুর্ভোগ অব্যাহত। বেড়ে চলেছে ত্রাণের দাবিতে বিক্ষোভও। নিশানায় শাসকদলের নেতারাই।
শুক্রবার দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের চকভৃগুতে ত্রাণের ত্রিপল চুরির অভিযোগে এক তৃণমূল নেতার দুই সাগরেদকে মারধর করেছিলেন বন্যা দুর্গতরা। শনিবার সেই বালুরঘাটেই মার খেলেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি বিপ্লব খান। বালুরঘাট স্টেডিয়াম থেকে ত্রাণ বিলি করা হলেও ত্রিপল না মেলায় এ দিন বিক্ষোভ শুরু করেছিলেন বন্যা দুর্গতরা। সংবাদমাধ্যম সেই ছবি তুলতে গেলে বিপ্লববাবু এক চ্যানেলের প্রতিনিধিকে ধাক্কা দেন বলে অভিযোগ। তার পরেই বিক্ষোভকারীরা বিপ্লববাবুর দিকে তেড়ে গিয়ে তাঁকে মারধর করে। বিপ্লববাবুকে উদ্ধার করতে পুলিশ লাঠি চালায়।
ক্ষুব্ধ বিপ্লববাবু অভিযোগ করেন, ‘‘বিক্ষোভকারীদের সামাল দেওয়ার মতো পুলিশি ব্যবস্থা ছিল না। আমি কাউকে ধাক্কা দিইনি।’’
বস্তুত ত্রাণ নিয়ে গত তিনদিন ধরেই উত্তরবঙ্গের নানা এলাকায় দুর্গতদের ক্ষোভ চরমে উঠেছে। বৃহস্পতিবার উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারে ত্রাণের দাবিতে বিক্ষোভরতদের সামাল দিতে লাঠি চালাতে হয় পুলিশকে। শুক্রবারও ইটাহারের শ্রীপুর এলাকার কিষান মান্ডি ও বিডিও অফিস থেকে ত্রাণ সামগ্রী লুঠের অভিযোগ উঠেছিল দুর্গতদের বিরুদ্ধে। এ দিন নতুন করে গোলমাল রুখতে সেখানে প্রচুর পুলিশ ও কমব্যাট ফোর্স মোতায়েন করা হয়।
উত্তর দিনাজপুরে এ দিন গোলমাল না হলেও বালুরঘাটের মতোই দুর্গতদের বিক্ষোভে তেতে ওঠে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের মণিপুরও। ফুলহার নদীর বাঁধে আশ্রয় নেওয়া বাসিন্দাদের অভিযোগ ত্রাণ চাইতে গেলে তাঁদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপরই হরিশ্চন্দ্রপুরেই গ্রাম পঞ্চায়েত দফতর ও কংগ্রেস পার্টি অফিসে ঢুকে ত্রাণ লুঠের পাশাপাশি দুর্গতরা ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ।
বৃষ্টি কমার পর় কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও নদী উপচে নতুন করে বানভাসি হয়েছে বহু এলাকা। শনিবারও রায়গঞ্জের ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপর দিয়ে তোড়ে বইছে জল। বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের সঙ্গে রাজ্যের অন্য প্রান্তের যোগাযোগ। মালদহে মহানন্দার জলে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে বহু এলাকা। সঙ্গে চলছে ত্রাণ নিয়ে হাহাকার। আজ, রবিবার উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি দেখতে রওনা হতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।