বিশ্ববিদ্যালয় মূলত শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্র। এবং উপাচার্য সেই প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদাধিকারী। তাই উপাচার্যদের নিজস্ব তহবিলের টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার খাতেই খরচের দাবি তুলেছেন সুগত মারজিত। তিনি দু’দফায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য ছিলেন। পরে নিজের থেকেই সেই পদ ছেড়ে দেন।
সুগতবাবু সোমবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহবিজ্ঞান বিভাগের এক অনুষ্ঠানে গিয়ে বলেন, ‘‘উপাচার্যদের তহবিলের টাকা শিক্ষা, গবেষণার কাজে বেশি খরচ হয় না। খরচ হয় কর্মীদের চিকিৎসার খাতে।’’ তাঁর মন্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয় চলে শিক্ষা ও গবেষণার জন্যই। তাই উপাচার্য-তহবিল খরচের প্রশ্নেও শিক্ষা ক্ষেত্রকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। অথচ কার্যক্ষেত্রে সেই তহবিলের টাকা কর্মীদের চিকিৎসা খাতে খরচ করা হচ্ছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য থাকার সময়ে তিনি এই বিষয়ে আপত্তি তুলেছিলেন বলেও জানান ওই অর্থনীতিবিদ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের তহবিলে রয়েছে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা।
সুগতবাবুর বক্তব্যের সঙ্গে একমত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ। তিনিও মনে করেন, চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট তহবিল আছে। চিকিৎসার খরচ সেই তহবিল থেকেই চালানো বাঞ্ছনীয়। কিন্তু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সেটা যে হচ্ছে না, তা মেনে নেন তিনি। ‘‘চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট আলাদা তহবিল থেকে চিকিৎসা খাতে টাকা খরচ করলেই ভাল হয়। উপাচার্য-তহবিলের টাকা শিক্ষা ও গবেষণাতেই খরচ করা উচিত,’’ বলছেন আশুতোষবাবু।
ওই তহবিল খরচের ক্ষেত্রে শিক্ষা, গবেষণাকেই গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে মনে করেন বারাসত রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বাসব চৌধুরীও। তবে তাঁর বক্তব্য, এর জন্য তহবিলে যথেষ্ট অর্থ থাকা প্রয়োজন। তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স বেশি নয়। এখানে বিশেষ তহবিলে থাকে দু’লক্ষ টাকার মতো। তিনি বলেন, ‘‘তহবিল না-বাড়ালে শিক্ষা, গবেষণায় খুব একটা সাহায্য করা যায় না।’’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস এবং বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিমাই সাহা অবশ্য এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। সুরঞ্জনবাবু যাদবপুরে যাওয়ার আগে দীর্ঘদিন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন।