Anubrata Mandal

Anubrata Mandal: কোর্টে স্বস্তি মেয়ের, কেষ্ট বলেন চাকরি পাশ করেই

নিজাম প্যালেসে সিবিআইয়ের আঞ্চলিক দফতর থেকে বেরিয়ে স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য এ দিন কমান্ড হাসপাতালে যাওয়ার পথে এই দাবি করেন অনুব্রত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২২ ০৫:৫১
Share:

কলকাতা হাই কোর্টে অনুব্রতের কন্যা সুকন্যা। ছবি: সুমন বল্লভ

নির্দেশ পেয়ে কলকাতা হাই কোর্টে হাজির হলেও মেয়েকে শেষ পর্যন্ত কাঠগড়ায় উঠতে হয়নি। মেয়েকে নিয়ে তিনি যে ‘চিন্তিত নন’, সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। বৃহস্পতিবার ওই নেতা দাবি করেন, তাঁর মেয়ে যে পাশ করে প্রাথমিক স্কুলে চাকরি পেয়েছেন, সেই সংক্রান্ত সার্টিফিকেট আছে।

Advertisement

নিজাম প্যালেসে সিবিআইয়ের আঞ্চলিক দফতর থেকে বেরিয়ে স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য এ দিন কমান্ড হাসপাতালে যাওয়ার পথে এই দাবি করেন অনুব্রত। এক সপ্তাহ আগে গ্রেফতারের পরে এই প্রথম তিনি মুখ খুললেন। তাঁর গাড়ি রাস্তায় সিগন্যালে

দাঁড়িয়ে যাওয়ায় পাশে গাড়ি নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন সাংবাদিক। তখনই কাচ নামিয়ে কিছু কথা বলেন অনুব্রত। সেই সময় তাঁর পাশের আসনে সিবিআই অফিসারও বসে ছিলেন।

Advertisement

অনুব্রতের মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল টেট পাশ না-করেই স্কুলে চাকরি পেয়েছেন এবং স্কুল না-গিয়ে বাড়িতে বসে বেতন নিয়েছেন— এই অভিযোগে মামলা হয়েছে হাই কোর্টে। এ দিন সেই মামলায় হাই কোর্টে সুকন্যাকে ডাকা হয়েছিল নথিপত্র জমা দিতে। সেই প্রসঙ্গেই অনুব্রত বলেন, ‘‘মেয়ের পাশ করা আছে। সার্টিফিকেট আছে। মেয়েকে আদালতে তলব করা হয়নি। সার্টিফিকেট জমা দিতে বলা হয়েছে। মেয়েকে নিয়ে চিন্তা নেই।’’

প্রশ্ন ছিল, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো আপনার পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। আপনি কী বলবেন? অনুব্রত বলেন, ‘‘দিদি তো দলনেত্রী। তিনি দলনেত্রী হিসেবে ঠিক কাজই করেছেন। দল যে আমার পাশে রয়েছে, তাতে আমি খুশি।’’ একই সঙ্গে ওই দাপুটে নেতা জানিয়ে দেন, তাঁর শারীরিক সমস্যা রয়েছে। ইদানীং শরীর ভাল যাচ্ছে না।

এ দিন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় আপাতত স্বস্তি পেয়েছেন অনুব্রতের মেয়ে সুকন্যা এবং ওই নেতার ঘনিষ্ঠ অন্য পাঁচ জন। বুধবার সৌমেন নন্দী নামে এক মামলাকারীর দায়ের করা অতিরিক্ত হলফনামার ভিত্তিতে ওই ছ’জনকে কোর্টে হাজির হতে বলেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার তিনি জানান, সব নথি খতিয়ে দেখার পরে কোর্ট সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, ওই অতিরিক্ত হলফনামা বর্তমান মামলায় গ্রহণ করা যাবে না। মামলাকারী নতুন কোনও মামলায় ওই নথি ব্যবহার করতে পারবেন।

বুধবার সৌমেনের আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের জমা দেওয়া হলফনামায় বলা হয়েছিল, সুকন্যা-সহ অনুব্রতের ঘনিষ্ঠ ছ’জন প্রাথমিক শিক্ষকপদে যোগ্যতা নির্ধারক পরীক্ষা অর্থাৎ টেট পাশ না-করেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি পেয়ে গিয়েছেন। তার ভিত্তিতেই তাঁদের কোর্টে হাজির হতে বলেন বিচারপতি। ওই ছ’জনের অনেকেই অবশ্য দাবি করেন যে, তাঁদের টেট পাশের নথি আছে।

কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী সকালেই কলকাতায় পৌঁছন সুকন্যা। প্রথমে চিনার পার্কের ফ্ল্যাটে যান তিনি। দুপুরে সেখান থেকে গাড়িতে চেপে হাই কোর্টে পৌঁছন। পুলিশি নিরাপত্তা দিয়ে তাঁকে ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়। সুকন্যাকে দেখতে ভিড় হয়েছিল। ভিড়ের মধ্য থেকে এক মহিলাকে সুকন্যার উদ্দেশে ‘গরু চোরের মেয়ে’ বলে কটূক্তি করতে শোনা যায়। তবে এ দিন অতিরিক্ত হলফনামা গৃহীত না-হওয়ায় সুকন্যা-সহ ওই ছ’জনকে কাঠগড়ায় উঠতে হয়নি।

শুনানির পরে ফিরদৌস জানান, ওই নথি এই মামলায় গ্রাহ্য না-হলেও পরবর্তী কালে সুকন্যা-সহ ওই ছ’জনের নিয়োগ নিয়ে মামলা করবেন বলে স্থির করেছেন তাঁর মক্কেল।

ওই মামলা সম্পর্কে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এ দিন বলেন, “আদালত ও আইনের প্রতি পূর্ণ সম্মান জানিয়ে বলছি, যে-হলফনামা গত কাল এতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যার ভিত্তিতে তাঁদের হাজিরা নিশ্চিত করতে পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেওয়া হল, সেটা এ দিন এতটাই গুরুত্বহীন হয়ে গেল যে, সেই নির্দেশ প্রত্যাহার হয়ে গেল! যাঁদের সম্পর্কে এই নির্দেশ দেওয়া হল, তাঁরা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও পেলেন না। যদি সামাজিক ভাবে অপদস্থ করার পরিস্থিতি তৈরি করা হয়, তা চূড়ান্ত দুর্ভাগ্যজনক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন