স্বস্তি চিকিৎসকদের

যক্ষ্মা নিরাময়ে দৈনিক ডোজ চালুর নির্দেশ

প্রশ্ন উঠেছিল আগেই। এ বার সু্প্রিম কোর্টও ‘ডটস’ পদ্ধতির পরিবর্তে যক্ষ্মার ওষুধের দৈনিক ডোজ চালুর নির্দেশ দেওয়ায় চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ স্বস্তির শ্বাস ফেলেছেন। তাঁদের মতে, বিশ্বের অধিকাংশ দেশ যক্ষ্মা রোগীদের প্রতিদিন ওষুধ খাওয়ায়। তা হলে ভারতই বা সেই পথে হাঁটবে না কেন?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:৩৫
Share:

প্রশ্ন উঠেছিল আগেই। এ বার সু্প্রিম কোর্টও ‘ডটস’ পদ্ধতির পরিবর্তে যক্ষ্মার ওষুধের দৈনিক ডোজ চালুর নির্দেশ দেওয়ায় চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ স্বস্তির শ্বাস ফেলেছেন। তাঁদের মতে, বিশ্বের অধিকাংশ দেশ যক্ষ্মা রোগীদের প্রতিদিন ওষুধ খাওয়ায়। তা হলে ভারতই বা সেই পথে হাঁটবে না কেন?

Advertisement

একটি জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এস খেহরের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রককে এই নির্দেশ দেয়। বলা হয়, অবিলম্বে যক্ষ্মা রোগীদের ‘ডটস’ পদ্ধতিতে সপ্তাহে তিন দিনের পরিবর্তে প্রতিদিন ওষুধ খাওয়ানোর ব্যবস্থা চালু করতে হবে। নির্দেশ পালনের জন্য এর আগে ২০১৮ সালের জুন মাস পর্যন্ত সময় চেয়েছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রক। তাদের যুক্তি ছিল, তিন দিনের যে ডোজ এখন চালু রয়েছে, তা বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিপুল পরিমাণে মজুত। তাই ওই ওষুধগুলি শেষ হওয়া পর্যন্ত সময় দেওয়া হোক। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালত জানিয়ে দিয়েছে, অত দিন পর্যন্ত সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়তে দেওয়া যাবে না। যা করার দ্রুত করতে হবে।

বক্ষরোগ বিশেষজ্ঞ পার্থসারথি ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘গোড়া থেকেই ‘ডটস’ পদ্ধতির কিছু কিছু দিক নিয়ে সংশয় ও প্রশ্ন রয়েছে। সকলের জন্য একই ধরনের রাবার স্ট্যাম্প চিকিৎসার কোনও যুক্তি নেই। এই সব কারণেই ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু সেটা ঠেকাতে যে সু্প্রিম কোর্টকে হস্তক্ষেপ করতে হল, এটাই দুঃখের।’’ রমন কাকর নামে এক ব্যক্তি সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে বলেছিলেন, ভারতে যক্ষ্মা রোগীদের চিকিৎসার জন্য যে ‘ডিরেক্টলি অবজার্ভড ট্রিটমেন্ট’ বা ‘ডটস’ পদ্ধতি চালু আছে তা অবৈজ্ঞানিক এবং রোগীদের পক্ষে ক্ষতিকর। পাশাপাশি, দৈনিক ওষুধের ডোজ গোটা বিশ্ব জুড়েই যক্ষ্মার প্রকোপ অনেকটাই কমাতে পেরেছে। তাই ‘ডটস’-এর বদলে প্রতিদিন ওষুধের পদ্ধতিই চালু করার নির্দেশ দিন সুপ্রিম কোর্ট।

Advertisement

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গোটা বিশ্বের নিরিখে ভারতেই যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা বেশি। ২০১৫ সালে এ দেশে ২২ লক্ষ যক্ষ্মা রোগীর সন্ধান মিলেছিল। এর মধ্যে মাল্টি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট (এমডিআর) রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। সেই প্রবণতা রয়েছে এ রাজ্যেও। পশ্চিমবঙ্গে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা এখন এক লক্ষের কাছাকাছি। ২০১২ সালে তাঁদের মধ্যে এমডিআর-যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা ছিল ৭১৯। ২০১৪ সালে তা বেড়ে হয় ১৮০৪। গত বছরে তা আরও বেশ খানিকটা বেড়েছে বলে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর। অথচ ‘ডটস’ পদ্ধতি পুরো মাত্রায় চালু রয়েছে এখানে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন