শেষ হাসি হাসলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।
সুরাহার আশায় সুপ্রিম কোর্টে এসে বড় ধাক্কা খেলেন বিমল গুরুঙ্গ। তাঁর বিরুদ্ধে রাজ্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে দমনমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে, এই অভিযোগ এনে, গ্রেফতারির হাত থেকে বাঁচতে গুরুঙ্গ শীর্ষ আদালতে যান। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট আজ তাঁর আর্জি খারিজ করে জানাল, ‘গুরুঙ্গ কোনও সুরাহা পাওয়ার অধিকারী নন’। যার ফলে গুরুঙ্গকে গ্রেফতার করতে বা অন্য আইনি ব্যবস্থা নিতে রাজ্যের সামনে বাধা রইল না।
বিচারপতি এ কে সিক্রি ও বিচারপতি অশোক ভূষণের বেঞ্চ আজ বস্তুত পাহাড়ে রাজ্যের পদক্ষেপকেই সমর্থন জানিয়েছে। বিচারপতিরা রায়ে বলেন, ‘গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা হিসেবে গুরুঙ্গ পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন করছিলেন। রাজ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং নাগরিকদের সম্পত্তি, জীবনের সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে বাধ্য। শান্তি ফেরাতে রাজ্যকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতেই হত।’
আর্জি খারিজ হওয়ার পরেই গুরুঙ্গকে গ্রেফতার করা হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে যায়। ঘটনাচক্রে, এ দিনই শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গের সচিবালয় উত্তরকন্যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবনকুমার চামলিংয়ের বৈঠক ছিল। আগে পশ্চিমবঙ্গের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছিল, সিকিমে গিয়ে গা-ঢাকা দিয়েছিলেন গুরুঙ্গ। এ দিন এই সংক্রান্ত কোনও প্রশ্নেরই জবাব দিতে চাননি মুখ্যমন্ত্রীরা। মমতা বলেন, ‘‘আদালতের রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি। বাকি বিষয় নিয়ে মন্তব্য করছি না।’’ বরং দু’জনেই জানান, দার্জিলিং নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি এখন অতীত। মমতা জানান, এখন থেকে গুরুঙ্গদের সাহায্য করবে না সিকিম।
রায় নিয়ে মুখ খুলতে চাননি দার্জিলিঙের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। তাঁর যুক্তি, এটি আদালত ও গুরুঙ্গের বিষয়। মামলা করার পরে অবশ্য প্রাথমিক ভাবে সুরাহা পেয়েছিলেন গুরুঙ্গ। কোর্ট বলেছিল, আপাতত তাঁর বিরুদ্ধে দমনমূলক পদক্ষেপ করা যাবে না। এর পরেই দিল্লিতে আত্মপ্রকাশ করেন গুরুঙ্গ। আজ কোর্ট বলেছে, কারও উপর রাজ্য নিপীড়ন চালিয়েছে, তা বলা যাচ্ছে না। রাজ্য পুলিশের সব এফআইআর-কে পক্ষপাতদুষ্ট বলা যায় না। গুরুঙ্গের আর্জি মতো সব মামলা সিবিআই বা এনআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ারও যুক্তি নেই।