West Bengal DGP Rajeev Kumar

রাজীব কুমার বনাম সিবিআই: জামিন নিয়ে মামলা ৬ বছর পর উঠবে সুপ্রিম কোর্টে, সোমবার শুনবে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ

কলকাতা হাই কোর্ট রাজীব কুমারকে আগাম জামিন দেয়। সেই জামিনের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সিবিআই। সোমবার শীর্ষ আদালতে দেখা যেতে পারে রাজীব বনাম সিবিআইয়ের লড়াই।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৫ ১৫:৫৮
Share:

রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের মামলা উঠছে সুপ্রিম কোর্টে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ছ’বছর পরে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের মামলা উঠছে সুপ্রিম কোর্টে। রাজীবের আগাম জামিনের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে মামলা করেছিল সিবিআই। সোমবার প্রধান বিচারপতি বিআর গবই এবং বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রনের বেঞ্চে ওই মামলাটি শুনানির তালিকায় রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে সূত্রে খবর, শুনানির তালিকায় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে এক নম্বরে রয়েছে মামলাটি। ২০১৯ সালে রাজ্য পুলিশের বর্তমান ডিজিকে আগাম জামিন দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট।

Advertisement

২০১৯ সালের ১ অক্টোবর রাজীবের আগাম জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছিল হাই কোর্ট। তিন দিনের মধ্যে ওই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যায় সিবিআই। কোর্টের তথ্য বলছে, ওই বছর ৪ অক্টোবর হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে মামলা করেছিল সিবিআই। ২০১৯ সালের ২৫ এবং ২৯ নভেম্বর মামলাটি শোনে আদালত। দ্বিতীয় শুনানির দিন রাজীবকে নোটিস জারি করে সুপ্রিম কোর্ট। সে বছর ২০ ডিসেম্বর শীর্ষ আদালতের নোটিস পান রাজীব। এর পরে এই মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে কয়েকটি আবেদন জমা পড়ে আদালতে। যদিও শুনানির কোনও অগ্রগতি দেখা যায়নি। অর্থাৎ, এত বছরে সুপ্রিম কোর্টে মাত্র দু’বার মামলাটি শুনানির জন্য উঠেছে।

সারদা চিটফান্ড মামলায় প্রথম তদন্ত শুরু করে রাজ্য সরকারের গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। সেই সিটের অন্যতম সদস্য ছিলেন বিধাননগরের তৎকালীন পুলিশ কমিশনার রাজীব। ২০১৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট এই মামলার তদন্তভার পুলিশের কাছ থেকে নিয়ে সিবিআইকে দেয়। তদন্তে নেমে সিবিআই অভিযোগ করে, রাজীব তদন্তে সহযোগিতা করছেন না। অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং নথি ইচ্ছাকৃত ভাবে বিকৃত করেছেন। যাতে প্রমাণ নষ্ট হয়ে যায়। যদিও ওই সব অভিযোগ নস্যাৎ করেন রাজীব। আদালতে তিনি জানান, সিবিআই তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন। মেঘালয়ের শিলংয়ে পাঁচ দিন ধরে (মোট ৪০ ঘণ্টা) কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদে অংশ নেন। এবং পরে কলকাতাতেও সিবিআইয়ের দফতরে হাজিরা দিয়েছিলেন। যদিও কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীবকে হেফাজতে চেয়ে পদক্ষেপ শুরু করে সিবিআই।

Advertisement

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সুপ্রিম কোর্ট রাজীবকে অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ দেয়। পরে ওই বছর মে মাসে সেই রক্ষাকবচ প্রত্যাহার করে আদালত। তবে শীর্ষ আদালত জানায়, রাজীব চাইলে আগাম জামিনের আবেদন করতে পারেন। সেই মতো তিনি আগাম জামিন চেয়ে হাই কোর্টে মামলা করেন। জামিনের বিরোধিতা করে সিবিআইয়ের যুক্তি, সহযোগিতা না করে রাজীব ইচ্ছাকৃত ভাবে তদন্তে দেরি করছেন। তিনি প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাঁর জামিন হলে তদন্ত বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। রাজীবের পক্ষ থেকে পাল্টা যুক্তি দেওয়া হয়, তিনি বার বার তদন্তে সহযোগিতা করেছেন। হেফাজতে নেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। আইন অনুযায়ী তাঁর ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকার রক্ষা করা উচিত।

হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি শহিদুল্লাহ মুন্সি এবং বিচারপতি শুভাশিস দাশগুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ রাজীবের আগাম জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে। হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, মামলাকারী রাজীবকে বহু বার জেরা করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে কোনও নতুন বা চাঞ্চল্যকর তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাই তাঁকে হেফাজতে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা নেই বলে আদালত মনে করছে। আদালতের রায়, আগাম জামিন পাবেন রাজীব। তবে তাঁকে সিবিআই তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে। ৪৮ ঘণ্টা আগে নোটিস পেলে সিবিআইয়ের কাছে হাজিরা দিতে হবে। ওই সব শর্ত লঙ্ঘন করা হলে সিবিআই জামিন বাতিলের আবেদন করতে পারবে। হাই কোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যায় সিবিআই। সোমবার যার শুনানি হওয়ার কথা প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement