প্রতীকী ছবি।
দিনের দিন কাজের খতিয়ান রাখার বন্দোবস্ত করছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। নবান্নের কর্তারা এ বার রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি-র কর্মসংস্কৃতিতেও বদল আনতে চাইছেন। সেখানকার দাওয়াই: ‘সময়ে কাজ শেষ করুন’ আর ‘নিজের কাজ নিজে করুন’।
রোজের রোজ কাজের ফিরিস্তি লেখার জন্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থায় চালু হচ্ছে ‘ওয়ার্ক ডায়েরি’। আর গোয়েন্দা সংস্থায় কর্মসংস্কৃতির হাল ফেরানোর বিষয়টিকে নবান্ন এতটাই গুরুত্ব দিচ্ছে যে, সিআইডি-র অফিসার থেকে কর্মী পর্যন্ত সব স্তরে প্রতিদিন নজরদারি চালাতে চালু হচ্ছে ‘ফাইল ট্র্যাকিং সিস্টেম’। এই ব্যবস্থায় শুধু এক আঙুলের ছোঁয়ায় মুহূর্তে জেনে নেওয়া যাবে তদন্তের গতিপ্রকৃতি, ফাইলের অবস্থান। এ-সব দেখেই সিআইডি-কর্তারা বুঝে যাবেন, কে কেমন কাজ করছেন। ঠিক যে-ভাবে ‘ওয়ার্ক ডায়েরি’-তে রোজকার কাজের হিসেব দেখে কর্মী-অফিসারদের দক্ষতা-তৎপরতার মূল্যায়ন করবেন বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কর্তারা।
‘‘নতুন ব্যবস্থায় কাজে ফাঁকি দেওয়া সহজ হবে না,’’ বলছেন এক সিআইডি-কর্তা। ফাঁকি ধরা যাবে কী ভাবে? ওই গোয়েন্দা-কর্তার বক্তব্য, ধরা যাক, কোনও ঘটনার তদন্ত করছে সিআইডি। সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা অফিসারকে না-জানিয়েই শুধু ‘ফাইল ট্র্যাকিং সিস্টেম’-এর মাধ্যমে জেনে যাওয়া যাবে, তদন্তে কতটা কী অগ্রগতি হয়েছে। আর সেই খতিয়ান দেখেই বোঝা যাবে, ওই অফিসার এবং তদন্তের কাজে যুক্ত অন্য কর্মীরা ঠিকঠাক কাজ করছেন কি না।
ভবানী ভবনের খবর, তদন্তকারী অফিসার কিংবা কর্মীকে কোনও কর্তা কিছু নির্দেশ দিলে নতুন ব্যবস্থায় তার উল্লেখ থাকবে। আবার ধরা যাক, কোনও কাজ শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। নতুন ব্যবস্থায় সেই সময়সীমা শেষের ৪৮ ঘণ্টা আগে সংশ্লিষ্ট অফিসারের মোবাইলে মেসেজ পাঠিয়ে সেটা তাঁকে মনে করিয়ে দেওয়া হবে। এতে কর্মী-অফিসারদের কাজের পুঙ্খানুপুঙ্খ খতিয়ান রাখা যাবে এবং আখেরে বার্ষিক মূল্যায়নের কাজটা সহজ হবে।
গোয়েন্দারা জানান, সিআইডিতে ১৪৪০টি ফাইল রয়েছে। তার মধ্যে ৮৯২টি ফাইল আছে আলমারিতে। বাকি ৫৪২টি ফাইল রয়েছে বিভিন্ন সেকশনে। সিআইডি-কর্তাদের দাবি, আলমারির কোন তাকে কোন ফাইল রয়েছে, এডিজি (সিআইডি) থেকে যে-কোনও অফিসার কম্পিউটার খুললেই তা জেনে যাবেন। ‘‘ফাইল পাওয়া যাচ্ছে না, তাই কাজ করা যাচ্ছে না— এই অজুহাতের দিন শেষ,’’ বলেন এক গোয়েন্দা-কর্তা।