Suvendu Adhikari

লড়াইয়ের বার্তা নিয়েও নীল-সাদা সাজে শুভেন্দু

মহিষাদল রাজবাড়ির ছোলাবাড়ির মাঠে শুভেন্দুর এ দিনের কর্মসূচি ছিল আপাত ভাবে অরাজনৈতিক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মহিষাদল ও হলদিয়া শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২০ ০৫:০২
Share:

নীল-সাদা মঞ্চে শুভেন্দু। পরনেও নীল-সাদা। নিজস্ব চিত্র

মন্ত্রিত্ব ছেড়ে কার্যত ‘বিদ্রোহের ধ্বজা’ উড়িয়েছেন তিনি। তবে নীল-সাদা এখনও ছাড়েননি।

Advertisement

মন্ত্রিত্বে ইস্তফার পরে রবিবার প্রথম প্রকাশ্য কর্মসূচিতে শুভেন্দু অধিকারীর পরনে ছিল সাদা পাজামা-পাঞ্জাবির উপর নীল জ্যাকেট। মঞ্চও তৈরি হয়েছিল নীল-সাদা কাপড়ে। আর সেখানে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু মনে করিয়ে দিলেন, রাষ্ট্রশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করে এই মেদিনীপুরের মাটি থেকেই স্বাধীন তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকারের মতো সমান্তরাল সরকার তৈরি হয়েছিল।

এ দিনই আবার শুভেন্দুর দুই প্রধান ‘ভরকেন্দ্র’ ‘অধিকারী গড়’ কাঁথি এবং শুভেন্দুর আর এক ঠিকানা হলদিয়ায় জোড়া কর্মসূচি করে তৃণমূল। হলদিয়ায় দুই মন্ত্রী সুজিত বসু ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে যুব তৃণমূলের উদ্যোগে একটি বড় মিছিল হয়। আর কাঁথিতে ‘টিম দেশপ্রাণ’ নামে পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতির তৈরি এক মঞ্চের সভায় হাজির ছিলেন আর এক মন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও তৃণমূল নেতা নির্বেদ রায়।

Advertisement

আরও পড়ুন: এ বছর খুলছে না কলেজ, পাঠ অনলাইনেই

মহিষাদল রাজবাড়ির ছোলাবাড়ির মাঠে শুভেন্দুর এ দিনের কর্মসূচি ছিল আপাত ভাবে অরাজনৈতিক। সদ্য প্রয়াত স্বাধীনতা সংগ্রামী রণজিৎ বয়ালের স্মরণসভার আয়োজন করেছিল তাম্রলিপ্ত জনকল্যাণ সমিতি, যার সভাপতি শুভেন্দু নিজে। সেখানে তিনি রাষ্ট্রশক্তির বিরুদ্ধে তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকারের লড়াইয়ের কথা বলতে গিয়ে প্রকারান্তরে জানিয়ে দেন, ‘‘সংবিধানে গণতন্ত্রের কথা বলা হয়েছে। সেখানে শেষ কথা জনগণই বলে। তাই তাদের সামনে রেখে আগামী দিনে আমার দায়বদ্ধতা, অঙ্গীকার পালন করব।’’

গত শুক্রবার মন্ত্রিত্ব ও সরকারি পদে ইস্তফার পরে ধরাছোঁয়ার মধ্যে ছিলেন না শুভেন্দু। দু’দিন পরে মহিষাদলের এই অনুষ্ঠানে তাই নজর ছিল। শুভেন্দুর দাবি, ‘‘পাঁচ হাজার মানুষকে আমন্ত্রণ করা হলেও আট হাজার মানুষ এসেছেন।’’ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন, পুরনো ইতিহাসের কথা তুলে শুভেন্দু আসলে ইঙ্গিত করলেন বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতকেই। তবে নন্দীগ্রামের বিধায়ক আগামীতে তৃণমূলেই থাকছেন, না বিজেপিতে যাচ্ছেন, নাকি অন্য কোনও পথে— কিছুই খোলসা করেননি। শুধু জানিয়েছেন, ৩ ডিসেম্বর ক্ষুদিরাম বসুর জন্মদিন, ১৫ ডিসেম্বর সতীশ সামন্তর জন্মদিন ও ১৭ ডিসেম্বর তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকারের প্রতিষ্ঠা দিবস নিজ উদ্যোগে পালন করবেন।

আরও পড়ুন: প্যারাশুটে নামলে দক্ষিণ কলকাতার সাংসদ হতাম, শুভেন্দুকে পাল্টা তোপ অভিষেকের

এ দিন হলদিয়ায় যুব তৃণমূলের পদযাত্রা ও জনসভাতেও ঠাসা ভিড় ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বেই একুশে ফের তৃণমূলের সরকার গঠনের আহ্বান জানান দুই মন্ত্রী সুজিত বসু ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বস্তুত, এই কর্মসূচির হাত ধরে হলদিয়া শহর এ দিন মমতার ছবি ও কাট-আউটে ছেয়ে গিয়েছিল। এত দিন যে সব রাস্তায় ছিল শুভেন্দুর ছবি দেওয়া ফ্লেক্সের ভিড়, এ দিন সেই এলাকা দলনেত্রীর ছবিতে ছয়লাপ হয়েছে।

এ দিন মহিষাদলে শুভেন্দুর অনুষ্ঠানস্থলের কাছে দেখা গিয়েছে তাঁর ছবি দেওয়া ‘দাদার অনুগামী’দের ব্যানার। তাতে বার্তা ছিল, ‘দাদা কখনও পদের পিছনে ছোটে না। বরং পদ তার পিছনে ছোটে।’ কাঁথির কর্মসূচিতে মন্ত্রী ব্রাত্য বসু অবশ্য স্পষ্ট বলেছেন, ‘‘আমরা এক জনেরই অনুগামী। তিনি হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন