Suvendu Adhikari

মমতাকে হারাতে মমতাই ‘মডেল’, দলে বার্তা শুভেন্দুর

শনিবার রাজ্য বিজেপির কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে শুভেন্দু বলেছেন, “গণআন্দোলনই মমতাকে মমতা করেছে। সাফল্যের পথে গণআন্দোলনের কোনও শর্টকাট রাস্তা নেই।”

Advertisement

বিপ্রর্ষি চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:১৭
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্ষমতাচ্যুত করার দায়িত্ব নিজেই নিয়েছেন তিনি। তবে মমতাকে হারাতে তাঁর রাজনীতিকেই ‘মডেল’ হিসেবে তুলে ধরলেন নেতা শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার রাজ্য বিজেপির কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে তিনি বলেছেন, গণআন্দোলনই মমতাকে মমতা করেছে। সাফল্যের পথে গণআন্দোলনের কোনও শর্টকাট রাস্তা নেই।’

Advertisement

পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজ্য বিজেপির দু’দিনের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক এ দিন শেষ হয়েছে দুর্গাপুরে। রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক চর্চায় দলের ভবিষ্যৎ পথ নির্দিষ্ট করতে বিজেপির এই বৈঠক দু’দিনই অবশ্য হয়ে উঠেছে ‘মমতাময়’। বৈঠকের প্রথমপর্ব শুক্রবারে রাজনৈতিক প্রস্তাবের খসড়া চূড়ান্ত হয়। সূত্রের খবর, পদাধিকারীদের ওই বৈঠকে শুভেন্দু বলেছেন, ‘রাস্তার আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়াতে হবে।’ সেই প্রসঙ্গে তিনি মমতার সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামের আন্দোলন গণআন্দোলনের রূপ দিয়ে সফল হয়েছিলেন, তা ব্যাখ্যা করেন। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এ দিন দলকে ‘গ্রাম দিয়ে শহর ঘেরা’র স্লোগান গ্রহণের পরামর্শও দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা।

জানা গিয়েছে, গণআন্দোলনেই জোর দিয়ে ওই বৈঠকে শুভেন্দু বামেদের গণান্দোলনের কথাও দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘বামেরা যখন কংগ্রেসকে সরিয়ে ক্ষমতায় আসে, তখন ক’টা বুথে তাদের এজেন্ট ছিল? গণ আন্দোলনের মাধ্যমে জনমানসে তাদের প্রতি ভরসা তৈরি হয়েছিল।’ সূত্রের খবর, কিছুটা আক্ষেপের সুরেই তিনি বলেছেন, ‘এখনও পর্যন্ত বিজেপির উল্লেখযোগ্য আন্দোলন বলতে এক নবান্ন অভিযান। আর আবাস নিয়ে কিছু জায়গায় বিক্ষোভ। তাও সেই বিক্ষোভ অনেকাংশেই হয়েছে পতাকা ছাড়া।’ প্রসঙ্গত, সেই নবান্ন অভিযান কর্মসূচির চূড়ান্ত পর্বেও নেতাদের আগেই গ্রেফতার হয়ে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল বিজেপির অন্দরে।

Advertisement

বিজেপির আরেক নেতা দিলীপ ঘোষ এ বিষয়ে শুভেন্দুকে সমর্থন করেন। তাঁর কথায়, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে আন্দোলনের মাধ্যমে সাফল্য পেয়েছেন এ কথা তো সত্যি। আমরা তো আগেও বলেছি আন্দোলন ছাড়া গতি নেই।’’ তবে তাঁর সংযোজন, ‘‘একা মমতা নন। যাঁরাই ক্ষমতায় এসেছেন, তাঁদেরই আন্দোলনের ইতিহাস আছে। সেই প্রসঙ্গে তিনি কংগ্রেসের নেতৃত্বে স্বদেশি আন্দোলন ও বামেদের তেভাগা আন্দোলনের কথা উল্লেখ করেছেন।

রাজনৈতিক প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় এ দিন দিলীপ সংখ্যালঘু ভোটে নজর দেওয়ার কথাও বলেছেন। দলীয় সূত্রে খবর, দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতির কথা, ‘আমাদের রাজ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ সংখ্যালঘু। তাঁদের বাদ দিয়ে বেশিদূর এগনো যাবে না। তাদের মধ্যে গিয়ে কাজ করুন। তাঁরা বিজেপিকে ভোট দেবে না ধরে নিয়েও কাজ করতে হবে।’ সেই সঙ্গেই মাঝি, দর্জি, কামার সহ অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের নিয়ে সংগঠন করার কথাও বলেছেন তিনি।

দলের আন্দোলন- কর্মসূচি যে নবান্নে ‘পৌঁছন’র পথে যথেষ্ট নয়, এ দিন রাজনৈতিক প্রস্তাবের উপর আলোচনায় সেই মত জানিয়েছেন দলের এক বিধায়কও। তাঁর কথা, ‘সমাজমাধ্যমে ছবি দেখিয়ে করে ক্ষমতায় আসা যাবে না বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

বৈঠকের শেষদিনে দলের অভ্যন্তরীণ ঐক্যের বিষয়টিও নানা ভাবে উঠে এসেছে। এ রাজ্যে বিজেপির ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল বনসলের বার্তা, ‘সকলকে সঙ্গে নিতে হবে। পুরনোদের ডাকতে হবে।’

বৈঠকের প্রথম দিন সরাসরি বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন বিধায়ক অশোক দিন্দা ও রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী। পরিস্থিতি সামাল দেন দলীয় পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement