Special Intensive Revision

এক নাম রয়েছে নানা এলাকায়, নালিশ শুভেন্দুর, ‘ভিড়’ সীমান্তে

শুভেন্দু ফের দাবি করেছেন, এসআইআর ঘোষণার পরে সীমান্ত দিয়ে লক্ষ লক্ষ লোক পালাচ্ছেন। স্থানীয় সূত্রে দাবি, উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগরের হাকিমপুর সীমান্তে এ দিনই শ’তিনেক বাংলাদেশি চোরা-পথে বাংলাদেশে ফেরার জন্য জড়ো হয়েছিলেন।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২৫ ০৬:৫৫
Share:

শুভেন্দু অধিকারী। — ফাইল চিত্র।

ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) প্রক্রিয়ার মধ্যেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এ বার ‘দৃষ্টান্ত’ দিয়ে অভিযোগ করলেন, এক-এক জনের নাম বিভিন্ন বিধানসভা এলাকার ভোটার তালিকায় রয়েছে। পাশাপাশি, এসআইআর-এর পরে উত্তর ২৪ পরগনার সীমান্ত এলাকায় এ-পার থেকে বাংলাদেশিদের বাংলাদেশে ফেরার জমায়েত চোখে পড়ছে বলে দাবি স্থানীয় সূত্রে। সীমান্তে জমায়েতের কথা বলেছে বিএসএফ এবং স্থানীয় পুলিশও। তৃণমূল কংগ্রেস বিএসএফ, নির্বাচন কমিশন এবং বিজেপিকে পাল্টা নিশানা করেছে।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার, মুর্শিদাবাদের বহরমপুর, ভরতপুর, নদিয়ার তেহট্টের মতো ২০টি বিধানসভার ২০টি বুথের কথা উল্লেখ করে সোমবার বিরোধী নেতা শুভেন্দু মুরলীধর সেন লেনে দলীয় দফতর থেকে অভিযোগ করেছেন, “এক নাম একাধিক জায়গার ভোটার তালিকায় রয়েছে। এঁরা সব দফাতেই ভোট দেন।” পাশাপাশি, সব বিধানসভায় প্রতিটি বুথে ৫০-১৫০ জন মৃত ভোটার রয়েছেন বলেও তাঁর অভিযোগ। এই সূত্রেই শুভেন্দুর দাবি, “নির্বাচন কমিশন আধার-তথ্য জোগাড় করছে। শ্মশান, কবরস্থানের তথ্য জোগাড় করেছে। সরকারের ‘সমব্যথী’ প্রকল্প থেকেও খবর নেওয়া হচ্ছে। রাজ্য ও কেন্দ্রের জনকল্যাণমূলক প্রকল্প থেকে খোঁজ নেওয়া হোক, কাদের পরিষেবা বন্ধ হয়েছে।” ভোটার তালিকায় একই বুথে একাধিক বার এক নাম, বাংলাদেশ থেকে আসা অনুপ্রবেশকারী মুসলিমদের নাম রয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন বিরোধী নেতা।

যদিও তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের পাল্টা বক্তব্য, “ডাব্‌ল এন্ট্রি দিল্লির ভোটার তালিকায় ধরা পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখিয়েছিলেন, হরিয়ানার ভোটার এই রাজ্যে ঢুকেছেন। তখন বিরোধী নেতা কোথায় ছিলেন? যদি একাধিক জায়গায় নাম থাকে, তার দায় জাতীয় নির্বাচন কমিশনের।”

শুভেন্দু ফের দাবি করেছেন, এসআইআর ঘোষণার পরে সীমান্ত দিয়ে লক্ষ লক্ষ লোক পালাচ্ছেন। স্থানীয় সূত্রে দাবি, উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগরের হাকিমপুর সীমান্তে এ দিনই শ’তিনেক বাংলাদেশি চোরা-পথে বাংলাদেশে ফেরার জন্য জড়ো হয়েছিলেন। বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গের ডিআইজি এন কে পাণ্ডে বলেছেন, “বহু মানুষ অবৈধ ভাবে বাংলাদেশে ফেরার চেষ্টা করছেন। তাই তাঁরা স্বরূপনগর, হাকিমপুরে আসছেন। অবৈধ ভাবে তাঁরা ভারতে ঢুকেছিলেন। এখন অবৈধ ভাবেই বাংলাদেশে ফেরার চেষ্টা করায় তাঁদের আটক করা হচ্ছে।” বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপার হোসেন মেহেদি হাসানের বক্তব্য, “সীমান্তে এমন জমায়েতের কথা শুনেছি। পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছি। সীমান্তে কর্তব্যরত আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।” যদিও তৃণমূল নেতা কুণালের প্রশ্ন, “কে, মাথা পিছু কত টাকা নিয়ে এঁদের ঢুকিয়েছিলেন, তার তদন্ত হওয়া উচিত। লোকজন বেরোনোর সময় সীমান্ত সুরক্ষার দায়িত্বে থাকা বিএসএফ দেখতে পাচ্ছে। কিন্তু তাঁরা ঢোকার সময় দেখতে পায়নি কেন?”

এ দিকে, এসআইআর প্রক্রিয়ায় ‘ডেটা এন্ট্রি’র কাজ থেকে অব্যাহতি চেয়ে এ দিন রামপুরহাট ১ ব্লক অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন বুথ লেভেল অফিসারদের (বিএলও) একাংশ। গণনা-পত্র ‘আপলোডে’ সমস্যার কথা জানিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মন্দিরবাজারের বিডিও-র কাছে দাবিপত্র দিয়েছেন বিএলও-রা। ডেটা এন্ট্রির কাজ তাঁদের কেন করতে হবে, এই প্রশ্নে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছে ‘শিক্ষা অনুরাগী ঐক্যমঞ্চ’ও। এরই মধ্যে ভুয়ো বিএলও সেজে হুগলির জাঙ্গিপাড়ায় একটি পরিবারের পাঁচ সদস্যের পূরণ করা গণনা-পত্র সংগ্রহের অভিযোগ উঠেছে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা তথা ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকীও। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। বিডিও পল্লব মুখোপাধ্যায় বলেছেন, “প্রত্যেককে দু’টি করে গণনা-পত্র দেওয়া হচ্ছে। ওই ব্যক্তি একটি নিয়ে গিয়েছেন। ফলে বাড়িতে একটি করে রয়েছে। সমস্যা হবে না।” পাশাপাশি, কলকাতায় রাসবিহারীতে তৃণমূলের বিএলএ-র দোকানে বসে এক বিএলও এসআইআর সংক্রান্ত কাজ করেছেন বলে কমিশনে অভিযোগ করেছিল কংগ্রেস। ওই বিএলও-কে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে কমিশন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন