জিএসটি জেহাদে ধর্মঘট রসগোল্লার

কচুরি-শিঙাড়ার উপরে ১২ শতাংশ জিএসটি বসানোর ফরমান নিয়েও ক্ষুব্ধ মিষ্টি বিক্রেতারা। তাঁদের অভিযোগ, ভুজিয়া-গাঠিয়ার সঙ্গে বাঙালি কচুরি-শিঙাড়াকে এক করা অনুচিত। প্যাকেট-বন্দি ভুজিয়া এক মাস ধরে খাওয়া যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৭ ০৯:৩০
Share:

খ্রিস্টে আর কৃষ্টে ফারাক না-থাকতে পারে! মিষ্টিতে মিষ্টিতে ঢের ফারাক।

Advertisement

অন্তত সন্দেশ-রসগোল্লা এবং লাড্ডু-বরফিতে যে মিল নেই, তা বোঝাতে মরিয়া বাংলার মিষ্টি-স্রষ্টারা। কিন্তু কেন্দ্রীয় করের খরদৃষ্টিতে তো সব মিষ্টিই এক! সব মিষ্টিতে নির্বিশেষে পাঁচ শতাংশ জিএসটি-র বোঝা চাপানো হয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতির দাবি, এই নিদান অবিচার। এর বিরুদ্ধে ২১ অগস্ট রাজ্য জুড়ে মিষ্টির দোকানে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সমিতি। আর ঠিক হয়েছে, ২৪ থেকে ২৬ অগস্ট পর্যন্ত ধর্মতলায় চলবে মিষ্টি-ব্যবসায়ীদের ‘রিলে অনশন’।

সমিতির সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রকুমার পালের প্রশ্ন, ‘‘আনাজ-মাছ পচনশীল বলে যদি জিএসটি-র আওতা থেকে রেহাই পায়, ছানার মিষ্টি পাবে না কেন?’’ রসিক বাঙালির কাছে জনপ্রিয় বিভিন্ন শতায়ু মিষ্টি-বিপণির তরফে ধীমান দাশ, সন্দীপ সেন, প্রণব নন্দী, সুদীপ মল্লিকদের প্রশ্ন, ‘‘একটা ক্ষীরের বরফি ৭-১০ দিন ধরে খাওয়া যায়। একটা সন্দেশ বা রসগোল্লা কেউ অত দিন রেখে খেতে পারবে?’’ তাঁদের দাবি, ছানার মিষ্টি অত্যন্ত স্বল্পায়ু। কম চিনির মিষ্টি। কার্যত এক দিনের বেশি টেকে না। তাই ছানার মিষ্টিকেও পচনশীল খাদ্য ধরে জিএসটি-র ছাড় দিতে হবে। রাজ্যের মিষ্টি-ব্যবসায়ীদের দাবি, বাংলার মিষ্টির ‘সুখী শরীর’ বা সীমিত আয়ু— এই যুক্তিতেই এ রাজ্যে ভ্যাট থেকে ছাড় মিলেছিল। অন্য রাজ্যে কিন্তু মিষ্টিতে যুক্তমূল্য কর চালু ছিল। জিএসটি-ছাড়ের বিষয়েও তাঁরা আগেই কেন্দ্র ও রাজ্যের কাছে দরবার করেছেন বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

Advertisement

কচুরি-শিঙাড়ার উপরে ১২ শতাংশ জিএসটি বসানোর ফরমান নিয়েও ক্ষুব্ধ মিষ্টি বিক্রেতারা। তাঁদের অভিযোগ, ভুজিয়া-গাঠিয়ার সঙ্গে বাঙালি কচুরি-শিঙাড়াকে এক করা অনুচিত। প্যাকেট-বন্দি ভুজিয়া এক মাস ধরে খাওয়া যায়। কিন্তু কচুরি-শিঙাড়া সঙ্গে সঙ্গে না-খেলে মুশকিল। জিএসটি চালু করার সময়ে বাঙালি মিষ্টি-নোনতার এই আঞ্চলিক মহিমা অগ্রাহ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ। জিএসটি-র জেরে মিষ্টির দাম বাড়িয়ে ক্রেতাদের যাতে চাপে ফেলা না-হয়, সেটা নিশ্চিত করার জন্যও সমিতির তরফে অনুরোধ করা হয়েছে মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন