Tapan Kandu Murder

Tapan Kandu: তপন খুনে প্রত্যক্ষদর্শীর মৃত্যুতেও সিবিআই, আর্জি

এরই মধ্যে, এ দিন দুপুরে ঝালদা পুরনো থানা চত্বরে আগুন লেগে কয়েকটি বাজেয়াপ্ত করা যানবাহন পুড়ে যায়। ওই থানা ভবন থেকে ঝালদার সিসি ক্যামেরাগুলি নিয়ন্ত্রণ হয়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২২ ০৭:২৭
Share:

তপন খুনের তদন্তে ঝালদায় সিবিআইয়ের দল। নিজস্ব চিত্র

পুরুলিয়ার ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর খুনের অন্যতম প্রত্যক্ষদর্শী নিরঞ্জন বৈষ্ণবের অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্ত সিবিআইকে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে মামলা হল কলকাতা হাই কোর্টে। তপনের স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু ও ভাইপো মিঠুন কান্দু সোমবার সে মামলা করেন। এ দিনই খুনের মামলায় ধৃত কলেবর সিংহকে সঙ্গে নিয়ে ঝালদার বেশ কয়েকটি এলাকায় তদন্তে যায় সিবিআই। তপনের খুড়তুতো দাদা বিশ্বনাথ কান্দু, ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর পিন্টু চন্দ্র-সহ বেশ কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদেও ডেকে পাঠানো হয়।

Advertisement

৬ এপ্রিল নিজের ঘর থেকে নিরঞ্জনের ঝুলন্ত দেহ মেলে। এ দিন পূর্ণিমার আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী দাবি করেন, নিরঞ্জনের মৃত্যুর সঙ্গে তপন খুনের তদন্ত ওতপ্রোত ভাবে জড়িত বলে তাঁদের মনে হচ্ছে। তাই দু’টি ঘটনার তদন্তভার একই সংস্থার হাতে দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে। আইনজীবী কৌস্তভবাবু এবং দেবায়ন ঘোষ বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে মামলা দায়েরের অনুমতি চান। আদালত তা মঞ্জুর করে। আজ, মঙ্গলবার মামলার শুনানি হতে পারে। কৌস্তভবাবু জানান, সাক্ষীদের যথাযথ নিরাপত্তা দেওয়ার আর্জিও জানানো হয়েছে। নিরঞ্জনের দাদা নেপাল বৈষ্ণবের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমরা চাই, সত্য সামনে আসুক।’’

তপনের খুড়তুতো দাদা বিশ্বনাথ এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত। পুরভোটের ফলের দিন তপনের কিছু অনুগামীর সঙ্গে তাঁর গোলমাল বেধেছিল বলে অভিযোগ। এ দিন সিবিআই সে ঘটনা-সহ আরও কিছু বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বলে তাঁর দাবি। ঝালদা ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর পিন্টুর দাবি, ‘‘তপনদার সঙ্গে কেমন সম্পর্ক ছিল, এক সঙ্গে কী কাজ করতাম— এ সব জানতে চেয়েছে সিবিআই।’’ পুরভোটের ফল নিয়ে তপনের সঙ্গে তাঁর দাদা, ধৃত নরেন কান্দুর বাজি ধরার বিষয় উঠে এসেছিল ঘটনার তদন্তে। সিবিআই সূত্রের খবর, বাজির টাকা যাঁর কাছে গচ্ছিত ছিল, এ দিন তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদে ডাকা হয়।

Advertisement

এ ছাড়া, দেবদুলাল চট্টরাজ নামে স্থানীয় এক কংগ্রেস নেতা, শিবচরণ মাহাতো নামে এক বাম কর্মী ও মুকেশ কান্দু নামে ঝালদা হাটতলার এক ব্যবসায়ীকে এ দিন ডেকে পাঠায় সিবিআই। সিবিআই সূত্রের খবর, খুনের ঘটনার পরে বেশ কয়েকটি ‘অডিয়ো ক্লিপ’ (‌সেগুলির সত্যতা আনন্দবাজার যাচাই করেনি) ছড়িয়ে পড়েছিল। সিবিআই সূত্রের দাবি, একটি ‘ক্লিপ’-এর (আনন্দবাজার সত্যতা যাচাই করেনি) কণ্ঠস্বরের বিষয়ে খোঁজ নিতে দেবদুলালকে ডাকা হয়। ধৃত মহম্মদ আশিক খান সম্পর্কে খোঁজ নিতে ডাকা হয়েছিল মুকেশকে।

রবিবার হেফাজতে নেওয়ার পরে, ধৃত কলেবর সিংহকে নিয়ে এ দিন ঝালদার বেশ কয়েকটি গ্রামে যায় সিবিআইয়ের একটি দল। ইলু গ্রামে একটি মদের দোকান, তোড়াং গ্রামে একটি মুদিখানায় যায় দলটি। তোড়াংয়ে এক ব্যক্তি সম্পর্কে খোঁজ নেয়। ঝালদার পুস্তি গ্রামে কলেবরের দিদি-জামাইবাবুর সঙ্গেও কথা বলেন তদন্তকারীরা। সিবিআই সূত্রের দাবি, তাঁদের কাছে জানা গিয়েছে, এক দিন সকাল ১১টা নাগাদ এক জনকে সঙ্গে নিয়ে কলেবর সেখানে গিয়েছিলেন। মাংস-ভাত খেয়ে দুপুর আড়াইটে নাগাদ তাঁরা বেরিয়ে যান। তবে সে দিনের তারিখ জানাতে পারেননি তাঁরা। কলেবর যে গ্রামের বাসিন্দা, ঝাড়খণ্ডের বোকারোর সেই গাইছাঁদ গ্রামের উদ্দেশে তাঁকে নিয়ে সিবিআইয়ের দল রওনা হয়েছে।

এরই মধ্যে, এ দিন দুপুরে ঝালদা পুরনো থানা চত্বরে আগুন লেগে কয়েকটি বাজেয়াপ্ত করা যানবাহন পুড়ে যায়। ওই থানা ভবন থেকে ঝালদার সিসি ক্যামেরাগুলি নিয়ন্ত্রণ হয়। পূর্ণিমা কান্দুর প্রশ্ন, ‘‘তথ্যপ্রমাণ লোপাটের জন্য কেউ আগুন লাগিয়ে দেয়নি তো!’’ পুলিশের অবশ্য দাবি, তথ্যপ্রমাণ নষ্ট হয়নি। স্থানীয় সূত্রের দাবি, ঘটনার আগে ওই এলাকায় একটি শোভাযাত্রায় বাজি পোড়ানো হচ্ছিল। অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে তার কোনও যোগ আছে কি না, দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানায়। জেলার পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগন বলেন, ‘‘আগুনের কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন