আদালত চত্বরে পৌঁছলেন তাপস পাল। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।
আদালতে জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন সকালে। দুপুরে সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে চৌমুহা-কাণ্ডে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ তাপস পালের জামিন মঞ্জুর করল আদালত। দু’জন জামিনদার এবং পাঁচ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে কৃষ্ণনগরের অতিরিক্ত বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট শুভজিত্ বসুর এজলাসে তাঁর জামিন মেলে।
এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ এসিজেএম শুভজিত্ বসুর এজলাসে পৌঁছন তাপস। সঙ্গে ছিলেন তাঁর দুই আইনজীবী বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় এবং রাজদীপ দাস। কৃষ্ণনগরের সাংসদের হয়ে বিচারকের কাছে জামিনের আবেদন জানান তাঁরা। বিচারক ওই মামলার নথিপত্র আদালতে জমা দিতে বলেন। এর পর এই বিষয়ে দুপুর দুটোর পর শুনানি শুরু হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছিলেন।
সেই মতো দুটোর কিছু পরেই আদালতে ফের আসেন অভিনেতা-সাংসদ। শুনানি শুরু হয় বেলা সওয়া তিনটে নাগাদ। মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই তাঁর জামিন মঞ্জুর হয়। এর পর আদালত চত্বর ছেড়ে বেরিয়ে যান তাপস। তাঁর আইনজীবী বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আদালত ওঁর জামিনের আবেদন করা হয়েছিল। দু’জন জামিনদার এবং পাঁচ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে তাঁর জামিন মঞ্জুর হয়েছে।’’
গত ২৮ মে এই আদালতেই সিআইডি তাপসের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয়। আদালত সূত্রে খবর, তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৪ (শান্তিভঙ্গের জন্য অপমানজনক কথা বলা), ৫০৫ (এমন কথা বলা যাতে উত্তেজনা ছড়ায়), ৫০৬ (অপরাধমূলক হুমকি দেওয়া) এবং ৫০৯ (মহিলাদের প্রতি কটূক্তি) ধারায় অভিযোগ আনে সিআইডি।
নদিয়ার নাকাশিপাড়া থানার চৌমুহা গ্রামে গত বছর জুন মাসে তাপস পাল প্রকাশ্যে অনেক খারাপ কথা বলেছিলেন। হুমকিও দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘ঘরে দলের ছেলেদের ঢুকিয়ে রেপ করিয়ে দেব।’’ বা ‘‘নিজের রিভলভার থেকে গুলি করে মারব।’’ প্রথমে সেই ঘটনায় নাকাশিপাড়া থানায় সাংসদের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন স্থানীয় এক মহিলা। পুলিশের তরফে একটি জেনারেল ডায়েরি করা হয়। এর পর নাকাশিপাড়া থানাতেই ফের তাপসের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বিপ্লবকুমার চৌধুরী নামে এক সমাজকর্মী। কিন্তু, তাপসের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের না হওয়ায় বিপ্লববাবু এর পর সিবিআই তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। বিচারপতি নিশীথা মাত্রে ঘটনার সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেন। গত বছর ২৭ সেপ্টেম্বর নাকাশিপাড়া থানার পুলিশ বিপ্লববাবুর অভিযোগকে এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করার পরে তদন্ত শুরু করে সিআইডি।