বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করল চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে সল্টলেকে তাঁর বাড়ি গেল চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ। আন্দোলনকারীরা জানান, তাঁরা এ বার সুপ্রিম কোর্টের যাওয়ার ব্যাপারেও ভাবনাচিন্তা করছেন। অন্য দিকে, সেন্ট্রাল পার্কে চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ধর্নার জন্য ছাউনি বাধার কাজ শুরু করেছে বিধাননগর পুরসভা। তবে পুরসভা যে জায়গায় ছাউনি বাঁধছে, তাতে খুশি নন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের দাবি, পুলিশ যে জায়গা দেখিয়েছিল, পুরসভা সেখানে ছাউনি বাঁধেনি।
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে বিকাশ ভবনের সামনে থেকে সেন্ট্রাল পার্কের সামনে সরে যেতে রাজি চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা। শুক্রবার বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ সেন্ট্রাল পার্কের সামনে চাকরিহারাদের কর্মসূচির অনুমতি দেন। তবে তিনি এ-ও জানান, একসঙ্গে ২০০ লোক নিয়ে কর্মসূচি করা যাবে। অদলবদল করে জমায়েত হবে। আন্দোলকারীদের ১০ জন প্রতিনিধির নাম পুলিশের কাছে জমা দিতে হবে। তার পরেই পুলিশের তরফে উদ্যোগ নেওয়া হয়। পুরসভাকে চিঠি দিয়ে ছাউনি, জল, শৌচালয়ের ব্যবস্থা করে দেওয়ার অনুরোধ করে বিধাননগর উত্তর থানার পুলিশ। রবিবার সকাল থেকেই পুরসভার তরফে সেন্ট্রাল পার্কের একটি জায়গায় ছাউনি তৈরি করার কাজ করা হচ্ছে। আনা হয় বায়োটয়লেটও।
যদিও আন্দোলনকারীদের দাবি, সেন্ট্রাল পার্কের যে জায়গায় ছাউনি করা হচ্ছে, তা বিকাশ ভবন থেকে অনেকটা দূরে। ওই স্থান ২০০ জন বসার জন্য উপযুক্ত নয়। তাঁদের দাবি, পুলিশের তরফ থেকে যে তিনটি জায়গা দেখানো হয়েছিল, তার মধ্যে বেছে নেওয়া জায়গায় ছাউনি করা হচ্ছে না। চাকরিহারা শিক্ষিকা রূপা কর্মকার বলেন, ‘‘পুলিশ আমাদের যে জায়গা দেখিয়েছিল সেই জায়গায় ছাউনি না করে বেশ খানিকটা দূরে ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জায়গাটি ছোট এবং অস্বাস্থ্যকর। আমরা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে ঠিক করব যে ওখানে যাব কি না।’’
সরকারের সঙ্গে আলোচনা চেয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে ইতিমধ্যেই চিঠি দিয়েছেন চাকরিহারা শিক্ষকেরা। সোমবারের মধ্যে দেখা করার সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছেন তাঁরা। ব্রাত্যের দাবি, তিনি চাকরিহারাদের থেকে একটা চিঠি পেয়েছেন। কিন্তু কেন তাঁরা দেখা করতে চান, সেই প্রসঙ্গে কিছু উল্লেখ করেননি। শিক্ষামন্ত্রীর কথায়, ‘‘একটা চিঠি পেয়েছি। কিন্তু কেন বসতে চাওয়া হয়েছে সেই চিঠিতে কোনও উল্লেখ নেই। আরও দু’-আড়াই হাজার শিক্ষক আছেন, যাঁরা কোনও চিঠি দেননি। তাঁরা সম্পূর্ণ ভাবে সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করছেন। আমি একাধিক বার বসেছি। সরকার সহযোগিতা করতে চাইছে। যদি আবার বসতে চান, কী নিয়ে আলোচনা করতে চাইছেন নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করে চিঠি দিন। আগামীকাল দফতরের তরফ থেকে নিশ্চয়ই যোগাযোগ করা হবে।’’
অন্য দিকে, রবিবার সকালে কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এক প্রতিনিধি দল। তাদের সঙ্গে দেখা করার পরে বিজেপি সাংসদ বলেন, ‘‘ওঁদের সুপ্রিম কোর্টে পুর্নর্বিবেচনা মামলা করতে বলেছি। তার উপরই সব নির্ভর করছে। লাভ হবে কি না, জানি না। তবে এ ছাড়া উপায় নেই।’’