West Bengal SSC Scam

হেডস্যর-পুত্রের জালিয়াতির তদন্তে সিআইডি, তিন বছর ধরে কেউ জানেনই না? প্রশ্ন বিচারপতির

পাশ করা শিক্ষকের সুপারিশপত্র জাল করে প্রধানশিক্ষক বাবার স্কুলে চাকরি নেন পুত্র। বুধবারই তাঁর বেতন বন্ধ করে স্কুলে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৩ ১১:৪৮
Share:

আগেই সিআইডির ডিআইজিকে উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

প্রধানশিক্ষক বাবার স্কুলে জালিয়াতি করে চাকরি পেয়েছেন পুত্র। কিন্তু কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু বিস্মিত তার পরের ঘটনায়। তাঁর প্রশ্ন, তিন বছর ধরে ওই ‘শিক্ষক’ বেতন পাচ্ছেন, অথচ তাঁকে যে নিয়োগপত্রই দেওয়া হয়নি, তা জানেন না জেলা স্কুল পরিদর্শক? বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে প্রশ্ন তুলে সিআইডিকে মামলাটির তদন্তভার দিয়েছেন বিচারপতি বসু। সেই সঙ্গে বলেছেন, আরও এমন নিয়োগ জালিয়াতি হয়ে থাকতে পারে। তারও তদন্ত হওয়া উচিত।

Advertisement

বুধবারই এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থা সিআইডির ডিআইজিকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন বিচারপতি। তাঁর উপস্থিতিতেই এই মামলার তদন্তভার সিআইডিকে দিয়ে বিচারপতির নির্দেশ, জেলা স্কুল পরিদর্শককে এফআইআর দায়ের করতে হবে। তার ভিত্তিতে তদন্ত করবে রাজ্যের সংস্থা। ২ সপ্তাহের মধ্যে তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিতে হবে। ২ ফেব্রুয়ারি মামলাটি আবার শুনবে আদালত। এ ছাড়া ২০১৬ সালের পর থেকে যত নিয়োগ হয়েছে, সব শিক্ষকের তথ্য যাচাই করা দরকার বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতি। তিনি জানান, জেলা স্কুল পরিদর্শকদেরই তা শুরু করতে হবে।

মুর্শিদাবাদের গোথা এ রহমান হাই স্কুলের এই নিয়োগ জালিয়াতির ঘটনায় বুধবারই বিচারপতি বসু বলেছিলেন, ‘‘ঘটনাটি অনভিপ্রেত। এই ঘটনার তদন্ত হওয়া দরকার।’’ বৃহস্পতিবারও তিনি বলেন, ‘‘আমি দেখে অবাক হচ্ছি যে, জেলা স্কুল পরিদর্শক এই নিয়োগ নিয়ে কিছু জানেন না। অথচ ওই শিক্ষক গত ৩ বছর ধরে বেতন পাচ্ছেন। কী করে এ বিষয়ে কেউ কিছু জানেন না!’’

Advertisement

ঘটনাটি মুর্শিদাবাদের সুতি-১ নম্বর ব্লকের। স্কুলের প্রধানশিক্ষক আশিস তিওয়ারির পুত্র অনিমেষ তিওয়ারির বিরুদ্ধে এক পাশ করা শিক্ষকের নিয়োগপত্র জাল করে প্রধানশিক্ষক বাবার স্কুলে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ২০১৯ সাল থেকে অনিমেষ ওই স্কুলে বেআইনি ভাবে কর্মশিক্ষার শিক্ষক পদে চাকরি করছেন। এ ব্যাপারে মুর্শিদাবাদ জেলা স্কুল পরিদর্শক জানিয়েছিলেন, অনিমেষকে নিয়োগপত্র দেওয়ার বিষয়ে তাঁদের কাছে কোনও তথ্য নেই। বিচারপতি প্রশ্ন তুলেছেন, নিয়োগপত্রের তথ্য না থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে তিন বছর ধরে বেতন পেলেন অনিমেষ।

মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার একটি স্কুলে ভূগোলের শিক্ষক পদে চাকরি পান অরবিন্দ মাইতি। অভিযোগ, তাঁর নিয়োগপত্রের মেমো নম্বর নকল করেই বাবা আশিসের স্কুলে চাকরি নেন অনিমেষ। এ বিষয়ে মামলাকারী সোমা রায়ের হয়ে আদালতে সওয়াল করেন তাঁর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং ফিরদৌস শামিম। আদালত অবশ্য বুধবারই অনিমেষের বেতন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। এমনকি, অনিমেষ স্কুলে প্রবেশ করতে পারবেন না বলেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন