ফাইল চিত্র।
হাওয়ামোরগের বিচারে শীত এখনও পড়েনি। কিন্তু উত্তুরে হাওয়া রাজ্যে এসে পৌঁছেছে এবং সেই সুবাদে তাপমাত্রা কমার নিরিখে নতুন রেকর্ড গড়া শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই।
আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার বীরভূমের শ্রীনিকেতনে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত এক দশকে নভেম্বরে শ্রীনিকেতনের তাপমাত্রা নেমেছিল ১০.৯ ডিগ্রি পর্যন্ত। সেটা ছিল ২০১২ সালের ৩০ নভেম্বর। এক দশকের নিরিখে এ বছরের ১০.৪ ডিগ্রি তাই নতুন একটা রেকর্ড। যদিও শুক্রবার সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে হয়েছে ১০.৯ ডিগ্রি।
নভেম্বরে শ্রীনকেতনে তাপমাত্রা নামার সবর্কালীন রেকর্ড ছুঁতে পারদ নামতে হবে আরও এক ডিগ্রির কিছুটা কম। হাওয়া অফিসের নথি বলছে, ১৯৮৫ সালের ২৯ নভেম্বর শ্রীনিকেতনের পারদ নেমেছিল ৯.৭ ডিগ্রিতে। নভেম্বরের বাকি কয়েকটা দিন তাপমাত্রা এতটা নামবে কি না, আবহবিদেরা তা বলতে পারছেন না। কারণ, বায়ুপ্রবাহের গতিপ্রকৃতি শুক্রবার যে-রকম ছিল, তাতে আজ, শনিবার থেকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ারই ইঙ্গিত রয়েছে।
শ্রীনিকেতনে গত দু’দিনের নিরিখে এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা সামান্য বাড়লেও কলকাতায় কিন্তু পারদ নামছে ধাপে ধাপে। বুধবারের ১৬.৬ ডিগ্রি থেকে নেমে এ দিন মহানগরের তাপমাত্রা থিতু হয়েছে ১৫.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা চলতি সময়ের স্বাভাবিকের তুলনায় দু’ডিগ্রি কম। ২০১২ সালের ৩০ নভেম্বর কলকাতায় তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল ১৪ ডিগ্রিতে। সেটাই গত এক দশকের রেকর্ড। এ বার নভেম্বরের বাকি ছ’দিনে কলকাতা সেই রেকর্ড ছুঁতে পারে কি না বা তাকে টপকে যায় কি না, সেটাই এখন দেখার।
গত কয়েক বছর ধরে শীতকে সে-ভাবে পাওয়া যায়নি। এ বার নভেম্বরে কেন এমন ভেল্কি দেখাচ্ছে শীত?
আবহবিদদের একাংশের ব্যাখ্যা, বঙ্গোপসাগরে কোনও ঘূর্ণাবর্ত বা নিম্নচাপের বাধা নেই। জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়েছে উত্তর ভারতে। রাজস্থান, হরিয়ানা, চণ্ডীগড়ে শৈত্যপ্রবাহ চলছে। সেখান থেকে কনকনে উত্তুরে হাওয়া ছুটে আসছে বাংলায়। এক দিকে মেঘমুক্ত আকাশ এবং অন্য দিকে কনকনে উত্তুরে হাওয়া। এই যুগলবন্দিতেই এমন পারদ পতন। তবে আজ, শনিবার বা কাল, রবিবার থেকে কিছুটা হলেও তাপমাত্রা বাড়তে পারে। কারণ, সিকিমের উপর দিয়ে একটি পশ্চিমি ঝঞ্ধা (ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা থেকে বয়ে আসা ঠান্ডা, ভারী হাওয়া) বয়ে যাবে। তার ফলে কিছুটা জলীয় বাষ্প ঢুকতে পারে বাংলার পরিমণ্ডলে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস বলছেন, ‘‘তাপমাত্রা সামান্য বাড়লেও ১৬-১৭ ডিগ্রির কাছাকাছিই থাকবে।’’ আবহবিদদের আশা, পশ্চিমি ঝঞ্ঝা বাংলা পেরিয়ে গেলেই তাপমাত্রা ফের নামতে পারে।