গভীর নিম্নচাপ এবং তার সঙ্গী মেঘবৃষ্টি কেটে যাওয়ায় স্বাভাবিক প্রাকৃতিক নিয়মেই দক্ষিণবঙ্গে শীত ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা করছিল আবহাওয়া দফতর। কিন্তু তাপমাত্রা বেড়ে যে-অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তাতে সেই আশা কবে কতটা পূরণ হবে, তা নিয়ে আমজনতার মনে সংশয়-সন্দেহ রয়েছে যথেষ্টই।
আবহবিদেরা অবশ্য জানাচ্ছেন, নিম্নচাপ শীতের পথে যে-সব কাঁটা ছড়িয়ে দিয়েছিল, তার সব ক’টিই যে সরে গিয়েছে, তা নয়। নিম্নচাপের দাপটে বাতাসে যে-পরিমাণ জলীয় বাষ্প ঢুকেছিল, তার অনেকটাই রয়ে গিয়েছে। জলীয় বাষ্পের সেই বাধা কাটতে একটু সময় লাগছে। তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। কাল, বৃহস্পতিবার থেকেই ফের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নামতে শুরু করবে।
দুর্বল হয়ে নিম্নচাপ সোমবার বিদায় নিলেও মেঘ থেকে গিয়েছিল আরও বেশ কিছু ক্ষণ। সেই মেঘের বিদায়ে মঙ্গলবার সকাল থেকেই মুখ দেখিয়েছে সূর্য। কিন্তু সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমেনি। এ দিন তা ছিল ২০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে যা পাঁচ ডিগ্রি বেশি। ‘‘নিম্নচাপের দরুন গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে প্রচুর জলীয় বাষ্প ঢুকে পড়েছিল। তা সরতে পারছিল না। তবে এখন পরিস্থিতির বদল হয়েছে,’’ ব্যাখ্যা আলিপুর আবহাওয়া দফতরের আবহবিদ আশিসকুমার সেনের।
মেঘের কাঁটা আর নেই। অবশিষ্ট জলীয় বাষ্পের কাঁটার আয়ুও আর খুব বেশি নয় বলে জানাচ্ছেন আবহবিদেরা। তাঁদের আশা, আজ, বুধবারের মধ্যে ওই জলীয় বাষ্প কেটে যাবে। বৃহস্পতিবার কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৬ ডিগ্রিতে নেমে যেতে পারে। তবে তাতে যে-শীত ভাবটা অনুভূত হবে, সেটা কত দিন স্থায়ী হতে পারে, সেই বিষয়ে নিশ্চিত নয় হাওয়া অফিস। এক আবহবিদ জানাচ্ছেন, এ সপ্তাহের শেষাশেষি একটি পশ্চিমি ঝঞ্ঝা রাজ্যের উপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে। পারদের দ্রুত পতনে বাধা সৃষ্টি করতে পারে সে।
আশিসবাবু জানাচ্ছেন, পশ্চিমি ঝঞ্ঝাটি গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে বয়ে গেলেও তাপমাত্রার পতন মার খাবে বড়জোর এক দিন। ওই ঝঞ্ঝা রাজ্যের উপর দিয়ে চলে যাওয়ার পরে শীতের পথে আর কোনও বাধা থাকবে না। ঝুপ করে তাপমাত্রা আরও নেমে যাবে।
এই আশ্বাসের সঙ্গে সঙ্গে হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, ডিসেম্বরে বঙ্গোপসাগরে ঘনঘন নিম্নচাপ তৈরির প্রবণতা দেখা গিয়েছে গত কয়েক বছরে। সাগরের সেই প্রবণতা চাগাড় দিলে তা আবার শীতের অগ্রগতির অন্তরায় হয়ে উঠতে পারে।